বইয়ে আগ্রহী নয় এমন বান্দারাই হৈ হৈ রব তুলে মেলা মুখর করে রাখছে : আফজাল হোসেন
Published: 18th, February 2025 GMT
নন্দিত অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন। বহুমূখী প্রতিভার অধিকারী এ গুনী মানুষটি লেখালেখিও করেন। প্রায় সময়ই তাঁর লেখায় উঠে আসে সবসাময়িক নানা বিষয়। এবার তার লেখায় উঠে এল একুশের বই মেলা। গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি লিখেন, বইমেলা চলছে। মেলায় বই থাকে, ধুলা থাকে, চা নাস্তা, আমোদ আহ্লাদ থাকে; আর থাকে নানারকমের মানুষ। যদি একই স্থানে অন্যকিছুর মেলা বসতো- তফাৎ কি দেখতাম? ধুলা থাকতো, চা নাস্তা, আমোদ আহ্লাদ, মানুষ- থাকতো সবই। থাকতো না শুধু বই।
মেলার আয়তন বেড়েছে। তা “নদীর এ কূল ভাঙে ও কূল গড়ে”র মতো। এখন আয়তনই উন্নতির সূচক, স্বান্তনা। মেলার ভাব চক্কর দেখে মনে হয়, লেখক, পাঠক, প্রকাশক- এক ঢিলে এই তিন পাখি মারার অতি চমৎকার বন্দোবস্ত।
জানি, একথা অনেকের কাছে আপত্তিকর মনে হবে। হতেই পারে। সব মানুষ একরকম করে ভাবেনা। মেলার সময়ে, যাদের নিয়ে মেলা- লেখক, পাঠক, প্রকাশক আর বই; কতটুকু ভাবনার কেন্দ্র থাকে! লেখক, যারা প্রকৃত পাঠক, এই মেলা তাদের আবেগের জায়গা কিন্তু বদলাতে বদলাতে মেলার যেমন রূপ দাঁড়িয়েছে- সে রূপ তাদেরকে আনন্দিত না পীড়িত করে, ভাবে কি কেউ? এক মাস জুড়ে বহু কথা হয়, মুড়ির মোয়ার মতো মচমচে, বিনোদন মাখানো কথা।
মেলা যাদের, তাদের দশা- থেকেও নেইয়ের মতো। দখল করে নিয়েছে নতুন জামানার উৎসাহীরা। তাদের স্বার্থের বিকাশে মাসব্যপী যেসব কান্ডকারখানা চলে- কোনটাই লেখক, পাঠক, প্রকাশকদের আনন্দিত, অনুপ্রাণীত কিংবা উৎসাহিত করে না। বহুজনের বিচিত্র স্বার্থের চক্করে পড়ে মেলার দশা “ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি” র মতো।
বইয়ের প্রতি আগ্রহ ও বাস্তবতা নিয়ে এ অভিনেতা লিখেন, বইয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মাতে পারে, বই পাঠে উৎসাহ হবে- এমন উদযোগ তেমন চোখে পড়ে না। আমাদের একটা অদ্ভুত রকমের বিনোদনে পূর্ণ বই মেলা আছে। স্টলে, প্যাভেলিয়নে তাকে তাকে থাকা বইয়েরা দেখতে পায়, ধুলা খেতে, চা সিঙ্গাড়া, ফুচকা খেতে হৈ হৈ করে আসছে রকমারি, অচেনা মানুষেরা। অধিকাংশেরাই আসে গমগমে ভাবের টানে। দিনশেষে বইদের মুখ থাকে থমথমে।
খুবই রমরমা বিনোদনের জায়গা হয়ে উঠেছে বই মেলা। বই মেলায় জীবনে না আসা মানুষদের বিনোদন দেবার জন্য সামাজিক মাধ্যমের বিনোদন বিক্রেতা ও সরবরাহকারীরা আসে। বইয়েরা হা করে তাকিয়ে থেকে দেখে- বইয়ে আগ্রহী নয় এমন বান্দারাই হৈ হৈ রব তুলে মেলা মুখর করে রাখছে। সে মুখরতা দেখে বইয়েরা খুশী হতে পারেনা, টের পায় অশনি সংকেত।
টাকা সব অভাব ঘোচাতে পারে না উল্লেখ এ তিনি সবশেষে লিখেন, মাস শেষে মেলা ভেঙে গেলে সংবাদ প্রকাশ, প্রচার হবে কত কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে! টাকার অংকে কি মেলার সাফল্য প্রকাশ পায়? লেখক পাঠক, প্রকাশকদের কাছে তা কি স্বান্তনা পুরস্কারের মতো নয়? মাসব্যপী ছিল সন্মানের অভাব, সে অভাব কোটি টাকার অংকে মোটেও ঘোচে না। টাকা সব অভাব ঘোচাতে পারেনা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফজ ল হ স ন বই ম ল বইয় র
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেটের আহ্বায়ক গ্রেপ্তার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেটের আহ্বায়ক আক্তার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার ভোরে সিলেট সদর উপজেলার হাউসা গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে মহানগরের শাহপরান (রহ.) থানা পুলিশ। আক্তার হোসেন সিলেটের মদন মোহন কলেজের শিক্ষার্থী।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন সমকালকে জানিয়েছেন, শনিবার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক কর্মী বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। সেই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে ২৭৩ সদস্যের সিলেট জেলার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে আহ্বায়ক করা হয় আক্তার হোসেনকে।