শেখ হাসিনার কোনো ক্ষমা নেই, বললেন মাওলানা মামুনুল হক
Published: 18th, February 2025 GMT
ভারতে আশ্রয় নেওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো ক্ষমা নেই বলে হুঁশিয়ার করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমা করা হলে বাংলাদেশের মানুষ আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। শুধু শেখ হাসিনা নন, তাঁর খুনি মন্ত্রিসভার প্রত্যেক সদস্যকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক এ কথা বলেন।
বিগত দিনে আওয়ামী লীগের দুঃশাসন ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নির্দেশে যে গণহত্যা হয়েছে, তা জাতিসংঘের রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে। সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে স্পষ্ট রিপোর্ট হওয়ার পর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে আর কোনো অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয়। সমাবেশ থেকে তিনি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদের নাম উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, ‘এই কক্সবাজারের কৃতী সন্তান জননন্দিত নেতা সালা উদ্দিন সাহেব ভয়ংকরভাবে গুমের শিকার হয়েছিলেন। কূটনৈতিক শিষ্টাচার বর্জন করে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র এই গুম প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করেছে। আমরা ভারতের কাছে এর জবাব চাই। একইভাবে ইলিয়াস আলীসহ যত বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছেন, সেই সব জুডিশিয়াল কিলিংয়েরও বিচার চাই।’
সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ ও মাওলানা আলী উসমান, মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ও মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজি। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কক্সবাজার জেলা সভাপতি আবছার উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় ও জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যা দিবস পালিত
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাত্রি স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় এ উপলক্ষে স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে মোমবাতি প্রজ্বলন ও শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
পরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা।
আরো পড়ুন:
ভর্তি পরীক্ষা: ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটে ৯৪ শতাংশই ফেল
গণহত্যা দিবসে ঢাবিতে ব্লাক-আউট কর্মসূচি
এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রাধ্যক্ষ, বিভাগের চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার আগে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের গণহত্যাকে উপজীব্য করে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের গণহত্যা ইতিহাসের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম গণহত্যার একটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এ গণহত্যা আরো বেদনাবিধুর। কেননা, এ গণহত্যায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অনেক সদস্যকে আমরা হারিয়েছি। অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। দেশটি স্বাধীন হয়েছে বলেই আমরা আজ এখানে দাঁড়িয়ে আছি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েছি।”
তিনি বলেন, “এ স্বাধীনতার পেছনে অকুতোভয় বীরসেনানীদের চরম আত্মত্যাগ রয়েছে। এই বীরসেনানীদের প্রতি আমাদের দায় আছে, রক্তের ঋণ আছে। রক্তের এই ঋণ আমাদের প্রতিদিন স্মরণ করতে হবে। ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার ধারাবাহিকতা আছে। এগুলো আমাদের জাতীয় জীবনের পরিচয় প্রদানকারী একেকটি মাইলফলক। বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং ন্যায্যতার প্রশ্নে প্রতিবারই আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি। এসব গৌরবময় ইতিহাস আমরা যেন ভুলে না যাই।”
আলোচনা সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জগন্নাথ হলের গণসমাধিতে মোমবাতি প্রজ্বলন ও শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত জরুরি স্থাপনা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জায়গায় এক মিনিট ‘ব্লাক-আউট’ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এছাড়া, গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআয় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয় এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী