মফস্বলের দুটি ছেলেমেয়ের প্রেম-ভালোবাসা ও সম্পর্কের বাস্তবতার গল্পে নির্মিত হয়েছে ভালোবাসা দিবসের বিশেষ নাটক ‘যদি তোমারে না পাই’। অভিনেতা খাইরুল বাশার ও সামিরা খান মাহিকে জুটি করে নির্মাতা সেতু আরিফ বানিয়েছেন এ নাটকটি। চিত্রনাট্যও তাঁরই। নির্মাতা এটিকে ভালোবাসার গল্পের নাটক না বলে রোমান্টিক ফিকশন দাবি করছেন। 

গল্পে দেখা যাবে, মাস্টার্স শেষ করা মিরাজ অপেক্ষায় আছে একটা চাকরি হলেই তাসনুভাকে বিয়ে করবে। ৭ বছরের ভালোবাসার সম্পর্ক পরিচর্যার পর তাসনুভার মিরাজকে ছাড়া আর কিছু চাওয়ার নেই। কিন্তু প্রেম-ভালোবাসার বাস্তবতা বেশির ভাগ সময়ে চাওয়ার সঙ্গে মেলে না। মিরাজ ও তাসনুভার ভালোবাসার গল্পে আসে পাওয়া না পাওয়ার লড়াই। অস্থিরতা আর নানা পাগলামিতে মিরাজ ঘুরপাক খায় মফস্বলের দুটি 
ছেলে-মেয়ের প্রেম-ভালোবাসা।

ভার্সেটাইল মিডিয়ার অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে নাটকটি বৃহস্পতিবার প্রচার হবে।

মূলত সম্পর্কের বাস্তবতার গল্পই এ ফিকশনের মূল প্লট। সেতু আরিফের ভাষ্য, ‘নির্মাতা হিসেবে আমি একটি সহজ সাবলীল পরিচিত গল্প ডিল করতে চেয়েছি। কিন্তু গল্পের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং চরিত্রের বাস্তবতাই আমার এ ফিকশনের মূল জায়গা। খায়রুল বাশার এবং সামিরা খান মাহি দু’জনই সুন্দর পারফরম্যান্স করেছে। আশা করি, নাটকটি সবার ভালো লাগবে।’

খাইরুল বাশার জানালেন, নাটকটির গল্প দারুণ ছিল। মানিকগঞ্জের যেসব স্থানে শুটিং হয়েছে, সেটাও বেশ নান্দনিক জায়গা। সব মিলিয়ে আমার বিশ্বাস, নাটকটিতে ভালোবাসার অন্যরকম চিত্র দেখতে পাবেন দর্শক। যে চিত্রায়ণ তাদের ভালো লাগবে।

সামিরা খান মাহিও নাটকটি নিয়ে প্রত্যাশার কথা জানালেন। বললেন, গল্পটি দারুণ পছন্দের।

ফিকশনটিতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আরও অভিনয় করেছেন সমু চৌধুরী, মিলি বাশার, শম্পা নিজাম, নিকুল কুমার মণ্ডল, হারুনুর রশীদ, শাফিজ মামুন এবং সিদ্দিক মাস্টার।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ব স তবত ন টকট

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যাংক গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণে গঠিত হচ্ছে ‘আমানত সুরক্ষা তহবিল’

ব্যাংক আমানত বীমা আইন রহিত করে গ্রাহকদের আমানতের সুরক্ষায় গঠন করা হবে ‘আমানত সুরক্ষা তহবিল’। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক তহবিল গঠন করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি পৃথক হিসাবের মাধ্যমে তহবিলটি পরিচালিত হবে। 

‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন ২০০০’ এর আওতাধীন প্রতিষ্ঠিত ‘আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিল’ এ জমাকৃত অর্থ আমানত সুরক্ষা তহবিলে (ব্যাংক কোম্পানি) প্রারম্ভিক জমা হিসেবে স্থানান্তরিত হবে। মোট সুরক্ষিত আমানতের আনুপাতিক হারে তহবিলের আকার নির্ধারিত হবে। প্রত্যেক আমানতকারীর জন্য সর্বোচ্চ সুরক্ষা আমানতের পরিমাণ হবে ২ লাখ টাকা। আগামী জুনের আগেই অধ্যাদেশটি জারি করা হবে বলে সূত্র জনিয়েছে।

‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’ এর মাধ্যমে এই তহবিল গঠন করা হবে। দেশের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষা ও আর্থিক খাতের ওপর জনগণের আস্থা বাড়াতে বিদ্যমান ‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন ২০০০’ রহিত করে ‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’ জারির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সরকার আমানত সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক আমানত সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে। এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়নও করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পৃথক বিভাগ খোলা হবে।

ইতোমধ্যেই অধ্যাদেশের একটি খসড়া প্রণয়ন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। খসড়ায় বলা হয়েছে, জনগণের আস্থা বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষায় কার্যরত ব্যাংক কোম্পানি ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে গৃহীত আমানতের সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন এবং আমানত সুরক্ষা সংক্রান্ত যথাযথ আইনি কাঠামো নির্ধারণের জন্য ‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন ২০০০’ রহিত করে এর যুগোপযোগী সংশোধন, পরিমার্জন, পরিবর্ধনপূর্বক পুনঃপ্রণয়ন করা প্রয়োজন।

‘আমানত সুরক্ষা’ বলতে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে- কোনো প্রতিষ্ঠান অবসায়নের ক্ষেত্রে এর আমানতকারীদের সুরক্ষিত  আমানত পরিশোধের নিশ্চয়তা প্রদান এবং ‘আমানত সুরক্ষা ব্যবস্থা’ মানে আমানত সুরক্ষার জন্য কার্যকরী পদ্ধতি।

তবে সরকারের আমানত, সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের আমানত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান-স্বশাসিত সংস্থা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আমানত, সদস্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত, সদস্য প্রতিষ্ঠানের বৈদেশিক শাখায় সংগৃহীত আমানত; বিদেশি সরকারের আমানত, বিদেশি সরকারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের আমানত ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আমানত এই অধ্যাদেশের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।

অধ্যদেশের খসড়ায় আমানত সুরক্ষা তহবিলের উৎস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে- সদস্য প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বা অন্য কোনো উৎস থেকে নিয়মিতভাবে সংগৃহীত আর্থিক সম্পদ; বার্ষিক প্রিমিয়াম, বিনিয়োগ থেকে আয়; নতুন ব্যাংকের ক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধনের দশমিক ৫ শতাংশ প্রারম্ভিক জমা ইত্যাদি।

আমানত সুরক্ষা তহবিলের প্রাথমিক কাজ হবে- কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়নের ক্ষেত্রে সুরক্ষিত আমানত পরিশোধ। তবে প্রদেয় সুরক্ষিত আমানতের মোট পরিমাণের তুলনায় আমানতকারীদের প্রদেয় আর্থিক সহায়তার পরিমাণ কোনক্রমেই বেশি হবে না। সদস্য প্রতিষ্ঠানের গৃহীত ঋণ পরিশোধেও এ অর্থ ব্যয় করা যাবে। এই তহবিল বা এর কোনো অংশ কোনো বিশেষ ঋণের বিপরীতে লিয়েন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে  এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত দায়িত্ব থেকে পৃথক ও স্বাধীন হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাংগঠনিক কাঠামোর অধীনে ‘আমানত সুরক্ষা বিভাগ’ নামে স্বতন্ত্র বিভাগ গঠন করা হবে। বিভাগের নির্বাহী পরিচালক সিইও হিসেবে গণ্য হবেন।  সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিভাগ থেকে জারি করা বিধি-বিধান, নির্দেশনা ও গাইডলাইন অনুসরণ করবে।  

সাত সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। চেয়ারম্যান হবেন গভর্নর। এছাড়া অর্থ সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সচিব, আমানত সুরক্ষা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি গভর্নর প্রমুখ এ পর্ষদে থাকবেন।

এছাড়া  ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনে পৃথক উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা যাবে। অনুমোদিত পর্ষদ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি নির্ধারণ এবং সে অনুযায়ী শ্রেণিকরণের ভিত্তিতে সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বার্ষিক প্রিমিয়াম নির্ধারণ করবে বলে জানা গেছে। 

ঢাকা/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ