সামরিক সরঞ্জাম বিক্রিতে বাংলাদেশে কোনো প্রতিযোগিতা বোধ করে না চীন। চীন দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশে অস্ত্র বিক্রি করে আসছে। আর চীন যা সরবরাহ করে তা বাংলাদেশের জাতীয় পরিস্থিতি বিবেচনায় উপযোগী বলে মনে করে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ওয়াও ওয়েন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকায় চীনের দূতাবাসে বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। এ সময় দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চীন থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনা ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সহযোগিতা সমন্বিত। গত বছর চীনের নৌবাহিনীর জাহাজ বাংলাদেশ সফরে এসেছিল। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে চীন সামরিক অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে। আমরা কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতা বোধ করি না। আমাদের সামরিক সরঞ্জাম বাংলাদেশের জাতীয় পরিস্থিতিতে উপযোগী।

দুই দেশের ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ঢাকায় রাষ্ট্রদূত বলেন, গত ৫০ বছর ধরে অভিন্ন স্বার্থে একে অপরকে সহযোগিতা করে আসছে দুই দেশ। চীন সবসময়ে বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেয়। একে অপরের প্রতি সম্মান, সাম্য এবং অভিন্ন স্বার্থকে সামনে রেখে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি যাই থাকুক না কেন, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব, এটাই চীনের নীতি। দুই দেশের বন্ধুত্বের এ ভিত্তি পরিবর্তন হবে না। বাংলাদেশের সার্বভৌম এবং জাতীয় ঐক্য সুরক্ষায় সহযোগিতা করবে চীন।

ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর করেন চীনে। যা দুই দেশের রাজনৈতিক সহযোগিতার স্পষ্ট বার্তা দেয়। সেই সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা এবং বন্ধুত্বকে সুসংহত ও গভীর করার সুযোগ তৈরি করেছে। বৈশ্বিক ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে যে পরিবর্তনই আসুক না কেন, দুই দেশের সম্পর্ক সব সময়ে সামনের দিকে প্রবল গতিতে এগিয়ে গিয়েছে।

৫ আগস্ট পরবর্তী ঢাকা–দিল্লি সম্পর্ক আঞ্চলিক শান্তিতে প্রভাব পড়বে কি–না জানতে চাইলে ইয়াও ওয়েন বলেন, এ প্রশ্ন চীন নয় ভারতের রাষ্ট্রদূতকে করতে হবে। আমরা আশাকরি ইস্যুগুলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।

ঢাকা–দিল্লির উত্তেজনা কমাতে চীন মধ্যস্থতা করবে কি না– উত্তরে তিনি বলেন, আমি মনে করি বাংলাদেশিরা যথেষ্ট বিচক্ষণ নিজেদের সমস্যা সমাধানে।

ব্রিফিংয়ে রাষ্ট্রদূত জানান, চীনের কুনমিং প্রদেশের সেরা তিনটি হাসপাতালকে বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসা সেবার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার ধরণ, ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও দোভাষী নির্বাচনসহ সামগ্রিক চিকিৎসা সেবার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে দুই দেশের সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন। সবকিছু ঠিকঠাক এগুলো মার্চের শুরুতে বাংলাদেশের রোগীদের প্রথম দলটি চিকিৎসাসেবা নিতে কুনমিংয়ে যাবে এমনটাই আশা করছে চীন।

প্রথম বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা নিয়ে তিনি জানান, ঢাকায় ওই হাসপাতাল তৈরির জন্য বাংলাদেশের কাছে থেকে বিস্তারিত প্রস্তাবের অপেক্ষায় আছে চীন। এছাড়া চীন তাদের আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জুলাই–আগস্টের অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য বিশেষায়িত আধুনিক সরঞ্জাম দেবে। 

তিস্তা প্রকল্প দ্রুত শুরু করলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে জানিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন প্রস্তুত। তবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তিস্তা নিয়ে এক প্রশ্নে চীনা তিনি বলেন, তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন প্রস্তুত। তবে বাংলাদেশকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে এ প্রকল্প দ্রুত শুরু করলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে। বাংলাদেশ সরকার তিস্তা প্রকল্পের জন্য চীনের সহায়তা চেয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। প্রকল্পটি মূল্যায়ন করার পর ২০২৩ সালে ভাগে ভাগে প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন বাংলাদেশ সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেয়। এরপর থেকে আমরা সরকারের উত্তরের অপেক্ষায় রয়েছি।

মানচিত্র বিতর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশের পাঠ্যবইয়ে ও ওয়েবসাইটে চীন-অরুণাচল সীমান্তের ভুল মানচিত্র নিয়ে চীনের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে এটা জানিয়েছি। আমরা বাংলাদেশ সরকারের সমর্থন চাই, আশা করি এ বিষয়ে চীনের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল দ শ সরক র পর স থ ত সহয গ ত প রকল প র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন আয়োজিত উন্মুক্ত কনসার্ট স্থগিত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে হতে যাওয়া ‘রিবিল্ডিং দ্য নেশন’ কনসার্টটি হঠাৎ স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার  রাতে স্থগিতের বিষয়টি আয়োজকরা নিশ্চিত করেছেন। 

তবে হঠাৎ করেই একদিন আগে কেন আলোচিত এ কনসার্টটি স্থগিত করা হলো সে বিষয়টি দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আয়োজকদের একজন জানিয়েছেন নিরাপত্তা ইস্যুতে আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে। 

আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পুরোনো বাণিজ্য মেলা মাঠ, আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। আয়োজকরা জানান, নিরাপত্তার কারণে কনসার্টটি স্থগিত করা হয়েছে। তবে কখন কনসার্টটি হবে তা নিয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। 

আয়োজকদের পক্ষ থেকে এর আগে বলা হয়, ‘এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ উন্মুক্ত কনসার্ট হতে যাচ্ছে। কনসার্ট ভেন্যুতে কয়েক লাখ মানুষ একসঙ্গে নিরাপদে গান শুনতে পারবে। 

‘তাদের সামনে দেশের বিভিন্ন ব্যান্ড গান পরিবেশন করবে। আমরা দেশীয় শিল্পীদের নিয়ে কনসার্টের লাইনআপ সাজিয়েছি; যারা আন্দোলনের সময় নিজেদের ক্যারিয়ারের চিন্তা না করে আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।’

প্রসঙ্গত, এই কনসার্টে প্রধান আকর্ষণ হিসেবে গান গাওয়ার কথা ছিল নগর বাউল জেমস। আরও গান শোনানোর কথা ছিল ব্যান্ড চিরকুট, আর্টসেল, সোনার বাংলা সার্কাস, বেঙ্গল সিম্ফনি, বাংলা ফাইভ, ক্রিপটিক ফেইট, কুঁড়েঘর, কাকতাল, সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ানসহ অনেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ