কুয়েটে ছাত্রদল-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক, আটক ৫
Published: 18th, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে আহতদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।
বর্তমানে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে এবং ছাত্রদল ও বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস সংলগ্ন সড়কে অবস্থান নিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে আটককৃতদের নাম জানা যায়নি।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার পর থেকে দিনব্যাপী দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত কয়েকদিন ধরে কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মেসেঞ্জার গ্রুপে ছাত্রদলের কমিটি গঠন নিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া চলছিল। গতকাল সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) তারা ক্যাম্পাসে লিফলেট বিতরণ করেন। আজ মঙ্গলবার সকালে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মিছিল বের করেন। পরে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করলে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়।
বেলা ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মিছিল বের করেন। এ সময় তারা ‘ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটায়, রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস চাই’, ‘এই ক্যাম্পাসে হবে না, ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হলগুলো প্রদক্ষিণ করেন।
পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে গেলে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেন। এ সময় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয় এবং তা কুয়েটের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে।
দুপুর ২টার দিকে কুয়েট পকেটগেটের বাইরে বিএনপি সমর্থিত বহিরাগতরা একজন ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ক্যাম্পাসের ভিতর ফেলে দেয়। এরপর থেকে সাধারণ ছাত্রদের ভেতর চরম উত্তেজনা দেখা দেয় এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা এক হয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়।
পরে রেলিগেট, তেলিগাতিসহ আশপাশ এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের সঙ্গে যোগ দিলে দফায় দফায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। এতে ৫০ জনের বেশি আহত হয়। সংঘর্ষে আহতদের কুয়েটের অ্যাম্বুলেন্সে করে একের পর এক হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এ পর্যন্ত চারটি অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কুয়েটে মেডিকেল সেন্টারসহ আশপাশের বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে।
বর্তমানে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়েছে। ছাত্রদল ও বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস সংলগ্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে আছে। পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে সেনা ও নৌবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা।
কুয়েট শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, “ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি নিয়ে উপাচার্য দপ্তরের কাছে গেলে ছাত্রদলের ছেলেরা আমাদের হুমকি দেয়। তারা সিনিয়রদের লাঞ্চিত করে। আমরা উপাচার্যের কাছে এর বিচার চেয়ে বের হয়ে আসার পর বিনা উস্কানিতে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা তাদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়েছি। পরে আশপাশের এলাকার বিএনপির লোকজন সঙ্গে নিয়ে তারা আবার হামলা চালায়। এতে অর্ধশতাধিক ছাত্র আহত হয়েছে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা জেলা কমিটির মুখপাত্র মিরাজুল ইসলাম ইমন বলেন, “বিনা উস্কানিতে ছাত্রদলের কর্মীরা ছাত্রদের রক্ত ঝড়িয়েছে। তারা কুয়েটের সদস্য সচিব জাহিদকে রামদা দিয়ে ১০টা কোপ দিয়েছে। জেলার আহ্বায়ক তাসনিম ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব রাতুলের পা ইট দিয়ে থেতলে দিয়েছে। এতে ৫৫ জন ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে।”
খুলনা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ইশতিয়াক আহমেদ ইশতি দাবি করেন, “ছাত্রশিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাতে গেলে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা তাদের বাঁধা দেয়। পরে তাদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসাইন মিলন বলেন, “কুয়েটের ঘটনার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোন সম্পর্ক নেই। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদল ও বিএনপি নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে অনেককে আহত করেছে বলে শুনেছি। আমরা হামলার নিন্দা ও জড়িতদের বিচার চাই।”
বিষয়টি নিশ্চিত করে করে খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
এদিকে, ছাত্রদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর শিববাড়ি মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা জেলা কমিটির মুখপাত্র মিরাজুল ইসলাম ইমন।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র র জন ত ন ত কর ম র ছ ত রদল র ছ ত রদল ও দ র ওপর স ঘর ষ সদস য ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
আইপিএলে মাঠেই কেন ব্যাট পরীক্ষা করা হচ্ছে
টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যাট ও বলের লড়াইয়ে ভারসাম্য নেই। এবার আইপিএল শুরুর আগে কথাটা বলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাদা। এর আগে–পরে বলেছেন আরও অনেকেই। কারণটা প্রায় সবার জানা। টি–টোয়েন্টিতে এখন দলগুলো ২০০ পেরিয়ে ৩০০ রান তোলার চেষ্টায় মত্ত। রাবাদার মতে, এভাবে চলতে থাকলে খেলাটির নাম ‘ক্রিকেট’ পাল্টে ‘ব্যাটিং’ রাখা উচিত।
রাবাদার এ কথা নিশ্চয়ই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কানেও পৌঁছেছে। তাই গত রোববার জয়পুর ও দিল্লিতে আইপিএলের দুটি ম্যাচে দেখা গেছে অন্য রকম এক দৃশ্য। দুটি ম্যাচেই মাঠের আম্পায়াররা ক্রিজে আসা ব্যাটসম্যানদের ব্যাটের আকার পরীক্ষা করেন। আইপিএলের ইতিহাসে এমন কিছু এর আগে দেখা যায়নি। ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, আইপিএলে এবারই প্রথমবারের মতো মাঠের আম্পায়ারদের ম্যাচের মধ্যেই ব্যাটের আকার পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে বিসিসিআই।
আরও পড়ুনচূড়ান্ত হলো ভারতের বাংলাদেশ সফরের সূচি৫ ঘণ্টা আগেব্যাট নিয়মসিদ্ধ আকার অনুযায়ী বানানো হয়েছে কি না, সেটা একটি মাপার বস্তুর মাধ্যমে মাঠেই পরীক্ষা করেন আম্পায়াররা। অতীতে এ পরীক্ষাগুলো ড্রেসিংরুমে করা হতো। কিন্তু রোববার খেলার সময় মাঠেই তা দেখা গেছে। ব্যাটসম্যানদের ব্যাট যদি নিয়ম অনুযায়ী বানানো হয়, তাহলে এ যন্ত্রের সঙ্গে খাপে খাপে মিলে যাবে কিংবা সহজেই এই মাপের মধ্যে প্রবেশ করবে। আকার বড় হলে প্লাস্টিকের এই ত্রিভুজাকৃতির গেজের মধ্যে ব্যাটটি প্রবেশ করবে না কিংবা বাধাপ্রাপ্ত হবে। গেজের গায়ে ব্যাটের নিয়মসিদ্ধ আকারও লেখা আছে—পুরুত্ব ২.৬৮ ইঞ্চি, চওড়া ৪.৩৩ ইঞ্চি, কানা ১.৬১ ইঞ্চি এবং ব্যাটের উল্টো দিকে থাকা বাঁকানো অংশ হবে ০.২০ ইঞ্চির মধ্যে।
ব্যাটের আকার মাপার গেজ