মোটাদাগে আমাদের রোগগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়—সংক্রামক ও অসংক্রামক। জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে যেসব রোগ হয় এবং একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে পড়ে, সেসবকে বলে সংক্রামক রোগ। জীবাণু ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে রোগ হলে এবং যেসব রোগ একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায় না, সেসবকে বলে অসংক্রামক রোগ। এসব রোগের জন্য জেনেটিক ও পরিবেশগত কিছু কারণ দায়ী থাকে। যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার ইত্যাদি। আগে আমাদের দেশে সংক্রামক রোগের হার অনেক বেশি ছিল। টিকাদান কর্মসূচির কারণে বর্তমানে সংক্রামক রোগ অনেক কমে গেছে। কিন্তু অন্যদিকে অসংক্রামক রোগের হার বেড়ে গেছে। এসব অসংক্রামক রোগ বর্তমান বিশ্বে মানুষের মৃত্যু ও অক্ষমতার প্রধান কারণ (বিশ্বে ৭০ শতাংশ ও বাংলাদেশে ৬৭ শতাংশ) হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ২০১৯ সালে বিশ্বে অসংক্রামক রোগের কারণে ৪২ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

২০২২ সালে দ্য ল্যানসেট ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৪০টি দেশে ১১-১৭ বছর বয়সী কিশোরদের মধ্যে অসংক্রামক রোগ বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করা হয়। কিশোর বয়সে অসংক্রামক রোগ বৃদ্ধির জন্য অপর্যাপ্ত ফল ও শাকসবজি গ্রহণ, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, এনার্জি ড্রিংকস, ফাস্ট ফুড ও কার্বোনেটেড কোমল পানীয় গ্রহণ, ধূমপান, মদ্যপান, অতিরিক্ত মেদ, স্থূলতা ইত্যাদি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। কিশোর বয়সে এসব রিস্ক ফ্যাক্টর গত ২০০৩-১৭ সালের মধ্যে প্রায় তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় ৩৭ শতাংশ দেশেই কিশোরদের অর্ধেকের মধ্যে ৪টি বা তার বেশি অসংক্রামক রোগ সৃষ্টিকারী এসব রিস্ক ফ্যাক্টর বিদ্যমান এবং এই হার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি।

কিশোর বয়সে অসংক্রামক রোগ বৃদ্ধির প্রধান ৩টি কারণ, যা প্রায় ৪০ শতাংশের বেশি কিশোরের মধ্যে চিহ্নিত করা গেছে, তা হচ্ছে অপর্যাপ্ত ফল গ্রহণ, অপর্যাপ্ত শাকসবজি গ্রহণ এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব। কিশোর বয়সের এসব অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও আচরণ অনেক পরিণত বয়সের রোগীর অসংক্রামক রোগের কারণ হিসেবেও চিহ্নিত।

আরও পড়ুনকিশোর ও তরুণেরা রাত জাগে কেন১৬ আগস্ট ২০২৪

২০১৯ সালে বিশ্বে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে প্রায় ৮ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু হয়েছে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির রোগ, ডায়াবেটিস, ক্যানসারসহ অন্যান্য জটিলতা তৈরি হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসজনিত মৃত্যুর হার পুরুষের (৫০ দশমিক ৯৭ শতাংশ) তুলনায় নারীর (৫৩ দশমিক ৭২ শতাংশ) মধ্যে বেশি দেখা গেছে।

আধুনিক জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে কিশোর স্থূলতা একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যায় পরিণত হচ্ছে। আগে মানুষ বাড়িতেই ফল, পিঠা, শস্যদানাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে নাশতা সারত। কিন্তু এখন সেসবের বদলে রেস্তোরাঁ বা বাইরে চিকেন ফ্রাই, গ্রিল, স্যুপ, উচ্চ চিনিযুক্ত কোমল পানীয়সহ ক্ষতিকর প্রক্রিয়াজাত খাবার খাচ্ছে। এসব খাবারে অতিরিক্ত লবণ, চর্বি ও চিনির ব্যবহার হয়, যার ফলে হৃদ্‌রোগসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক রোগ তৈরি হচ্ছে।

কিশোর বয়সে সারাদিন অলস না থেকে খেলাধুলা ও শারীরিক কসরত করা উচিত.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক শ র বয়স গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুমন্ত ছেলেকে বাঁশ কাটতে ডাকেন বাবা, ক্ষিপ্ত হয়ে কুপিয়ে হত্যা

পাবনার সাঁথিয়ায় বাবা আব্দুল মালেককে (৬০) কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে তার ছেলে মানিক হোসেনের (২৮) বিরুদ্ধে। আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মালেক উপজেলার কশিনাথপুর ইউনিয়নের পাইকরহাটি ভাটিপাড়া গ্রামের প্রয়াত তয়জাল শেখের ওরফে তয়জাল গাড়িয়ালের ছেলে। তিনি পেশায় একজন বাঁশ ব্যবসায়ী এবং কৃষক।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান।

পারিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাবা ও ছেলের মধ্যে তেমন বড় কোনো ঝামেলা ছিল না। তবে ছেলে সংসারের কাজ কাম কম করতে চাইতো। আজ সকালে বাঁশ কাটার জন্য নিহত আব্দুল মালেক উঠানে কুড়াল ধার দিচ্ছিলেন এবং ছেলে মানিক হোসেনকে কাজে যাওয়ার জন্য ঘুম থেকে ডাকছিলেন। এতে ছেলে ঘুম থেকে উঠে ক্ষিপ্ত হয়ে এসে বাবার সঙ্গে তর্কে জড়ায়। তর্কের একপর্যায়ে বাবার ধার দেওয়া কুড়াল দিয়েই বাবাকে বুকে পিঠে ও হাতে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে। 

স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ঘাতক মানিককে আটকে রাখলেও পরে তিনি কৌশলে পালিয়ে যান।

নিহতের স্ত্রী ফুলজান খাতুন বলেন, বাবা ছেলেকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে কাজে যাওয়ার কথা বলতেই ক্ষিপ্ত হয়। পরে বাঁশ কাটার কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে আমার স্বামীকে খুন করে।

স্থানীয় বাসিন্দা আজা হোসেন জানান, মানিক একজন মাদকাসক্ত ও নেশাখোর। রাতে নেশা করে এসে ঘুমালে তার বাবা কাজে যাওয়ার জন্য ডাকতেই কুড়াল দিয়ে হাতে ও পিঠে কোপালে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ছেলে পলাতক রয়েছে এবং তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার প্রক্রিয়া চলছিল বলে জানা গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৮২ বছর বয়সেও লড়াকু রানী হামিদ
  • নাফ নদীতে ৩৩ বিজিবি সদস্য নিখোঁজের বিষয়টি গুজবনির্ভর অপপ্রচার: বিজিবি
  • সাবাশ বাংলাদেশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
  • থিয়াগো আলমাদা: রাস্তা থেকে উঠে এসে যেভাবে মেসির উত্তরসূরি
  • আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে সময় বেঁধে দিলেন জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা
  • ‘শোনেন শোনেন সভাজন ভাই, আবার হবে নির্বাচন’
  • বাদীর ভুলে শিশু ধর্ষণ মামলায় নির্দোষ ব্যক্তির সাজা
  • আরাকান আর্মির গুলিতে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে দুজন গুলিবিদ্ধ
  • সিইও হিসেবে ইলন মাস্কের পদত্যাগ চান টেসলার দীর্ঘদিনের বিনিয়োগকারী রস গার্বার
  • ঘুমন্ত ছেলেকে বাঁশ কাটতে ডাকেন বাবা, ক্ষিপ্ত হয়ে কুপিয়ে হত্যা