বলা হয়ে থাকে, রেকর্ড নাকি গড়াই হয় ভাঙার জন্য। দেখতে বা শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে, তবুও পরে সেই রেকর্ড ভেঙে গেছে, এমন ঘটনা তো আর কম নেই। ভারতেরও একটি রেকর্ড টিকে ছিল ৪০ বছর, তা–ও ভেঙে গেল আজ।

আল আমেরাতে আইসিসি ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ লিগ–টুয়ের ম্যাচে আজ ওমানকে ৫৭ হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু আসল ঘটনাটা অন্য জায়গায়, আগে ব্যাটিংয়ে নেমে যুক্তরাষ্ট্র করেছিল মাত্র ১২২ রান। পূর্ণদৈর্ঘ্যের (ওভার কমানো হয়নি) ওয়ানডেতে এত অল্প রান করেও জয়ের নতুন রেকর্ড এটি।

আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কার্তিকের ‘ডার্ক হর্স’ বাংলাদেশ১ ঘণ্টা আগে

এর আগে ১৯৮৫ সালে চার জাতির টুর্নামেন্টে শারজাতে পাকিস্তানকে ৩৮ রানে হারিয়েছিল ভারত। সে ম্যাচে আগে ব্যাট করে ভারত করেছিল ১২৫ রান। সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ল যুক্তরাষ্ট্র। তবে শুধু এটাই নয়, আরও কয়েকটি রেকর্ডই ভাঙা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ওমান ম্যাচে যে ৯ বোলারকে ব্যবহার করা হয়েছে, তাঁদের সবাই ছিলেন স্পিনার। ৪৬৭১টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে হয়ে যাওয়ার পর এমন ঘটনা এই প্রথম দেখা গেল—কোনো পেসার ম্যাচে একটি বলও করেননি। ওমানকে ৬৫ রানে অলআউট করার পথে যুক্তরাষ্ট্রের নস্টথুশ কেনজিগে ১১ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট।

আরও পড়ুনকেন ১ কোটি ৩২ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি করে দিলেন পিসিবি চেয়ারম্যান১ ঘণ্টা আগে

ম্যাচে মোট ১৯ উইকেট নিয়েছেন দুই দলের স্পিনাররা। ওয়ানডেতে এক ম্যাচে স্পিনারদের সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার যৌথ রেকর্ড এটি, যেখানে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নামও। ২০১১ সালে চট্টগ্রামে পাকিস্তান–বাংলাদশ ওয়ানডেতেও ১৯ উইকেট নেন দুই দলের স্পিনাররা।

একটি জায়গায় অবশ্য দ্বিতীয় হতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র–ওমান ম্যাচকে। দুই দলই অলআউট হয়েছে এবং মোট ৬১ ওভার খেলে তারা করতে পেরেছে ১৮৭ রান। দুটি দলই অলআউট হয়েছে, এমন ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম রানের রেকর্ড ২০১৪ সালে বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচে। মোট ৪১ ওভার খেলে দুই দল তুলেছিল ১৬৩ রান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র কর ড উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

গা-ছাড়া ক্রিকেটে ডুবল আশার সূর্য

পূর্বে উদিত সূর্যের কড়া তাপের দিনে বাংলাদেশের ক্রিকেট আকাশে নতুন কিছু শুরুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দল। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ২৫ বছরে যা গড়ে উঠেনি টেস্ট সংস্কৃতি, সেটাই নতুন করে শুরুর ঘোষণা মিলেছিল অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠে।

আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট খেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেল্ফ ক্রিকেট থেকে বেরিয়ে ঐক‌্যবদ্ধ লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে হোক বা দক্ষিণ আফ্রিকা, এক দাঁড়িপাল্লায় মেপে প্রতিটি বল বুক চিতিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ২২ গজে দেখা মিলল গা-ছাড়া ক্রিকেটের। তাতে টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার যে অভিপ্রায় তা ভেস্তে গেছে প্রথম সুযোগে।

নিবেদনে প্রবল ঘাটতি, হতশ্রী ব‌্যাটিং প্রদর্শনী ও লড়াইয়ের জেদের অভাব। তাতে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিনটি জিম্বাবুয়ে নিজেদের করে নিয়েছে। সময় যত গড়িয়েছে, মধ্য গগন থেকে সূর্য পশ্চিমে যতটা হেলেছে বাংলাদেশের সম্ভাবনার সূর্যও ডুবেছে অতলে।

আরো পড়ুন:

অবশেষে জিম্বাবুয়ে সিরিজ সম্প্রচারকারী চ্যানেল পেলো বিসিবি

সিলেট ও চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট

টস জিতে আগে ব‌্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত দিয়ে মাত্র ১৯১ রানে অলআউট বাংলাদেশ। ধারহীন বোলিংয়ের বিরুদ্ধে জবাব দিতে নেমে জিম্বাবুয়ে কোনো উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৬৭ রান তুলে রাঙিয়েছে প্রথম দিন। ১০ উইকেট হাতে রেখে দিন শেষ করার স্বস্তিতে মুখে চওড়া হাসি অতিথি শিবিরে।

সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব‌্যর্থতার গল্পগুলো একই রকম। ব‌্যাটিং ব‌্যর্থতায় হতাশার সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া। বোলিংয়ে শেষ কয়েক বছর লড়াই করলেও ব‌্যাটিং মাথা ব‌্যথার কারণ। কালেভাদ্রে হাসে ব‌্যাট। বেশিরভাগ সময়ই থাকে আড়ালে। সিলেটের ২২ গজে আজকের দিনটা ছিল তেমনই।

যদিও বোলারদের এখানে ক্রেডিট দেওয়ার সুযোগ সামান‌্য। জিম্বাবুয়ের বোলাররা আহামরি বোলিং করেননি যে বাংলাদেশ ৬১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ফেলবে। অতীত রেকর্ডও বিশ্রী। এই টেস্টের আগে অলআউট হওয়া দশ ইনিংসের মধ‌্যে ছয়টিতেই দুইশ ছুঁতে পারেনি।

যার শুরুটা ওপেনিং জট থেকে। সবশেষ ৩১ ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে কোনো সেঞ্চুরি আসেনি। এবার ৩১ রানেই উদ্বোধনী জুটিতে ফাটল। সাদমান স্লিপে ক‌্যাচ দিয়ে ফেরার ১ রান পরই মাহমুদুল হাসান জয় উইকেটের পেছনে তালুবন্দি হন। প্রথম সেশনে আর কোনো বিপদ বাদেনি। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনেই সব ওলটপালট। উইকেট আহামরি কঠিন ছিল না। ব‌্যাটিংয়ের জন‌্য সহজ ছিল। জিম্বাবুয়ের বোলাররাও আহামরি বোলিং করেননি যে ব‌্যাটিংয়ে ধস পড়বে।

আত্মঘাতি শটে উইকেট উপহার দিয়ে না আসলে ব‌্যাটসম‌্যানদের আউট করা কঠিন ছিল। অতিথিদের জন‌্য কাজটা সহজ করে দেন অধিনায়ক শান্ত (৪০), মুশফিকুর (৪), মুমিনুল (৫৬) ও মিরাজ (১)। তাদের পথ অনুসরণ করেন তাইজুল (৩)। ৪৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।

সেখান থেকে তুলে দাঁড়ানোর শক্তি লেজের ব‌্যাটসম‌্যানদের ছিল না। জাকের আলীর ২৮, হাসান মাহমুদের ১৯ রান স্কোরবোর্ড কিছুটা সমৃদ্ধ করে। ওতোটুকুই যা লড়াই। টেস্টে স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করে ব‌্যাটিং জুটি। শুরুর দুই ব‌্যাটসম‌্যান সাজঘরে ফেরার পর তৃতীয় উইকেটে মুমিনুল ও শান্ত ১২৮ বলের জুটি গড়েছিলেন। ৬৬ রান আসে তাদের জুটিতে। যা দলের পক্ষে ছিল সর্বোচ্চ। বাকিটা সময়ে কেবল ছিল আসা-যাওয়ার মিছিল।

একই উইকেটে জিম্বাবুয়ের ব‌্যাটসম‌্যানরা ১৪.১ ওভার খেলার সুযোগ পেয়েছিল। ব্রেইন বেনেটের ৩৭ বলে ৬ চারে সাজানো ৪০ ও বেন কারানের ৪৯ বলে ১৭ রানের জমাট ৬৭ রানের জুটি অবাক করেছে সবাইকেই। শেষ বিকেলে চার বোলার ব‌্যবহার করেও কোনো সাফল‌্য মেলেনি। তাতে দিনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একচ্ছত্র আধিপত‌্য ধরে দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে অতিথিরা।

ব‌্যাকফুটে থাকা বাংলাদেশ দ্বিতীয় দিন ফিরতে না পারলে টেস্টের প্রথম ইনিংসেই ম্যাচের এপিটাফ লিখে নিয়েছে ধরে নেওয়াই যাবে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্যাটিংয়েও কিছু করতে চান মিরাজ
  • বাংলাদেশেও অনার্স বোর্ড চান মিরাজ
  • দুই দলই সিলেট টেস্টে নিজেদের এগিয়ে রাখছে 
  • দ্বিতীয় দিনও ব্যাকফুটে থাকল বাংলাদেশ
  • লিড একশ’ হওয়ার আগে থামল জিম্বাবুয়ে 
  • একশ’ ছোঁয়া লিড নিয়ে থামল জিম্বাবুয়ে 
  • বিজয়ের সেঞ্চুরির ফিফটি, মোহামেডান-আবাহনীর জয়
  • জাতীয় দলের বাইরে রিসোর্স কম, মনে করিয়ে দিলেন সালাউদ্দিন
  • এনামুলের দিনে রনিরও সেঞ্চুরি, জিতেছে আবাহনী–মোহামেডান–গাজী
  • গা-ছাড়া ক্রিকেটে ডুবল আশার সূর্য