ভারতের ৪০ বছর আগের রেকর্ড ভেঙে দিল যুক্তরাষ্ট্র
Published: 18th, February 2025 GMT
বলা হয়ে থাকে, রেকর্ড নাকি গড়াই হয় ভাঙার জন্য। দেখতে বা শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে, তবুও পরে সেই রেকর্ড ভেঙে গেছে, এমন ঘটনা তো আর কম নেই। ভারতেরও একটি রেকর্ড টিকে ছিল ৪০ বছর, তা–ও ভেঙে গেল আজ।
আল আমেরাতে আইসিসি ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ লিগ–টুয়ের ম্যাচে আজ ওমানকে ৫৭ হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু আসল ঘটনাটা অন্য জায়গায়, আগে ব্যাটিংয়ে নেমে যুক্তরাষ্ট্র করেছিল মাত্র ১২২ রান। পূর্ণদৈর্ঘ্যের (ওভার কমানো হয়নি) ওয়ানডেতে এত অল্প রান করেও জয়ের নতুন রেকর্ড এটি।
আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কার্তিকের ‘ডার্ক হর্স’ বাংলাদেশ১ ঘণ্টা আগেএর আগে ১৯৮৫ সালে চার জাতির টুর্নামেন্টে শারজাতে পাকিস্তানকে ৩৮ রানে হারিয়েছিল ভারত। সে ম্যাচে আগে ব্যাট করে ভারত করেছিল ১২৫ রান। সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ল যুক্তরাষ্ট্র। তবে শুধু এটাই নয়, আরও কয়েকটি রেকর্ডই ভাঙা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ওমান ম্যাচে যে ৯ বোলারকে ব্যবহার করা হয়েছে, তাঁদের সবাই ছিলেন স্পিনার। ৪৬৭১টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে হয়ে যাওয়ার পর এমন ঘটনা এই প্রথম দেখা গেল—কোনো পেসার ম্যাচে একটি বলও করেননি। ওমানকে ৬৫ রানে অলআউট করার পথে যুক্তরাষ্ট্রের নস্টথুশ কেনজিগে ১১ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট।
আরও পড়ুনকেন ১ কোটি ৩২ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি করে দিলেন পিসিবি চেয়ারম্যান১ ঘণ্টা আগেম্যাচে মোট ১৯ উইকেট নিয়েছেন দুই দলের স্পিনাররা। ওয়ানডেতে এক ম্যাচে স্পিনারদের সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার যৌথ রেকর্ড এটি, যেখানে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নামও। ২০১১ সালে চট্টগ্রামে পাকিস্তান–বাংলাদশ ওয়ানডেতেও ১৯ উইকেট নেন দুই দলের স্পিনাররা।
একটি জায়গায় অবশ্য দ্বিতীয় হতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র–ওমান ম্যাচকে। দুই দলই অলআউট হয়েছে এবং মোট ৬১ ওভার খেলে তারা করতে পেরেছে ১৮৭ রান। দুটি দলই অলআউট হয়েছে, এমন ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম রানের রেকর্ড ২০১৪ সালে বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচে। মোট ৪১ ওভার খেলে দুই দল তুলেছিল ১৬৩ রান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত বলেই উত্তেজনা
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের উত্তেজনা এখন ভারত-পাকিস্তান ম্যাচকেও ছাপিয়ে যায়। সম্প্রতি তাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে রাজনীতি। ভারতের সঙ্গে যে কোনো খেলায় বাংলাদেশ জয় পেলে অনেকটা রাষ্ট্রীয় উৎসবের উপলক্ষ তৈরি করে।
ক্রিকেটের যুব এশিয়া কাপের পর নারী সাফ ফুটবলে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জয়ে দেশজুড়েই ছিল উৎসবের বাতাবরণ। আজ আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যে ম্যাচ খেলবে, এ নিয়েও উত্তেজনায় ফুটছে জাতি। দেশে-প্রবাসে স্লোগানে মুখরিত হবে জাতি। নাজমুল হোসেন শান্তর বিশ্বাস, গ্যালারির সমর্থন মাঠে তাদের ভালো খেলার প্রেরণা জোগাবে। উভয় দিক থেকেই ভারতকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে চান তারা।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে বাংলাদেশ কোনো ওয়ানডে ম্যাচ খেলেনি। কারণ, ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাঠে ছিল বিপিএলের খেলা। টানা টি২০ ক্রিকেট খেলায় বিশ্রাম নেওয়ারও প্রয়োজন ছিল। ফলে নিজেদের মধ্যে ম্যাচ সিনারিও প্র্যাকটিস করে দুবাই গেছেন শান্তরা। কোচ ফিল সিমন্সও প্রস্তুতি নিয়ে খুশি ছিলেন না। তার ওপর পাকিস্তান শাহিনসের কাছে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে ৭ উইকেটে হেরেছে। এই হার শেষে কাল না হলেই ভালো। যদিও অধিনায়ক শান্ত বলছেন সমস্যা হবে না, ‘প্র্যাকটিস ম্যাচের হারে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। কারণ, সেখানে আমরা অনেক কিছু দেখেছি। বোলিং বা ব্যাটিং করার সুযোগটা দেওয়া হয়েছে অনেককে। সাধারণ প্র্যাকটিসের জন্যই এটা করা। আমার মনে হয় না, সমস্যা হবে। টুর্নামেন্টের জন্য আমাদের প্রস্তুতি ভালো।’
ভারত টুর্নামেন্টের হট ফেভারিট। তাদের চাওয়া পূরণ করতে হাইব্রিড মডেলে হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। বিরাট কোহলিরা নিজেদের সব ম্যাচ দুবাইয়ে খেলবেন। বিষয়টি বাড়তি সুবিধা দেবে ভারতকে। এ ছাড়া দুবাইয়ে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে রোহিত শর্মাদের। এই ম্যাচে বাংলাদেশকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হতে পারে। গতকাল ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক শান্ত বলেছেন, যে কোনো পরিস্থিতি জয় করতে প্রস্তুত তারা। এক দিনের ম্যাচ হওয়ায় আশাবাদীও তারা, ‘এই সংস্করণে আমাদের দলের ভারসাম্য আছে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা এই টুর্নামেন্টে যে কোনো দলকে হারাতে পারি। সব দলই শিরোপা জেতার সক্ষমতা রাখে। আমরা নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে, যে কোনো দিন, যে কোনো দলকে হারাতে পারব।’ বাংলাদেশকে ভালো করতে হলে তিন বিভাগে অলআউট ক্রিকেট খেলতে হয়। তাই তো মরুর বুকে জয়ের ফুল ফোটাতে সতীর্থদের অলআউট খেলার আহ্বান শান্তর, ‘আমাদের ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং– তিন বিভাগে ভালো খেলতে হবে। গত কয়েক বছর এই সংস্করণে যেভাবে খেলেছি, আমার মনে হয়, আমরা ভালো দল। যেটা বললেন কন্ডিশনে মিল আছে, সেদিক থেকে আমরা আত্মবিশ্বাসী। আশা করি, কালকের (আজ) ম্যাচে ভালো কিছু হবে।’
ভারতের পেস বিভাগে খাদ তৈরি হয়েছে জাসপ্রিত বুমরাহ চোটে পড়ায়। তারা বোলিং বিভাগ সাজিয়েছে পেস-স্পিনের মেলবন্ধনে। বাংলাদেশও বোলিং ইউনিট সাজিয়েছে পেস এবং স্পিনে। তবে বেশি গুরুত্ব পাবে পেস বিভাগ। ফোকাসে আছেন নাহিদ রানা। তাসকিন আহমেদ দারুণ ছন্দে আছেন। কন্ডিশন বুঝে খেলতে পারলে ভারতের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ জয় করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন শান্ত, ‘উইকেট যে রকম থাকবে, ওই অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করব আমরা। তবে আমার মনে হয়, ওপরের দিকে যারা ব্যাটিং করে, তাদের লম্বা ইনিংস খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। যখন ওপরের শুরুটা ভালো করতে পারব, তখনই বড় রান করা সম্ভব। অবশ্যই কাল উইকেট কন্ডিশন মেলানোর পর ওইভাবে আমরা ব্যাটিংটা করার চেষ্টা করব।’ এক দিনের ক্রিকেটে এ দুই দলের শেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। সেদিক থেকে আশার আকাশে রুপালি চাঁদ উঁকি দিতেই পারে।