ভদ্রতাকে দুর্বলতা মনে করবেন না: জামায়াত আমির
Published: 18th, February 2025 GMT
একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিত এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি ছাড়া আন্দোলন বন্ধ হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টন মোড়ে সমাবেশ থেকে তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হলেও এটিএম আজহার মুক্ত হলেন না কেন? তার মুক্তি কবে হবে সুস্পষ্টভাবে জানতে চাই। আমাদের উদারতা ও ভদ্রতাকে দুর্বলতা মনে করবেন না।
অভ্যুত্থানের ছয় মাস পরও জামায়াত কেনো দলীয় নিবন্ধন ফিরে পায়নি- এ প্রশ্ন তুলে শফিকুর রহমান বলেছেন, দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ও নিবন্ধন ফিরিয়ে দিন। আমরা চরম ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি। কিন্তু সবকিছুর সীমা আছে।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে জামায়াত আমির বলেছেন, ফ্যাসীবাদের ভাষায় কথা বলবেন না। রাজনৈতিক ভাষায় কথা বলুন। ভয় দেখাবেন না; চোখ রাঙিয়ে কথা বলবেন না। কারো চোখ রাঙানীকে ভয় করি না।
২০১২ সালে ২২ আগস্ট গ্রেপ্তার হন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহার। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর সাজা বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। রায় পুনর্বিবেচনায় রিভিউ করেছেন এটিএম আজহার।
মানবতা বিরোধী অপরাধে জামায়াতের পাঁচ শীর্ষ নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। বিচার চলাচলে অথবা রায় ঘোষণার পর কারাগারে মারা গেছেন আরও পাঁচ জন। দণ্ডিত নেতাদের মধ্যে একমাত্র এটিএম আজাহার বেঁচে আছেন। জামায়াত বারবার অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ মিথ্যা মামলায় ও সাজানো সাক্ষীতে নেতাদের সাজা দিয়েছে।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর অন্যান্য মামলায় জামায়াতের সব নেতা ছাড়া পেয়েছেন। মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলা স্পর্শকাতর হওয়ায় জামায়াতও এতদিন এটিএম আজাহারের মুক্তির কথা বলেননি। মঙ্গলবার রাজধানীসহ দেশের ৭৯ সাংগঠনিক জেলা ও মহানগরে একযোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে জামায়াত।
বিকেল চারটায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও পল্টন মোড়ে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরির কারণে বিজয়নগরমুখী সড়কে ঘণ্টখানেক আগে থেকেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কর্মদিবসে সমাবেশ এবং রাস্তা বন্ধ হওয়ায় তীব্র যানজট হয়। বিকেল পাঁচটায় অফিস ছুটির পর ভোগান্তি চরমে পৌঁছায়। জামায়াত আমিরের নেতৃত্বে পল্টন থেকে প্রেস ক্লাব, মৎস্য ভবন হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত মিছিল হয়। ওই সময়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দুর্ভোগ আরও বাড়ে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াতের যৌথভাবে আয়োজিত সমাবেশ থেকে শফিকুর রহমান বলেন, ২০০৯ থেকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনে জামায়াতকে বিশেষভাবে টার্গেট করে শীর্ষ নেতাদের একে একে কারাবন্দি করা হয়। ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সকল মজলুম মুক্তি পেলেও এটিএম আজহারই ব্যতিক্রম। তিনিসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতারা আপোসের বদলে ফাঁসি বেছে নিয়েছেন। আমাদের বিজয় সবে শুরু হয়েছে কিন্তু শেষ হয়নি। ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ; শেষ হয়নি যুদ্ধ’।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল। দুই মহানগরের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও রেজাউল করিমের যৌথ পরিচালনায় এতে বক্তব্য দেন উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম অপর ধ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ৭১ এর শহীদ বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার সকাল ৬টার দিকে তিনি ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায়। প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে ভোর ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি।
প্রধান উপদেষ্টার পর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর একে একে বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক–সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।