জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবি জানিয়ে দলটির আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াত সাড়ে ১৫ বছর কোনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করেনি। জীবন দিয়েছে, কিন্তু আপস করেনি। তাই জামায়াতের আর ধৈর্যের পরীক্ষা না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মেহেরবানি করে চোখ রাঙাবেন না।’

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে আয়োজিত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচিতে এ কথা বলেন শফিকুর রহমান। এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করে জামায়াত।

পূর্বনির্ধারিত এই সমাবেশ বিকেল চারটার শুরু হওয়ার কথা ছিল। এর আগে বেলা সাড়ে তিনটার দিতে তিনটি পিকআপ ভ্যান একত্র করে সেখানে মঞ্চ তৈরি করা হয়। সোয়া তিনটা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী এই সমাবেশে যোগ দেন।

এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে রাজপথে নামতে হবে, এমনটা কল্পনাও করেননি উল্লেখ করেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, আজহারুল ইসলামের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সমাবেশ বিক্ষোভ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এ নিয়ে সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

কোন জিনিস এখনো আজহারুল ইসলামকে আটকে রাখতে বাধ্য করেছে, সে প্রশ্ন তুলে শফিকুর রহমান বলেন, ৫ আগস্টের পর একে একে সবাইকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ মজলুমকেও (আজহারুল ইসলাম) মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

জামায়াতের শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমরা ভদ্র, বোকা নই। ভদ্রতাকে কেউ যেন দুর্বলতা মনে না করেন।’ তিনি বলেন, জামায়াত সাড়ে ১৫ বছর কোনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করেনি। জীবন দিয়েছে, কিন্তু আপস করেনি। জামায়াত নেতাদের ফাঁসির কাষ্ঠে নেওয়ার আগেও নানা প্রস্তাব এসেছিল। ওই সব প্রস্তাব পায়ের নিচে ফেলে দিয়েছেন। তাই জামায়াতের আর ধৈর্যের পরীক্ষা না নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

জামায়াতের নিবন্ধন কেন আটকে রাখা হয়েছে—এ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন জালিমরা আটকে দিয়েছিল। সব বৈষম্যের কবর রচনা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। কারও নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘মেহেরবানি করে চোখ রাঙাবেন না। ফ্যাসিবাদের ভাষায় কথা বলবেন না।’

বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বিপ্লবের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তাঁর মামলাগুলো থেকে মুক্তি নিয়েছেন। আইন উপদেষ্টা তাঁর মামলা থেকে মুক্তি নিয়েছেন। অথচ দীর্ঘ ১৪ বছর যাবৎ অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসির দড়ি গলায় নিয়ে যিনি মানবেতর জীবন যাপন করছেন, সেই এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। তিনি জানতে চান, এর পেছনে কোন ষড়যন্ত্র রয়েছে।

নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘ধৈর্য ধরেছি ৬ মাস ১০ দিন। আশা করেছিলাম অন্তর্বর্তী সরকার নতুন বাংলাদেশে বৈষম্যের শিকার এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, এখন পর্যন্ত মুক্তি দেননি। এই সমাবেশ থেকে আজহারুল ইসলামের মুক্তি চাই। জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পেতে চাই। জামায়াতের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাই।’

আজহারুল ইসলামের মুক্তি ছিল ন্যায্য অধিকার—এমনটা উল্লেখ করে জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ১৯০ দিন পর তাঁরা রাজপথে নেমেছেন। রাস্তায় এসে দাবি আদায় করতে হবে তারা এমনটা ভাবেননি।

জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি মুহাম্মদ রেজাউল করিম সমাবেশ সঞ্চালনা করেন। সমাবেশ থেকে বিক্ষোভ মিছিল পুরানা পল্টন থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাব, মৎস্য ভবন মোড় হয়ে শাহবাগ মোড়ে এসে শেষ হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আজহ র ল ইসল ম র ম ক ত র আম র

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ৭১ এর শহীদ বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার সকাল ৬টার দিকে তিনি ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধান উপদেষ্টা।

এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায়। প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

এর আগে ভোর ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি।

প্রধান উপদেষ্টার পর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এরপর একে একে বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক–সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ