বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় গেলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। তিস্তা খনন ও পানি সংরক্ষণের জন্য জলাধার নির্মাণ করা হবে। প্রয়োজনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের খাল খনন কর্মসূচি পুনরায় শুরু করা হবে।’’ 

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টায় রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু পয়েন্টসহ নদীবেষ্টিত পাঁচ জেলার ১১ পয়েন্টে চলমান ৪৮ ঘণ্টার তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষ আর কাঁটাতারের বেড়ায় ফেলানীর মতো লাশ দেখতে চায় না। সীমান্তে রক্তাক্ত দেহও আর দেখতে চায় না।’’ 

আরো পড়ুন:

বিএনপিতে সুযোগ সন্ধানীদের স্থান নেই: দুলু

উপদেষ্টাদের উদ্দেশে ফখরুল 
‘ক্ষমতার খায়েশ থাকলে পদত্যাগ করে দল গঠন করুন’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘সব আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে ভারত গজলডোবা বাঁধ নির্মাণ করে আমাদের দেশের পানি নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের এই অ-প্রতিবেশী আচরণের কারণে উত্তরাঞ্চলের লাখো মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। পানির অভাবে তিস্তা অঞ্চল ধূ ধূ বালুচরে পরিণত হয়েছে।’’

তারেক রহমান বলেন, ‘‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছে। অথচ ভারত তিস্তার দুর্দশাগ্রস্ত মানুষসহ এদেশের জনগণকে মনে না রেখে পলাতক স্বৈরাচারকে মনে রেখেছে। গত ১৬ বছর ধরে স্বৈরাচারী সরকার একতরফা চুক্তির মাধ্যমে ভারতকে সুবিধা দিয়ে এসেছে। তাদের অপ্রতিবেশী আচরণের কারণে আজ তিস্তা পাড়ে অধিকার আদায়ের গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হচ্ছে।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘এবার ভারত যদি তিস্তার ন্যায্য হিস্যা না দেয়, তাহলে জনগণকে বাঁচাতে, কৃষিকে বাঁচাতে, নদীকে রক্ষা করতে এবং নাব্যতা ধরে রাখতে সমস্যার সমাধানের পথ আমাদেরই খুঁজে নিতে হবে। অধিকার আদায়ে আন্তর্জাতিকভাবে সম্ভাব্য সব কৌশল কাজে লাগাতে হবে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের ওপর কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করতে হবে।’’

অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘‘জাতীয় নির্বাচনের কথা শুনলে অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ কেউ বিচলিত হয়ে পড়েন। একেক উপদেষ্টা একেক রকম বক্তব্য দেন। দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করতে একটি নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন রয়েছে।’’ 

সবশেষে তারেক রহমান আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে বিজয়ী করতে উপস্থিত সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘‘আজ এখান থেকে প্রতিজ্ঞা নিতে হবে, ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই; জাগো বাহে, দেশ বাঁচাই।’ এই হোক আমাদের শপথ।’’ 

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর নেতৃত্বে রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু ছাড়াও তিস্তা-সংলগ্ন পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে একযোগে এই আন্দোলন চলছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। 

তিস্তা নদী পাড়ে লাখো মানুষ সামিয়ানা টাঙিয়ে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করছে। আজ রাত ১২টায় শেষ হবে ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার এ কর্মসূচি।
 

ঢাকা/আমিরুল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ব এনপ র সরক র ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

প্রকাশিত প্রতিবদেন নিয়ে ঢাকা জেলা পুলিশের ব্যাখা

'পুলিশকে বাঁচাতে প্রশ্নবিদ্ধ প্রতিবেদন, শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ' শিরোনামে বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের একটি অংশের ব্যাখা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা জেলা পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. খায়রুল আলম স্বাক্ষরিত পত্রে গতকাল বলা হয়-বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও হত্যার ঘটনার মামলাসমূহ পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সচেষ্ট। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান। তদন্তে যাদেরই সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে আমরা বদ্ধপরিকর।

‘পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বাঁচাতে এমন বিতর্কিত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে’–এই উদ্ধৃতির প্রতিবাদ জানানো হয়। সংশ্লিষ্ট ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এরই মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্যের সম্পৃক্ততার তথ্য থাকায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছেন। অন্যদের বিরুদ্ধে তদন্তের কাজ চলমান।

বাংলাদেশ পুলিশ জনাকাঙ্খা পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পুলিশ সদস্যরা নিজেরা নির্ঘুম থেকে জনগণের শান্তির ঘুম নিশ্চিত করে, ঈদ-পূজা-পার্বনের আনন্দ উপভোগ করা থেকে পরিবার-পরিজনকে বঞ্চিত করে জনগণের আনন্দ উপভোগ নিশ্চিত করে। করোনাকালে মানবিক বিপর্যয়ের সময় পুলিশ নিজের জীবন বিপন্ন করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এরকম অজস্র উদাহরণ রয়েছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অগ্রগতির বিষয়ে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ হেলাল উদ্দিন কোনও কথা বলেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ