চলমান ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসাথে ছাড় করার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। 

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি আইএমএফ কর্তৃক চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ে বিলম্বের বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় এ বক্তব্যে জানিয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালে আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য ঋণ মঞ্জুর করে, যার তিন কিস্তি বাবদ ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য অর্থ এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় আরো জানায়, বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত মজবুত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা সাপেক্ষে আইএমএফ ঋণের কিস্তির টাকা ছাড় করে থাকে। বাজেট সাপোর্ট প্রোগ্রামের আওতায় যে সকল সংস্কার কার্যক্রম নেওয়া হয়, তার মধ্যে কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়নে নির্ধারিত সময়ের চাইতে বেশি সময় প্রয়োজন হতে পারে।

সে কারণে বাংলাদেশ সরকার এবং আইএমএফ যৌথভাবে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত দুটি কিস্তি একসাথে ছাড়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে আইএমএফ চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসাথে ছাড় করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে—বলছে মন্ত্রণালয়।

আগামী এপ্রিল মাসে নির্ধারিত রিভিউ মিশন এবং জুনে আইএমএফের বোর্ড সভায় অনুমোদনের পর এ কিস্তি দুটির অর্থ একসাথে আগামী জুনে ছাড় করা হবে।

ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ড় কর একস থ

এছাড়াও পড়ুন:

আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে চায় সরকার

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচি থেকে বের হয়ে গেলে অন্য উন্নয়ন সহযোগীরাও নানা প্রশ্ন তুলতে পারে। তাই আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে চায় সরকার। আগামী জুনে আইএমএফ দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড় করবে বলে আশা করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। 

আইএমএফের ঋণ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ঋণ না নেওয়াটা খুব ভালো। তবে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (ডিজিপি) ও ঋণের অনুপাত অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। তা ছাড়া সরকারি ব্যয়ের চাহিদা মেটানোর মতো রাজস্ব না থাকার কারণেই ঋণ নিতে হয়। বাজেট সহায়তা হিসেবে আইএমএফ ঋণ দিচ্ছে। প্রকল্পে অনেক ঋণ এলেও তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো যায় না। তারপরও আমরা একবারে মুখিয়ে আছি এমনটিও নয়। এ জন্যই চতুর্থ কিস্তি পেছানো হয়েছে। তারা নানা শর্ত দিচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষে এগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। 
তিনি আরও বলেন, আইএমএফ থেকে যদি ঋণ না নেওয়া হয়, তাহলে অন্য দাতা সংস্থাও আস্থা পায় না। তখন বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকাসহ অন্যান্য সংস্থাও অর্থায়নের ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলতে পারে যে, কেন আইএমএফ সরে গেল? তখন একটি বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। তা ছাড়া এ ঋণ না নিলে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার, সেটিও এ মুহূর্তে বাড়ানো সম্ভব নয়। আইএমএফ ঋণের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের কিছু অগ্রাধিকার রয়েছে। এগুলোর দু’একটি পূরণ সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। আগীম বাজেট প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কর্মসংস্থান বাড়ানো বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য কৃষি ও বিদ্যুতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা হবে। পাশাপাশি বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। এমন প্রকল্প নেওয়া হবে, যাতে স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। মেগা প্রজেক্ট নেওয়া হবে না। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও বেসরকারি খাতে সম্প্রসারণকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। বাজেটে কিছু মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বিষয় থাকবে। 

আইএমএফের অন্যতম শর্ত হচ্ছে মুদ্রা বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া। এটি কি জুনের আগেই বাস্তবায়ন হবে– এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ মূল্যস্ফীতি আরও কতদিন থাকে, তা দেখতে হবে। হঠাৎ করে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ায় পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো হয়ে গেলে বিপদ বাড়বে। 
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ভ্যাট কমানো দরকার। ভ্যাট একক হারে নিয়ে আসতে পারলে তখন চিন্তাভাবনা করা যাবে। ভ্যাটের একক হার বাস্তবায়ন হলে তখন সুনির্দিষ্ট কিছু খাতে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে। তিনি বলেন, এবার বাজেট ব্যবসাবান্ধব করার চেষ্টা করা হচ্ছে। 
অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ব্যাংক হিসাবে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমার ওপর আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার, করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ করাসহ ২৭টি লিখিত প্রস্তাব তুলে ধরেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা। অনুষ্ঠানে ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ সংগঠনের সদস্যরা বক্তব্য দেন। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে চায় সরকার
  • বড় নয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রকল্প নেওয়া হবে: অর্থ উপদেষ্টা