‘ভাওয়াইয়া গানের ধাম, নদ-নদীময় কুড়িগ্রাম’ জেলার এই ব্র্যান্ডিং ফুটে উঠেছে ‘তিস্তা বাঁচাই’ আন্দোলনের ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচিতে। মঙ্গলবার রাতে আন্দোলনকারীদের বাড়তি উৎসাহ জুঁগিয়েছে এ জেলার চিরাচরিত লোকসংগীত ভাওয়াইয়া গান। 

কুড়িগ্রামের দুটি পয়েন্টে দেখা যায়, বিকেলে আলোচনা পর্ব শেষ হওয়ার পর জেলার জাসস আহ্বায়ক আহসান হাবিব সজিব ও দুই বাংলার জনপ্রিয় লোক শিল্পী ভূপতি ভূষণ বর্মা এবং তাদের নিজস্ব দলের পরিবেশনা। যে গানের কথাগুলোর মধ্যে উঠে এসেছে অবহেলিত তিস্তা পাড়ের বাসিন্দার নানা দুঃখগাথা। 

এসব গানের কথাগুলোতে কোথাও কোন দুর্বোধ্যতা থাকে না। যার কারণে গানের কথাগুলো বুঝতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হয় না নদী পাড়ের মানুষজনের। তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনকে ঘিরে এ গানগুলো নতুন করে চরের মানুষদের উৎসাহ জোগাচ্ছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার মুখে মুখে এখন এসব আন্দোলনের গান। 

উলিপুর থেতরাই সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির শিক্ষার্থী এস জে সাম্য বলেন,‘২দিনের এই আন্দোলনে স্কুল থেকে দল বেঁধে আমরা বান্ধবীরা এসেছি। তিস্তার আন্দোলন আমার ন্যায্য আন্দোলন। এখানে একটা জিনিস ভালো লাগলো গত ২দিনে কোন হিন্দি গান বা অন্য কোন গান গাওয়া হয়নি। আমাদের জেলার ঐতিহ্যবাহী এই গান নতুন করে শুনে ভালো লাগছে।’

জমসের আলী বলেন,‘হামার মাটির গান ভাওয়াইয়া। নতুন করে হামরা এই গানের সাথো তিস্তা আন্দোলন করমো। গানত ছিলো জাগো বাহে কুন্ঠে সবাই। হামরা কমো জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই।’

তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হাসিবুর রহমান হাসিব বলেন, ‘কুড়িগ্রাম শুধু নয় গোটা রংপুর অঞ্চলের ঐতিহ্য আমাদের ভাওয়াইয়া। আমরা আমাদের এই আন্দোলনকে বেগবান করতে মানুষদের একজোট করতে জেলার এই চিরাচরিত ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়েছি।’

উল্লেখ্য, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুর বিভাগের ১১টি পয়েন্টে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসুচি আজ মঙ্গলবার শেষ হয়। গত দুইদিনে আন্দোলনকারীরা তিস্তাপাড়ের চরে রাত্রীযাপন করেন। সেখানে স্থানীয়ভাবে সম্মিলিতভাবে থাকা ও খাওয়ার আয়োজন করা হয়। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন আয়োজিত উন্মুক্ত কনসার্ট স্থগিত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে হতে যাওয়া ‘রিবিল্ডিং দ্য নেশন’ কনসার্টটি হঠাৎ স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার  রাতে স্থগিতের বিষয়টি আয়োজকরা নিশ্চিত করেছেন। 

তবে হঠাৎ করেই একদিন আগে কেন আলোচিত এ কনসার্টটি স্থগিত করা হলো সে বিষয়টি দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আয়োজকদের একজন জানিয়েছেন নিরাপত্তা ইস্যুতে আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে। 

আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পুরোনো বাণিজ্য মেলা মাঠ, আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। আয়োজকরা জানান, নিরাপত্তার কারণে কনসার্টটি স্থগিত করা হয়েছে। তবে কখন কনসার্টটি হবে তা নিয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। 

আয়োজকদের পক্ষ থেকে এর আগে বলা হয়, ‘এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ উন্মুক্ত কনসার্ট হতে যাচ্ছে। কনসার্ট ভেন্যুতে কয়েক লাখ মানুষ একসঙ্গে নিরাপদে গান শুনতে পারবে। 

‘তাদের সামনে দেশের বিভিন্ন ব্যান্ড গান পরিবেশন করবে। আমরা দেশীয় শিল্পীদের নিয়ে কনসার্টের লাইনআপ সাজিয়েছি; যারা আন্দোলনের সময় নিজেদের ক্যারিয়ারের চিন্তা না করে আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।’

প্রসঙ্গত, এই কনসার্টে প্রধান আকর্ষণ হিসেবে গান গাওয়ার কথা ছিল নগর বাউল জেমস। আরও গান শোনানোর কথা ছিল ব্যান্ড চিরকুট, আর্টসেল, সোনার বাংলা সার্কাস, বেঙ্গল সিম্ফনি, বাংলা ফাইভ, ক্রিপটিক ফেইট, কুঁড়েঘর, কাকতাল, সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ানসহ অনেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ