চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিভাজিত হয়ে পড়েছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণের ঘোষিত কমিটিতে ‘ব্যবসায়ী, নারী হেনস্তায় অভিযুক্ত ও কিশোর গ্যাং’ সদস্যকে পদে বসানো হয়েছে। এ কমিটি বাতিলের জন্য তিন দফা আলটিমেটামও দেন তারা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নগরের লালখান বাজারে তারা সড়ক অবরোধ করেন। তাদের দাবি, ঘোষিত কমিটি থেকে ৫০ থেকে ১০০ জন পদত্যাগ করেছেন।

বিক্ষুব্ধ অংশটি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদের অনুসারী। আর আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব পদ পাওয়া সমন্বয়করা হলেন কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফীর অনুসারী। বিরোধের জেরে বিকেলে ফেসবুক লাইভে এসে কমিটি বাতিল না করলে দলবল নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ছাড়ার হুমকিও দেন সমন্বয়ক রাসেল।
 
এ প্রেক্ষাপটে ঘোষিত নতুন কমিটি নিয়ে চট্টগ্রামে রাসেল ও রাফীর অনুসারীরা কার্যত মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। আজ কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক রাফী এক ফেসবুক বার্তায় নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এদিন তাঁর অনুসারীরা নগরীর ষোলশহরে কমিটির সমর্থনে মিছিল ও শোডাউন করে। বিকেল ৪টায় তাদের পদযাত্রা কর্মসূচি রয়েছে।

গত সোমবার রাত ১২টার দিকে ছয় মাসের জন্য চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার কমিটির অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল। তিনটি কমিটিতে মোট ৭৫৪ জনের নাম রয়েছে। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকায় থাকা যোদ্ধাদের ‘অবমূল্যায়ন’ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ‘ইতিহাস বিকৃত করে কমিটি ঘোষণা’র প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন রাসেল অনুসারী সমন্বয়করা।

চট্টগ্রামের সমন্বয়ক ও ঘোষিত নগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী সিয়াম ইলাহী বলেন, কেন্দ্র থেকে ঘোষিত তিনটি কমিটিই একপক্ষীয়। ২৪-এর স্পিরিটের সঙ্গে বেইমানি করা হয়েছে। আন্দোলনে যারা ছিল তাদের কমিটিতে না রেখে ৫ আগস্ট-পরবর্তী বিভিন্ন কর্মসূচিতে এসে জ্বালাময়ী বক্তব্য যারা দিয়েছেন তাদের আহ্বায়ক, সদস্য সচিব করা হয়েছে। যারা আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের মাইনাস করে কমিটি করা হয়েছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রের কাছে চট্টগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে নারী হেনস্তা এবং কিশোর গ্যাং নিয়ে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। যারা নারী হেনস্তা এবং কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য, তাদের রেখেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি সনাতনী ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীকে স্থান দেওয়া হয়নি। নারী সম্মুখযোদ্ধাদের মধ্যে যারা সম্মুখ সারিতে ছিল, তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। তাই  ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে নতুন কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। 

আজ বিকেল ৩টার মধ্যে তিন কমিটি বাতিল না করায় লালখান বাজার ফ্লাইওভারের মুখে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রাসেল অনুসারীরা। এ সময় পুলিশ তাদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে। সন্ধ্যার পর তারা সড়ক ছেড়ে দেন। 

সড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল করিম বলেন, ‘আমরা ডাইভারশন দিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করি। পরে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বললে তারা সড়ক ছেড়ে দেন।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ সড়ক অবর ধ সমন বয়ক ত ন কম ট র অন স র কম ট র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধীদের নতুন কমিটিকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ, সড়ক অবরোধ

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিভাজিত হয়ে পড়েছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণের ঘোষিত কমিটিতে ‘ব্যবসায়ী, নারী হেনস্তায় অভিযুক্ত ও কিশোর গ্যাং’ সদস্যকে পদে বসানো হয়েছে। এ কমিটি বাতিলের জন্য তিন দফা আলটিমেটামও দেন তারা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নগরের লালখান বাজারে তারা সড়ক অবরোধ করেন। তাদের দাবি, ঘোষিত কমিটি থেকে ৫০ থেকে ১০০ জন পদত্যাগ করেছেন।

বিক্ষুব্ধ অংশটি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদের অনুসারী। আর আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব পদ পাওয়া সমন্বয়করা হলেন কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফীর অনুসারী। বিরোধের জেরে বিকেলে ফেসবুক লাইভে এসে কমিটি বাতিল না করলে দলবল নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ছাড়ার হুমকিও দেন সমন্বয়ক রাসেল।
 
এ প্রেক্ষাপটে ঘোষিত নতুন কমিটি নিয়ে চট্টগ্রামে রাসেল ও রাফীর অনুসারীরা কার্যত মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। আজ কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক রাফী এক ফেসবুক বার্তায় নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এদিন তাঁর অনুসারীরা নগরীর ষোলশহরে কমিটির সমর্থনে মিছিল ও শোডাউন করে। বিকেল ৪টায় তাদের পদযাত্রা কর্মসূচি রয়েছে।

গত সোমবার রাত ১২টার দিকে ছয় মাসের জন্য চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার কমিটির অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল। তিনটি কমিটিতে মোট ৭৫৪ জনের নাম রয়েছে। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকায় থাকা যোদ্ধাদের ‘অবমূল্যায়ন’ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ‘ইতিহাস বিকৃত করে কমিটি ঘোষণা’র প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন রাসেল অনুসারী সমন্বয়করা।

চট্টগ্রামের সমন্বয়ক ও ঘোষিত নগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী সিয়াম ইলাহী বলেন, কেন্দ্র থেকে ঘোষিত তিনটি কমিটিই একপক্ষীয়। ২৪-এর স্পিরিটের সঙ্গে বেইমানি করা হয়েছে। আন্দোলনে যারা ছিল তাদের কমিটিতে না রেখে ৫ আগস্ট-পরবর্তী বিভিন্ন কর্মসূচিতে এসে জ্বালাময়ী বক্তব্য যারা দিয়েছেন তাদের আহ্বায়ক, সদস্য সচিব করা হয়েছে। যারা আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের মাইনাস করে কমিটি করা হয়েছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রের কাছে চট্টগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে নারী হেনস্তা এবং কিশোর গ্যাং নিয়ে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। যারা নারী হেনস্তা এবং কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য, তাদের রেখেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি সনাতনী ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীকে স্থান দেওয়া হয়নি। নারী সম্মুখযোদ্ধাদের মধ্যে যারা সম্মুখ সারিতে ছিল, তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। তাই  ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে নতুন কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। 

আজ বিকেল ৩টার মধ্যে তিন কমিটি বাতিল না করায় লালখান বাজার ফ্লাইওভারের মুখে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রাসেল অনুসারীরা। এ সময় পুলিশ তাদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে। সন্ধ্যার পর তারা সড়ক ছেড়ে দেন। 

সড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল করিম বলেন, ‘আমরা ডাইভারশন দিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করি। পরে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বললে তারা সড়ক ছেড়ে দেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ