পাবনায় আ.লীগ নেতা ও আইনজীবীদের সঙ্গে পিপির গোপন বৈঠক!
Published: 18th, February 2025 GMT
আওয়ামী লীগ নেতা ও আওয়ামী আইনজীবীদের সঙ্গে গোপন বৈঠকের অভিযোগ উঠেছে পাবনা জজকোর্টের নবনিযুক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম সরোওয়ার খান জুয়েলের বিরুদ্ধে।
বৈঠকের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাবনা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সেই বিতর্কের মধ্যেই গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) অ্যাডভোকেট গোলাম সরোওয়ার খান জুয়েলের বাসায় গোপন বৈঠকে মিলিত হন আওয়ামী লীগ নেতা ও আওয়ামী আইনজীবীরা।
এতে আওয়ামী লীগের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট বেলায়েত আলী বিল্লু ও আইনজীবী সমিতির সাবেক নির্বাহী কার্যপরিষদের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শহিদুল্লাহ বিশ্বাস হেলাল।
বৈঠকে সমিতির নির্বাচনের পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামে মামলার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয় বলে বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
পরদিন মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রয়ারি) এই বৈঠকের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যা নিয়ে আইনজীবী অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে পাবনা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট কামাল হোসাইন ও মাজেদুল ইসলামসহ একাধিক আইনজীবী বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য হতাশার এবং লজ্জাকর। যেই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতার পর তিনি পিপি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। সেই রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করে তিনি কীভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করলেন। আইনজীবী হিসেবে আমরা লজ্জিত।’
বৈঠকের বিষয়ে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট বেলায়েত আলী বিল্লু বলেন, ‘‘আমাদের পিপি সাহেব ডেকেছিলেন। মতবিনিময় হয়েছে। আমাদের যেসব লোক জেলে রয়েছেস তাদেরকে কীভাবে জামিন করানো যায় সেটা নিয়ে কথা হয়েছে। কিন্তু রাজনীতি বা নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি।”
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট গোলাম সরোওয়ার খান জুয়েল বলেন, ‘‘বৈঠকটি আমার বাসায় নয় চেম্বারে হয়েছে। আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে অ্যাডভোকেট কাজী আলমের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, আমার সাথে হয়নি। আমি পিপি হিসেবে আমার কাছে সবাই আসতে পারে। এতে সমস্যা নেই।’’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ গণধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘‘আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। এখন এই বিষয়টি নিয়ে আমি দলীয় ফোরামে তুলে আলোচনা করব। এরপর আপনাকে জানাতে পারব।’’
উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেট গোলাম সরোওয়ার খান জুয়েল পাবনার সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্সের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও ঠিকাদারী পার্টনার। গত ১৭ নভেম্বর তাকে পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। এরপর তার নিয়োগ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী পরিষদের সদস্যরা। এরপরও তিনি বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
ঢাকা/শাহীন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব দ র এক ধ ক আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
বিচারপ্রার্থীদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা বিচারকের
আদালতে আসা বিচারপ্রার্থীদের তৃষ্ণা মিটানোর লক্ষ্যে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছেন মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। এরই অংশ হিসেবে মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের অষ্টম তলা থেকে শুরু করে নিচতলা পর্যন্ত প্রতিটি তলায় একটি করে ফিল্টার পানির যন্ত্র বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় সুপেয় পানির উদ্বোধন করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গাজী দেলোয়ার হোসেন। এখন থেকে ভবনের প্রতিটি তলায় আসা বিচারপ্রার্থীদের তৃষ্ণা মিটানোর জন্য আর দূরে কোথাও যেতে হবে না।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম জানান, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে সব ম্যাজিস্ট্রেট ও আদালতের কর্মচারীদের সহযোগিতায় এ সুপেয় পনির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে করে আদালতে আসা বিচারপ্রার্থীরা পানি পান করে তৃষ্ণা মিটাতে পারবে।
উদ্বোধনের পর ভবনটির দ্বিতীয় তলায় দেখা গেছে, আবুল কাশেম নামে এক প্রবীণ ব্যক্তি তাঁর ছেলেকে দেখার জন্য গারদখানায় এসেছেন। এ সময় তিনি পানির ফিল্টার থেকে পানি পান করেন। তিনি বলেন, এই প্রথম দেখলেন আদালতে সাধারণ মানুষের জন্য পানি খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারাই এ ব্যবস্থা করেছেন, তারা উপরওয়ালার কাছ থেকে অনেক অনেক পুণ্য পাবেন। বিষয়টি তাঁর খুব ভালো লেগেছে।
সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) ও আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা মিয়া বলেন, এটি মহৎ একটি উদ্যোগ। বিচারপ্রার্থীদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তিনি ধন্যবাদ জানান।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আলম জানান, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতিটি পদক্ষেপ গঠনমূলক।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন, দেশের অন্যান্য অফিসের তুলনায় আদালতে বেশি মানুষের আনাগোনা। আদালতে হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যাই বেশি। তাই এসব মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই তারা যাতে বিনা মূল্যে সুপেয় পানি খেতে পারে, এর ছোট একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীতে আরও উদ্যোগ বাস্তবায়নে তাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সুপেয় পানির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুলফিকার হোসাইন রনি, মানিক দাস, রহিমা আক্তারসহ আইনজীবী সমিতির অন্য আইনজীবীরা।