বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. তাকরিম শেখ (২০) নামে কুরআনের হাফেজ নিহত হয়েছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নিজ বাড়িতে বিদ্যুতের কাজ করার সময় তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন।

তাকরিমের মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে ভুল তথ্য দিয়ে দাবি করছেন, আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী বাংলাদেশের ক্ষুদে হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিম মারা গেছেন। প্রকৃতপক্ষে ফকিরহাটে নিহত তাকরিম শেখ ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তাকরিম ভিন্ন ব্যক্তি।

নিহত তাকরিম শেখ ফকিরহাট উপজেলার লখপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা মোসলেম উদ্দিন শেখের ছেলে। তিনি উপজেলার ভবনা দাখিল মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন এবং খুলনার রায়ের মহল হাফিজিয়া মাদ্রাসা থেকে কুরআনের ৩০ পারা হেফজ সম্পন্ন করেন।

আরো পড়ুন:

ফেনীতে পিকআপে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা, নিহত বেড়ে ৬ 

পিকআপকে ধাক্কা দিল কাভার্ড ভ্যান, নিহত ৫ 

নিহতের পরিবার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগ ঠিক করার সময় আকস্মিকভাবে বৈদ্যুতিক শকে আক্রান্ত হন তাকরিম শেখ। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকে ভুলবশত এটিকে আন্তর্জাতিক হাফেজ তাকরিমের মৃত্যু বলে প্রচার করছেন। 

ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আলমগীর হোসেন বলেন, ‘‘তাকরিমের মৃত্যুর খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুলভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। জনসাধারণকে অনুরোধ করছি কোনো তথ্য যাচাই না করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য না ছাড়ানোর জন্য।’’

ঢাকা/শহীদুল/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত কর ম শ খ

এছাড়াও পড়ুন:

মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ

মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর পূর্ণ হলো আজ। আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যদায় এ দিবসটি পালিত হবে। রাজধাানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিভিন্ন স্থানে ভাষা শহীদদের নিয়ে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতি একুশ’র মহান ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।

রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে একুশ’র কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এছাড়াও কালো ব্যাজ ধারণ, প্রভাতফেরি সহকারে আজিমপুর কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানো হবে।

আরো পড়ুন:

চির নিদ্রায় শায়িত ভাষা সৈনিক বড়দা

হিলির শূন্যরেখায় দুই বাংলার ভাষাপ্রেমিদের মিলনমেলা

মহান ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী প্রদান করেছেন।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গত কয়েক বছর ধরে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশী বাঙালিদের জন্য এই দিবসটি হচ্ছে শোক ও বেদনার। অন্যদিকে, মায়ের ভাষা বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত।

১৯৫২ সালের এদিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে পূর্ব বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠির চোখ-রাঙ্গানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে। মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শংকিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।

একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি। এদিন দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সঠিক নিয়মে, সঠিক রং ও মাপে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।

দিবসটি পালন উপলক্ষে জাতীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আজিমপুর কবরস্থানে ফাতেহা পাঠ ও কোরানখানির আয়োজনসহ দেশের সকল মসজিদে ভাষা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া এবং উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়কদ্বীপে ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা জনক স্থানগুলোতে বাংলা ভাষার বর্ণমালা সম্বলিত ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করা, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেরিভিশন এবং অন্যান্য স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোতে একুশের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার এবং ভাষা শহীদদের সঠিক নাম উচ্চারণ, শহীদ দিবসের ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা, শহীদ মিনারের মর্যাদা সমুন্নত রাখা, সুশৃঙ্খলভাবে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, ইত্যাদি জনসচেতনতা মূলক বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যমগুলোতে প্রয়োজনীয় প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এছাড়া, বিভিন্ন জাতীয় সংবাদপত্র বিশষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।
 

ঢাকা/হাসান/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ