সুমিতমো কর্পোরেশন বৃত্তি পেলেন ঢাবির ৪০ শিক্ষার্থী
Published: 18th, February 2025 GMT
বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষে স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করেছে জাপানের সুমিতমো কর্পোরেশন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতে বৃত্তির চেক তুলে দেওয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড.
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদের সঞ্চালনায় এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. উপমা কবির।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করায় সুমিতমো কর্পোরেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “এ বৃত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং জাপানের মধ্যে বিরাজমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।”
বৃত্তিপ্রাপ্ত প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা হলেন- অমিতা রায় (বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি), তুলি রাণী দাস (ইতিহাস), নজরুল ইসলাম (পরিসংখ্যান), তাবাসসুম হক ইভা (ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স), রাবেয়া বসরী তামান্না (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), আবিদা সুলতানা বৈশাখী (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক), সাবিকুন্নাহার সামান্তা (উদ্ভিদবিজ্ঞান), ফারদিনা তাসনিম (ভূগোল ও পরিবেশ), মো. জামিউল হাসান জেমস (ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল) ও মো. আশিকুজ্জামান আশিক (শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট)।
দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা হলেন- মো. মোর্শেদ আলম শফিক (গণিত), মো. শাকিবউর রহমান (কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল), প্রিয়া কুন্ডু (ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স), তায়েবা বিনতে হান্নান (লোক প্রশাসন), নমল উমামা চৌধুরী (উদ্ভিদ বিজ্ঞান), সোমা রানী (দর্শন), মো. ফরিদুল ইসলাম (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস্), মো. আবু সোলায়মান শান্ত (ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি), মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন (ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি) ও জাহিদুল হক (সমাজকল্যাণ)।
তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা হলেন- মো. সজল হোসেন (নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং), শিমু শাহা (ফিন্যান্স), শেখ শাকিল হোসেন (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), তাসনিম জুয়াইরিয়া বিন্তি (জাপানিজ স্টাডিজ), গোলাম মোস্তফা (মার্কেটিং), সাদিয়া চৌধুরী (গণিত), লেসমি রানী (ইতিহাস), মাহমুদা খাতুন (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), ইব্রাহিম সরকার (অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস) এবং তানজিনা আক্তার (আইন)।
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা হলেন- মতিয়া নূর রাইসা (জিন প্রকৌশল ও জীব প্রযুক্তি), আহমেদ আদনান (আই.আই.টি), মাজহারুল ইসলাম (ইসলামিক স্টাডিজ), মোঃ রেদওয়ানুল ইসলাম (গণিত), আরিফা হক (পদার্থ বিজ্ঞান), মাইকেল সাগর সরকার (আইন), মো. কামরুল হাসান রাব্বি (অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস), ত্রিশা নন্দী (অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস), আব্দুল মুহাইমিন (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক) এবং আপেল চন্দ্রো (মনোবিজ্ঞান)।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর ষ র শ ক ষ র থ র ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
র্যাবের নাম ও পোশাক বদলানো হচ্ছে, প্রয়োজনে নতুন করে গঠন
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) নাম ও পোশাক পরিবর্তন করা হচ্ছে। নাম পরিবর্তনের একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিকে। প্রয়োজনে র্যাবকে নতুন করে গঠন করা হবে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির পরবর্তী সভায়। এসব তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সপ্তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকস চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর র্যাব ও র্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে পৃথকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ছিলেন। বেনজীর আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েন তিনি।
গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট সংঘটিত ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর যে তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে র্যাবকে বিলুপ্ত করার সুপারিশও রয়েছে। র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করে আসছে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, পুলিশের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এবং জনবান্ধব পুলিশি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে র্যাবের অতীত কার্যক্রম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পর্যালোচনা করে এর প্রয়োজনীয়তা পুনর্মূল্যায়ন করা যেতে পারে।
র্যাবের বিলুপ্তি চেয়েছে বিএনপিও। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ র্যাবের অতীত কর্মকাণ্ড তুলে ধরে এই বাহিনীকে বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেন। ২০০৪ সালে খালেদা জিয়ার সরকারের আমলে পুলিশের এই বিশেষ বাহিনী গঠন করা হয়। বিএনপির আমলে গঠিত এই বাহিনীকে সংস্কার না করে কেন বিলুপ্ত করতে চায়, প্রশ্ন করা হলে হাফিজ উদ্দিন আহমদ তখন বলেছিলেন, এটা মেডিকেল বিদ্যাতেও আছে, যখন একেবারে গ্যাংগ্রিন হয়ে নষ্ট হয়ে যায়, তখন কেটে ফেলা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।
র্যাবের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে র্যাবের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে গতকালের আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় আলোচনা হয়। সবার বক্তব্যে উঠে আসে গত ২০ বছরে র্যাব ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। বহু মানুষকে গুম, খুন করেছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িয়েছে। যে কারণে এলিট ফোর্সকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়তে হয়েছে। ভবিষ্যতে সংস্থাটি যাতে একই অপরাধে না জড়ায়, সে জন্য ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, ইংল্যান্ড, তুরস্কের মতো দেশে এ ধরনের এলিট ফোর্স কীভাবে কাজ করে, তা পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে আরও উন্নতি করতে হবে। আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আপনারা প্রতি সভাতেই একই কথা বলছেন। আসলে কি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে? জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা গণমাধ্যমে দেখছেন কতটা উন্নতি হচ্ছে। আপনারাই বলবেন উন্নতি হচ্ছে কি না।’
গত সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরায় রামদা দিয়ে প্রকাশ্যে এক দম্পতিকে কোপানোর ঘটনা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে জানতে চান সাংবাদিকেরা। উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হয়েছে। কেউ অপরাধ করার পর যদি আমরা অ্যাকশনে না যাই, তখন বলতে পারতেন যে আমরা কাজ করছি না।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দাবি করেন, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য, ছিনতাই আগের চেয়ে কমেছে। তবে সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কীভাবে উন্নতি করা যায়, সভায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের বিভিন্ন দাবিদাওয়া শুনতে শুনতে তাদের মূল যে কাজ, সেটা না করে অন্য কাজে সম্পৃক্ত হতে হচ্ছে। এর ফলে তাদের শক্তি কমে যাচ্ছে।’ তিনি দাবিদাওয়ার বিষয়ে আন্দোলনকারীদের নির্দিষ্ট জায়গায় অথবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে বলেন, রাস্তাঘাট বন্ধ করে জনগণের ভোগান্তি কেউ চায় না।