শেখ হাসিনাকে এনে বিচার করা সরকারের মূল লক্ষ্য: প্রেস সচিব
Published: 18th, February 2025 GMT
শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করা অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, কিছুদিন আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে স্পষ্ট শেখ হাসিনা কী ধরনের অপরাধ করেছেন। তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এটা বড় ধরনের অপরাধ। জাতিসংঘ ও কিছু কিছু মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনের পর অনেক চাপ তৈরি হয়েছে। এই চাপের একটা নমুনা হলো ইন্ডিয়া টুডের জরিপ। সেখানে দেখা গেছে, সেখানকার ৫৫ শতাংশ মানুষ চান শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে। কিছু অংশ চাচ্ছেন তাঁকে অন্য দেশে দিতে। মাত্র ১৬-১৭ শতাংশ মানুষ চান শেখ হাসিনাকে ভারতে রাখতে।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে সরকারের চিন্তাভাবনা কী জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, এ বিষয়ে দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমাদের একটাই কথা, আওয়ামী লীগের যেসব নেতা–কর্মী ও সমর্থক জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত, গুম-খুনে জড়িত, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত; তাঁদের সবার বিচার হবে। এটা হওয়ার পর দেশের মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবে আওয়ামী লীগের বিষয়ে তারা কী ভাবছে।’
প্রধান উপদেষ্টার দুবাই সফরের বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘দুবাইয়ে সঙ্গে গত সরকারের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে ছিল। বাংলাদেশি শ্রমিক নিষেধাজ্ঞায় রয়েছেন। এ নিয়ে অধ্যাপক ইউনূস সেখানকার কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা আশা করছি, এই নিষেধাজ্ঞা দ্রুত উঠে যাবে। সেখানে আবারও বাংলাদেশি শ্রমিক যেতে পারবেন। তাঁরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
আইসিটি খাতের দুর্নীতি নিয়ে শ্বেতপত্র
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময় অগ্রাধিকার পাওয়া তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) এবং ডিজিটালাইজেশন খাতের দুর্নীতি-অনিয়ম নিয়ে শ্বেতপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে উচ্চপর্যায়ের এই কমিটি গঠন করা হবে, যারা আগামী দুই মাসের মধ্যে এই শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে। শ্বেতপত্রে ওই সরকারের সময় সম্পাদিত সব ধরনের চুক্তি, প্রকল্পের প্রস্তাব (ডিপিপি), সব নিরীক্ষা প্রতিবেদন ও তদন্ত প্রতিবেদন খতিয়ে দেখবে।
শফিকুল আলম বলেন, আইসিটি ও ডিজিটালাইজেশন ঘিরে বেশ কটি অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস চাইছিলেন এই খাত নিয়ে একটি শ্বেতপত্র যাতে তৈরি করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের এটি একটা সিদ্ধান্ত। শ্বেতপত্র তৈরির জন্য দু–এক দিনের মধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিতে দেশি–বিদেশি অর্থনীতিবিদ যাঁরা আইসিটি নিয়ে কাজ করেন, সেসব বিশেষজ্ঞরা থাকবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ব তপত র সরক র র আইস ট
এছাড়াও পড়ুন:
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী
সাবেক শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ঢাকা ও ময়মনসিংহে অবস্থানরত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী ও ইফতার ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২২ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর ও ময়মনসিংহের একটি রেস্টুরেন্টে সন্ধ্যায় পুনর্মিলনী উপলক্ষ্যে দেড় শতাধিক সাবেক শিক্ষার্থী নিয়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা পুনর্মিলনীতে পরিচিত মুখগুলোকে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলাকালীন পরিচিত সব মুখ এক ছাদের নিচে দেখতে পেয়ে উল্লাসে মেতে উঠেন তারা।
মিলনমেলার এই আয়োজনকে ক্যামেরাবন্দি করতে ভোলেননি তারা। আনাড়ি হাতেই সবাই যেন হয়ে উঠেন এক একজন আলোকচিত্রী। দীর্ঘদিন পর অগ্রজ ও অনুজদের দেখা হওয়ায় ক্যামেরায় সেই স্মৃতি ধরে রাখেন। কুশল বিনিময়, আলিঙ্গনে সবাই ফিরে যান প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে।
পুনর্মিলনীতে আসা আরব আমিরাত দূতাবাসের অর্থনৈতিক বিশ্লেষক লালন আলতাপ জানান, পরিচিত মুখগুলোকে একসাথে দেখে মনেই হয়নি ঢাকায় আছি। ফিরে গিয়েছিলাম সেই ক্যাম্পাস জীবনে। এমন মিলনমেলায় যুক্ত হতে পেরে ভীষণ আনন্দিত। এতদিনের কর্মক্লান্তি যেন মুহূর্তেই উবে গেছে।
আরেক নজরুলিয়ান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের উপ পরিদর্শক আবু সাঈদ বলেন, এ ইফতার ও পুনর্মিলনীতে যোগ দিতে পেরে অনেক আনন্দ অনুভব করছি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পুরনো বন্ধু, বড় ভাই ও ছোটদের পেয়ে মনে হচ্ছে ক্যাম্পাস জীবনে চলে এসেছি। তাই ক্যাম্পাস জীবনে ফেলে আসা স্মৃতিগুলো বেশি বেশি মনে পড়ছে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) এর সহকারী অধ্যাপক ফেরদৌস আনাম জীবন বলেন, এত সুন্দর অনুষ্ঠানে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই। এই আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার (ডেপুটি ডিরেক্টর, আইসিটি) মাহমুদ মুনিম বলেন, অনেকের সাথে দেখা হলো প্রায় অর্ধযুগ, তারও বেশি সময় পরে। যাদের সাথে কাটিয়েছি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো, তাদের অনেককে দেখে খুবই ভালো লাগছে। সবাই স্ব স্ব স্থানে প্রতিষ্ঠিত। কোনও সমস্যা কিংবা সহায়তায় আমরা একত্রিত হয়ে যেন কাজ করতে পারি সেটার চমৎকার একটি প্ল্যাটফর্ম হবে সেই প্রত্যাশা করি।
সাবেকদের নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত হওয়া পুনর্মিলনীতে যোগ দেওয়া সাবেক শিক্ষার্থী হাসিব ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনরা একত্রিত হওয়ার প্রয়াস থেকেই এমন উদ্যোগ, ভবিষ্যতে আরো বৃহৎ পরিসরে একসাথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে আমরা নানাধর্মী আয়োজন করবো।
আবদুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ মিশকাত আল হারুন বলেন, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা এবার ভিন্নমাত্রা পেয়েছে প্রথমবারের মতো ঢাকার বাইরে ময়মনসিংহে উদযাপন করার মাধ্যমে। আশা করছি এর ব্যপ্তি বেড়েই চলবে।
ময়মনসিংহে অবস্থানরত প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের শিক্ষক বাঁধন আরা মিল্কি বলেন, এবার দুটি ভিন্ন স্থানে নজরুলিয়ানদের এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে করে নজরুলিয়ানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ আরো বেড়ে গেছে।
অনুষ্ঠানে আগত সাবেকদের ফটোসেশনের মাধ্যমে সমাপ্ত হয় সাবেকদের এ পুনর্মিলনী ও ইফতারপর্ব।