কুমিল্লায় সাংবাদিক মাসুমাকে চাপা দেওয়া গাড়ি শনাক্ত হয়নি
Published: 18th, February 2025 GMT
কুমিল্লায় এখন টিভির সাংবাদিক মাসুমা ইসলামকে গাড়ি চাপার ঘটনার ৪ দিনেও হাইওয়ে পুলিশ গাড়িটি শনাক্ত করতে পারেনি। মঙ্গলবার ভোরে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। মাসুমা এখন টেলিভিশনের রাজশাহী ব্যুরোর রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামে। বাবা-মায়ের দুই সন্তানের মধ্যে একমাত্র মেয়ে তিনি। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় স্বামীসহ শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে অজ্ঞাতনামা গাড়ি চাপায় তিনি আহত হয়েছিলেন।
আজ বিকেলে হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো.
এখন টিভির কুমিল্লা ব্যুরো প্রধান খালিদ সাইফুল্লাহ সমকালকে বলেন, ঘটনার দিন ভোরে সাংবাদিক মাসুমা তার স্বামীসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নূরজাহান হোটেলের উল্টোদিকে চট্টগ্রামগামী লেনে বাস থেকে নেমে সিএনজি ঠিক করছিলেন। এ সময় অজ্ঞাত একটি গাড়ি তাদের ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে মাসুমা আক্তার, তার স্বামী ও সিএনজি চালক গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সাংবাদিক মাসুমাকে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোর চারটার দিকে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। সকালে মাসুমার মরদেহ রাজধানীর বাবর রোডে মারকাজুল ইসলামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গোসল শেষে সাড়ে ১০টায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ দাফনের জন্য তাকে নাটোরের গুরুদাসপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে সমাহিত করার কথা রয়েছে।
সাংবাদিক খালিদ আরও বলেন, ‘আমরা দুর্ঘটনার পর থেকে হাইওয়ে পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কয়েক দফায় কথা বলেছি, কিন্তু আজও (মঙ্গলবার) দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়া গাড়ির বিষয়ে কোন তথ্য পাইনি। দুর্ঘটনায় মাসুমার মাথা ও শরীরে প্রচণ্ড আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় ঘটনাস্থলেই তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে চিকিৎকরা জানিয়েছেন।’
এখন টিভির রাজশাহী ব্যুরো প্রধান রাকিবুল হাসান রাজিব বলেন, মাসুমা পড়াশোনা করেছেন রাজশাহীর নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা অধ্যয়ন বিভাগে। শিক্ষাজীবন থেকেই তার সাংবাদিকতার শুরু, পরে এটিকেই পেশা হিসেবে নেন। ২০২৩ সালের শেষের দিকে তিনি বিয়ে করেন। রাজশাহীতে স্বামীর সঙ্গেই থাকতেন। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে তিনি গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় শ্বশুরবাড়িতে স্বামীসহ বেড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন দ র ঘটন ঘটন র এখন ট
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াত নেতা আজাহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে শহরে বিক্ষোভ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর হসপিটাল মোড় থেকে মহানগরী ও জেলা জামায়াতের উদ্যোগে দলের সহিস্রাধিক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এসে সভাপতির সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ এর সাবেক আমির মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমদ বলেন. বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপোষহীণ ভাবে ভারতীয় প্রভুত্ববাদ মেনে না নেওয়ায় বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েছিলো। তিনি আরো বলেন ক্যাঙারু বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের হত্যা ও কারান্তরীণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিগত জুলুমবাজ সরকার ফাঁসি দিয়েছে মতিউর রহমান নিজামীকে, ফাঁসি দিয়েছে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে, ফাঁসি দিয়েছে কাদের মোল্লা সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে। ৬/৭ মাস আগে যারা আন্দোলন করেছিলো, তারা বৈষম্য দূর করতে চেয়েছিলো, তারা ন্যায় বিচারের লক্ষ্যে জাস্টিস কায়েম করতে চেয়েছিল।
বাংলাদেশ বৈষম্য দূর করতে ব্যর্থ হয়েছে, এই সরকার জাস্টিস কায়েম করতে ব্যর্থ হয়েছে। আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়ার আগে পর্যন্ত বৈষম্য দূর করা যাবে না। বাংলাদেশে ২৪ এর আন্দোলনে যে চেতনা ছিলো, সেই চেতনার আলোকে আজহারুল ইসলামকে মুক্তির দাবি করেন।
তিনি বলেন, প্রিয় নারায়ণগঞ্জবাসী আপনারা জানেন, নারায়ণগঞ্জে যেই সন্ত্রাস বাহিনী ছিলো তারা পালিয়েছে। আমি আপনাদেরকে ন্যায়ের পথে, সৎ শাসনের পক্ষে থাকার আহবান জানাচ্ছি।
তবে ৫ আগস্টে দেশ ফ্যাসিজম মুক্ত হওয়ার পর অনেকেই কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলাম কে ১৫ বছরের অধিক সম্পুর্ন অন্যায় ভাবে আটক করে রাখা হয়েছে। আমরা বলতে চাই অনতিবিলম্বে আমাদের মজলুম নেতা কে মুক্তি দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জেলা আমির মমিনুল হক সরকার বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের জনপ্রিয় নেতা এটিএম আজহার ভাইকে মুক্তি না দিলে দূর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্তির ব্যবস্থা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
সভাপতির বক্তৃতায় মহানগর আমির মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসররা প্রশাসনে এখনো বহাল তবিয়তে, যার কারনে আমরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত, দ্রুত সময়ের মধ্যে দোসরদের উৎখাত করতে হবে, সেই সাথে এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি নিশ্চিত ও দলীয় নিবন্ধন এবং প্রতীক ফিরিয়ে দিতে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অন্যথায় কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইনের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা সেক্রেটারি মো হাফিজুর রহমান, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ জামাল হোসাইন, জেলা সহকারী সেক্রেটারি আবু সাঈদ মুন্না, মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি এইচ এম নাসির উদ্দিন, মহানগরী ও জেলা কর্ম পরিষদের সদস্য ও থানা, ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মী।