কুমিল্লায় এখন টিভির সাংবাদিক মাসুমা ইসলামকে গাড়ি চাপার ঘটনার ৪ দিনেও হাইওয়ে পুলিশ গাড়িটি শনাক্ত করতে পারেনি। মঙ্গলবার ভোরে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। মাসুমা এখন টেলিভিশনের রাজশাহী ব্যুরোর রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামে। বাবা-মায়ের দুই সন্তানের মধ্যে একমাত্র মেয়ে তিনি। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় স্বামীসহ শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে অজ্ঞাতনামা গাড়ি চাপায় তিনি আহত হয়েছিলেন। 

আজ বিকেলে হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো.

খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, ‘ঘটনাটি ভোর বেলায় ঘটেছে। কোনো প্রত্যক্ষদর্শী গাড়ির বিষয়ে তথ্য দিতে পারেনি। এছাড়াও যে স্থানটিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানে কোন সিসিটিভি নেই। তবুও আমরা আশা ছাড়িনি। গাড়িটি শনাক্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ 

এখন টিভির কুমিল্লা ব্যুরো প্রধান খালিদ সাইফুল্লাহ সমকালকে বলেন, ঘটনার দিন ভোরে সাংবাদিক মাসুমা তার স্বামীসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নূরজাহান হোটেলের উল্টোদিকে চট্টগ্রামগামী লেনে বাস থেকে নেমে সিএনজি ঠিক করছিলেন। এ সময় অজ্ঞাত একটি গাড়ি তাদের ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে মাসুমা আক্তার, তার স্বামী ও সিএনজি চালক গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সাংবাদিক মাসুমাকে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোর চারটার দিকে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। সকালে মাসুমার মরদেহ রাজধানীর বাবর রোডে মারকাজুল ইসলামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গোসল শেষে সাড়ে ১০টায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ দাফনের জন্য তাকে নাটোরের গুরুদাসপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে সমাহিত করার কথা রয়েছে। 

সাংবাদিক খালিদ আরও বলেন, ‘আমরা দুর্ঘটনার পর থেকে হাইওয়ে পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কয়েক দফায় কথা বলেছি, কিন্তু আজও (মঙ্গলবার) দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়া গাড়ির বিষয়ে কোন তথ্য পাইনি। দুর্ঘটনায় মাসুমার মাথা ও শরীরে প্রচণ্ড আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় ঘটনাস্থলেই তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে চিকিৎকরা জানিয়েছেন।’ 

এখন টিভির রাজশাহী ব্যুরো প্রধান রাকিবুল হাসান রাজিব বলেন, মাসুমা পড়াশোনা করেছেন রাজশাহীর নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা অধ্যয়ন বিভাগে। শিক্ষাজীবন থেকেই তার সাংবাদিকতার শুরু, পরে এটিকেই পেশা হিসেবে নেন। ২০২৩ সালের শেষের দিকে তিনি বিয়ে করেন। রাজশাহীতে স্বামীর সঙ্গেই থাকতেন। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে তিনি গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় শ্বশুরবাড়িতে স্বামীসহ বেড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন দ র ঘটন ঘটন র এখন ট

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের সাবেক নেতা জাকির কারামুক্ত, গাড়িবহর নিয়ে অনুসারীদের বরণ

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান সাজার মেয়াদ শেষে কারামুক্ত হয়েছেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে কারামুক্ত হন তিনি।

এদিকে জাকির খানকে বরণ করে নিতে তাঁর অনুসারীরা মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার নিয়ে জেলা কারাগারের সামনে অবস্থান নেন। এতে ওই এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।

জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ফোরকান ওয়াহিদ জানান, ১৯৯৪ সালের সন্ত্রাস দমন আইনের একটি মামলার রায়ে জাকির খানের ১৪ বছরের সাজা হয়েছিল। আপিল করার পর উচ্চ আদালতে সাজা কমিয়ে আট বছর করা হয়। পরে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ আবেদনে তাঁর সাজা কমে পাঁচ বছর করা হয়। পাঁচ বছরের সাজার মেয়াদ শেষে আজ রোববার সকালে জাকির খানকে কারামুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জাকির খানের মুক্তির খবরে আজ সকাল থেকে তাঁর অনুসারীরা মোটরসাইকলে ও প্রাইভেট কারের বহর নিয়ে জেলা কারাগারের সামনে অবস্থান নেন। নেতা-কর্মীরা ট্রাকে সাউন্ড বক্স লাগিয়ে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে মোটরসাইকেলের বহর বের করেন। জেলা কারাগারের সামনে নেতা-কর্মীদের ভিড় হয়। এতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে যানজটের সৃষ্টি হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কারাগার থেকে বের হন জাকির খান। এ সময় তাঁর অনুসারীরা তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে তিনি হুডখোলা গাড়িতে চড়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে দেওভোগের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জাকির খানের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম খন্দকার হত্যাসহ ৪টি হত্যাসহ মোট ৩৩টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় বিভিন্ন সময় কারাগারে ছিলেন তিনি। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জাকির খান আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। শহরের দেওভোগ এলাকায় জাকির খান তাঁর বিশাল বাহিনী গড়ে তোলেন। দেওভোগ এলাকার সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে হত্যা করে শহরে ত্রাস সৃষ্টি করেন। ২০০৩ সালে ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম হত্যাকাণ্ডের পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে জাকির খান দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান। তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে পালিয়ে থাকার পর গোপনে দেশে ফিরে এসে রাজধানীর বসন্ধুরা আবাসিক এলাকায় পরিচয় গোপন করে সপরিবার বসবাস শুরু করেন। ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিদেশি পিস্তলসহ জাকির খানকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এর পর থেকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে ছিলেন তিনি। সর্বশেষ চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে জাকির খানসহ সব আসামি খালাস পান।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, সাজা শেষে জাকির খান কারামুক্ত হয়েছেন। তিনি ২৬টি মামলায় খালাস পেয়েছেন। তিনটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে, সেই মামলাগুলোতে তিনি জামিনে রয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জে বকেয়া বেতন ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
  • রিয়াদ-আপনের নেতৃত্বে সদর থানা যুবদল বৈশাখী শোভাযাত্রা
  • নবর্বষকে স্বাগত জানিয়ে মহানগর যুবদলের বৈশাখী শোভাযাত্রা  
  • নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র বৈশাখী শোভাযাত্রা
  • বর্ণিল সাজে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র বৈশাখী শোভাযাত্রা
  • রূপগঞ্জে দুই সাব-রেজিস্ট্রারের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
  • ফতুল্লায় গৃহবধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যা : স্বামী আটক
  • নিপীড়িত মানুষের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে : জব্বার   
  • আড়াই বছর পর নারায়ণগঞ্জের জাকির খান কারামুক্ত, শোডাউন
  • নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের সাবেক নেতা জাকির কারামুক্ত, গাড়িবহর নিয়ে অনুসারীদের বরণ