২০০০ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দ্বিতীয় আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নিউ জিল্যান্ড। এরপর কেটে গেছে ২৪ বছর। সেই শিরোপা আর জেতা হয়নি কিউইদের। দুই যুগ পর আরও একটি সুযোগ তাদের সামনে। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সবশেষ আসর অর্থাৎ ২০১৭ সালের শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। এবার তাদের সামনে শিরোপা ধরে রাখার মিশন। এই দুই চ্যাম্পিয়নের লড়াই দিয়ে আগামীকাল বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) বিকেলে পর্দা উঠছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় করাচি স্টেডিয়ামে শুরু হবে ম্যাচটি। যা সরাসরি দেখা যাবে নাগরিক টিভি ও টি স্পোর্টসে। এছাড়াও দেখা যাবে অনলাইন প্লাটফরম টফিতে।

২০১৭ সালে সরফরাজ খানের নেতৃত্বে শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। এবার অবশ্য তাদের কাণ্ডারির দায়িত্বে আছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তার কাঁধেই শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ। তবে চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক সরফরাজ মনে করছেন তাদের এবারের দলটি শিরোপা ধরে রাখার যোগ্য, ‘‘শিরোপা ধরে রাখার দারুণ সুযোগ রয়েছে পাকিস্তানের। আমি মনে করি এবারের দলটি বেশি শক্তিশালী। ২০১৭ সালে যারা খেলেছিল সেখানকার বেশ কয়েকজন এবারও দলে আছে। তাছাড়া আছে সেরা ক্রিকেটার বাবর আজম।’’

নিউ জিল্যান্ড অবশ্য চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে দুই দফা ধাক্কা খেয়েছে। প্রথমে তারা পেসার বেন সিয়ার্সকে হারায় ইনজুরির কারণে। আর প্রতিযোগিতায় মাঠে নামার ২৪ ঘণ্টা আগে ইনজুরির কারণে হারায় অভিজ্ঞ পেসার লোকি ফার্গুসনকে। এখন কিউইদের পেস আক্রমণের মধ্যমণি হয়ে থাকবেন ম্যাট হেনরি। তার সঙ্গে থাকবেন ফার্গুসনের বদলি কাইল জেমিসন ও জ্যাকব ডাফি।

আরো পড়ুন:

বড় প্রত‌্যাশা নিয়ে নারীদের ঢাকা লিগ

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ধারাভাষ্য প্যানেলে তারকার ছড়াছড়ি, আছেন এক বাংলাদেশি

দুই দল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির লড়াইয়ে মাঠে নামার আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল। সেখানে অবশ্য মিচেল স্যান্টনারের নেতৃত্বাধীন নিউ জিল্যান্ড দারুণ ফর্ম দেখিয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছে। শিরোপা জয়ের পথে দুই-দুইবার তারা পাকিস্তানকে হারিয়েছে। গ্রুপপর্বের ম্যাচে পাঁচ উইকেটে ও ফাইনালে হারিয়েছিল ৭৮ রানে।

তবে ভিন্ন আবহে বুধবার মাঠে নামবে উভয় দল। যেখানে পেস নির্ভর পাকিস্তানের বিপক্ষে ভরা স্টেডিয়ামে লড়তে হবে ব্ল্যাক ক্যাপসদের। যেখানে শাহীন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, হারিস রউফ ও মুহাম্মদ হাসনাইনরা পরীক্ষা নিবেন কিউই ব্যাটসম্যানদের।

নিউ জিল্যান্ডের অবশ্য উপমহাদেশের মাঠে ভালো খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাদের ব্যাটসম্যান ও বোলাররাও অভ্যস্ত এখানে।

এখন দেখার বিষয় দুই চ্যাম্পিয়নের লড়াই জিতে শেষ পর্যন্ত কারা এগিয়ে যায় উদ্বোধনী ম্যাচ জিতে।

স্কোয়াড:

পাকিস্তান:
মোহাম্মদ রিজওয়ান (অধিনায়ক), বাবর আজম, ফখর জামান, কামরান গুলাম, সৌদ শাকিল, তৈয়ব তাহির, ফাহিম আশরাফ, খুশদিল শাহ, সালমান আলি আগা, উসমান খান, আবরার আহমেদ, হারিস রউফ, মোহাম্মদ হাসনাইন, নাসিম শাহ ও শাহীন শাহ আফ্রিদি।

নিউ জিল্যান্ড:
মিচেল স্যান্টনার (অধিনায়ক), মাইকেল ব্রেসওয়েল, মার্ক চ্যাপম্যান, ডেভন কনওয়ে, কাইল জেমিসন, ম্যাট হেনরি, টম ল্যাথাম, ড্যারিল মিচেল, উইল ও’রুরকে, গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্র, নাথান স্মিথ, কেন উইলিয়ামসন, উইল ইয়াং ও জ্যাকব ডাফি।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবশ য

এছাড়াও পড়ুন:

২৯ বছর অপেক্ষার অবসান

ক্রিকেট পাকিস্তানে কেবল একটি খেলা নয়; এটি তাদের উত্তরাধিকার, আবেগ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই খেলাটিকে অবলম্বন করে দিন কাটাচ্ছে, জাতি গঠনের হাতিয়ারও এই ক্রিকেট। করাচির ঘিঞ্জি চায়ের ধাবা থেকে শুরু করে লাহোরের অলিগলি, ইসলামাবাদের জৌলুস কিংবা বেলুচিস্তানের পাহাড়ঘেরা ছোট্ট গাঁয়ে ক্রিকেটই প্রধান উপজীব্য। সেই পাকিস্তানে ২৯ বছর পর আইসিসি ইভেন্ট হতে যাচ্ছে, তাই সাজসাজ রব তো পড়বেই।

রোববার রাতে লাহোরে যার কিছুটা দেখা মিলেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর দু’দিন আগে ঐতিহাসিক লাহোর ফোর্টে ‘দেওয়ান-ই-খাস’ নামক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আসরের পর্দা উন্মোচন হয়েছে। ক্রিকেটীয় নানা বিষয়ের পাশাপাশি কনসার্ট, আতশবাজি, আলোর খেলায় মোহনীয় হয়ে উঠেছিল লাহোর দুর্গ। ১৯ ফেব্রুয়ারি করাচিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।

লাহোর ফোর্টে জাঁকজমকপূর্ণ পর্দা উন্মোচন অনুষ্ঠানে আসন্ন টুর্নামেন্টের দারুণ একটি প্রিভিউ নানা বর্ণে ফুটিয়ে তোলা হয়। আলোক ছটায় দুর্গের সদর দরজায় মোহনীয়ভাবে ভেসে উঠছিল সবকিছু। সেখানে একটা বড় অংশজুড়ে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও ছিল। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সেই আসর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সর্বশেষ আয়োজন, যেখানে আবার ভারতকে দাপটের সঙ্গে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। পর্দা উন্মোচন অনুষ্ঠানে ছিলেন সরফরাজ খানের নেতৃত্বাধীন ২০১৭ সালের ট্রফিজয়ী দলের সদস্যরা। মঞ্চে তুলে ধরা হয় পাকিস্তানের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি।

পাকিস্তানে সর্বশেষ আইসিসি ইভেন্ট হয়েছিল ১৯৯৬ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ভারতের সঙ্গে ওই আসরের যৌথ আয়োজক ছিল তারা। এর পর নিরাপত্তা ইস্যু, রাজনৈতিক অস্থিরতা পাকিস্তান থেকে ক্রমেই হারিয়ে যেতে থাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা সে কফিনে যেন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছিল। এর অনেক বছর পর পাকিস্তানে ফিরে ক্রিকেট। দুই বছর আগে এশিয়া কাপ দিয়ে তারা কোনো আন্তর্জাতিক আসর আয়োজন করেছিল। আর এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে পাকিস্তানে পুরোদমে ফিরছে ক্রিকেট। 

বিশ্ব ক্রিকেটে পাকিস্তানের প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখানোর মওকাও এই আসর। যদিও ভারত এই আসর খেলতে পাকিস্তান যাচ্ছে না বলে কিছুটা অপূর্ণতা থাকছেই। তার পরও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন পাকিস্তানের জন্য বিরাট কিছু। তাই তো লাহোরের পর্দা উন্মোচন অনুষ্ঠানে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) সভাপতি মহসিন নাকভী বলেন, ‘এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে ২৯ বছর পর পাকিস্তানে আইসিসি ইভেন্ট ফিরছে। তাই এই আসর আমাদের কাছে কোনো টুর্নামেন্টের চেয়েও বড় কিছু। পাকিস্তানের আতিথেয়তা ও ক্রিকেটের ভালোবাসা দেখানোর এটি দারুণ একটি সুযোগ।’

লাহোর ফোর্টে এই ঐতিহাসিক আয়োজনের পর্দা উন্মোচন অনুষ্ঠান আয়োজনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এই শহরের সমৃদ্ধ ইতিহাস-ঐতিহ্যের পাশাপাশি ক্রিকেটের প্রতি অবদানের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন নাকভী। একই সঙ্গে পাকিস্তানি দর্শকদের মাঠে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি, ‘এখন স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ করার দায়িত্ব হলো আপনাদের।’ 

তবে এই জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে একটি বিষয় নিয়ে কিঞ্চিৎ বিতর্কও দেখা গেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নেওয়া ৮ দলের মধ্যে ৭ দলের পতাকা লাহোর স্টেডিয়ামে দেখা গেলেও ছিল না ভারতের পতাকা। কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, ভারত তো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তান যাচ্ছে না। তারা দুবাইয়ে আসরের সব ম্যাচ খেলবে। সে জন্যই হয়তো পিসিবি তাদের পতাকা রাখেনি। এ ব্যাপারে অবশ্য পিসিবির বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রোহিতের ২০ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে কোথাও নেই ‘বাংলাদেশ’
  • ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি যেন ফিনিক্স পাখি
  • ২৯ বছর অপেক্ষার অবসান