খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালসহ সারা দেশে আলাদাভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদল। এ নিয়ে সারা দেশে বিভিন্ন ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ আছে। কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি যাতে আবার শুরু হতে পারে, সে জন্য ছাত্রদলের কর্মীরা সোমবার ক্যাম্পাসে লিফলেট বিতরণ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুপুরে শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্র রাজনীতি ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটায়, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’, ‘এই ক্যাম্পাসে হবে না, ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা’-সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হলগুলো প্রদক্ষিণ করে।

ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বিক্ষোভ করে।

পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া কুয়েটের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পকেট গেট থেকে বহিরাগতরা একটি গ্রুপের পক্ষ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে কুয়েট পকেট গেটের বাইরে বিএনপি সমর্থিত বহিরাগতরা একজন ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ক্যাম্পাসের ভেতর ফেলে রাখে। এরপর থেকে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।

এক পর্যায়ে ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির ও বহিরাগতদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে রূপ নেয়। বহিরাগতরা কুয়েটের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। কুয়েট প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কুয়েটের প্রধান ফটকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান।

খানজাহান আলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ‘‘কুয়েটে ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।’’

এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদাভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদল। রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলছিল। অন্যদিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে কিছুটা দূরে ডাস ক্যাফেটেরিয়া এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল বিক্ষোভ করছিল।

সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে’ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়ে ছাত্রদল বলেছে, কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারকে অপব্যবহার করে ফরম বিতরণের অভিযোগ এনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর গুপ্ত সংগঠন শিবির ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কতিপয় সন্ত্রাসীর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে তাদের এই কর্মসূচি।

কুয়েটে দুপুর থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া বিকেল ৬টা পর্যন্ত চলে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়া বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

ঢাকা/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র র জন ত ব ক ষ ভ কর ছ ত রদল স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ বিমান হামলা, নিহত ৫৮

ইয়েমেনের রাস ইসা বন্দরে মার্কিন ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে অন্তত ৫৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২৬ জন। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো ভয়াবহ হামলাগুলোর মধ্যে এটি একটি। খবর আল জাজিরার।

মার্কিন সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হুথি যোদ্ধাদের জ্বালানির উৎস বন্ধ করার জন্যই এই হামলা চালানো হচ্ছে।

ওয়াশিংটন জানিয়েছে, ইয়েমেনের হুথিদের অবস্থানগুলোতে তারা হামলা চালিয়ে যাবে যতক্ষণ না লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলের ওপর এই গোষ্ঠীর আক্রমণ বন্ধ হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা এক পোস্টে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল হুথিদের অর্থনৈতিক শক্তির উৎস কমানো।

অন্যদিকে গাজায় প্রাণঘাতী হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। এতে বৃহস্পতিবার ৩২ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। তবে শুক্রবার সকালে চালানো হামলায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটির খান ইউনিসে এক পরিবারের ১৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

ত্রাণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গাজা আমাদের প্রজন্মের সবচেয়ে খারাপ মানবিক ব্যর্থতাগুলোর মধ্যে একটি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৫১ হাজার ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন এক লাখ ১৬ হাজার ৫০৫ জন।

যদিও গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০। কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে যারা চাপা পড়েছে তাদেরও নিহতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ