ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময় অগ্রাধিকার পাওয়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এবং ডিজিটালাইজেশন খাতের দুর্নীতি-অনিয়ম নিয়ে শ্বেতপত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে এ খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব বলেন, আইসিটি এবং ডিজিটালাইজেশন খাত নিয়ে ইতিমধ্যে অনেকগুলো দুনীতি-অনিয়মের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আগে অর্থনীতিবিদ ড.

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আর্থিক খাতের একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছেন। চারশ পাতার এই শ্বেতপত্র অনলাইনেও পাওয়া যাচ্ছে। এটি সংগ্রহে রাখার মতো। কীভাবে বিগত সরকারের আমলে লুটপাট হয়েছে, তার তথ্য-প্রমাণসহ শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে। ঠিক একই রকম আরেকটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে আইসিটি খাত নিয়ে।

এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন প্রকাশিত হবার পর দেখা গেছে শেখ হাসিনা কী করেছেন। এরপর তাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে একটি চাপ তৈরি হবে। ইতিমধ্যে ইন্ডিয়া টুডের একটি জরিপেও উঠে এসেছে ৫৫ শতাংশ ভারতীয় চান শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ ফেরত পাঠানো হোক। বর্তমান সরকার চায় তাকে স্বশরীরে দেশে এনে বিচার করতে। বাংলাদেশের মানুষও সেটা দেখতে চায়। এটা সরকারেরও অগ্রাধিকার। আওয়ামী লীগের যারা জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত, যারা গুম-খুনে জড়িত, যারা দুর্নীতিতে জড়িত তাদের বিচার হবে।
 
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, ‘বর্তমানে গণমাধ্যম যে স্বাধীনতা ভোগ করছে ১৯৭১ সালের পর এমন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কখনও ছিল না। আমরা কাউকে কখনো বলিনি এই রিপোর্টটা নামান। ওই রিপোর্টটা দিয়েন না। আমরা চাই সাংবাদিকরা সব ধরনের রিপোর্ট করুক। আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইস ট খ ত শ ব তপত র সরক র র আইস ট

এছাড়াও পড়ুন:

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী

সাবেক শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ঢাকা ও ময়মনসিংহে অবস্থানরত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী ও ইফতার ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২২ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর ও ময়মনসিংহের একটি রেস্টুরেন্টে সন্ধ্যায় পুনর্মিলনী উপলক্ষ্যে দেড় শতাধিক সাবেক শিক্ষার্থী নিয়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা পুনর্মিলনীতে পরিচিত মুখগুলোকে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলাকালীন পরিচিত সব মুখ এক ছাদের নিচে দেখতে পেয়ে উল্লাসে মেতে উঠেন তারা।

মিলনমেলার এই আয়োজনকে ক্যামেরাবন্দি করতে ভোলেননি তারা। আনাড়ি হাতেই সবাই যেন হয়ে উঠেন এক একজন আলোকচিত্রী। দীর্ঘদিন পর অগ্রজ ও অনুজদের দেখা হওয়ায় ক্যামেরায় সেই স্মৃতি ধরে রাখেন। কুশল বিনিময়, আলিঙ্গনে সবাই ফিরে যান প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে।

পুনর্মিলনীতে আসা আরব আমিরাত দূতাবাসের অর্থনৈতিক বিশ্লেষক লালন আলতাপ জানান, পরিচিত মুখগুলোকে একসাথে দেখে মনেই হয়নি ঢাকায় আছি। ফিরে গিয়েছিলাম সেই ক্যাম্পাস জীবনে। এমন মিলনমেলায় যুক্ত হতে পেরে ভীষণ আনন্দিত। এতদিনের কর্মক্লান্তি যেন মুহূর্তেই উবে গেছে।

আরেক নজরুলিয়ান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের উপ পরিদর্শক আবু সাঈদ বলেন, এ ইফতার ও পুনর্মিলনীতে যোগ দিতে পেরে অনেক আনন্দ অনুভব করছি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পুরনো বন্ধু, বড় ভাই ও ছোটদের পেয়ে মনে হচ্ছে ক্যাম্পাস জীবনে চলে এসেছি। তাই ক্যাম্পাস জীবনে ফেলে আসা স্মৃতিগুলো বেশি বেশি মনে পড়ছে।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) এর সহকারী অধ্যাপক ফেরদৌস আনাম জীবন বলেন, এত সুন্দর অনুষ্ঠানে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা  ও ভালোবাসা জানাই। এই আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার (ডেপুটি ডিরেক্টর, আইসিটি) মাহমুদ মুনিম বলেন, অনেকের সাথে দেখা হলো প্রায় অর্ধযুগ, তারও বেশি সময় পরে। যাদের সাথে কাটিয়েছি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো, তাদের অনেককে দেখে খুবই ভালো লাগছে। সবাই স্ব স্ব স্থানে প্রতিষ্ঠিত। কোনও সমস্যা কিংবা সহায়তায় আমরা একত্রিত হয়ে যেন কাজ করতে পারি সেটার চমৎকার একটি প্ল্যাটফর্ম হবে সেই প্রত্যাশা করি।

সাবেকদের নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত হওয়া পুনর্মিলনীতে যোগ দেওয়া সাবেক শিক্ষার্থী হাসিব ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনরা একত্রিত হওয়ার প্র‍য়াস থেকেই এমন উদ্যোগ, ভবিষ্যতে আরো বৃহৎ পরিসরে একসাথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে আমরা নানাধর্মী আয়োজন করবো।

আবদুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ মিশকাত আল হারুন বলেন, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা এবার ভিন্নমাত্রা পেয়েছে প্রথমবারের মতো ঢাকার বাইরে ময়মনসিংহে উদযাপন করার মাধ্যমে। আশা করছি এর ব্যপ্তি বেড়েই চলবে।

ময়মনসিংহে অবস্থানরত প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের শিক্ষক বাঁধন আরা মিল্কি বলেন, এবার দুটি ভিন্ন স্থানে নজরুলিয়ানদের এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে করে নজরুলিয়ানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ আরো বেড়ে গেছে।

অনুষ্ঠানে আগত সাবেকদের ফটোসেশনের মাধ্যমে সমাপ্ত হয় সাবেকদের এ পুনর্মিলনী ও ইফতারপর্ব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ