‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ হিসেবে উনসত্তরের গণ–অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী সৈয়দ মুহম্মদ শামসুজ্জোহার প্রয়াণ দিবসের চেয়ে উপযুক্ত কোনো তারিখ আর হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। তিনি বলেন, উনসত্তরে শহীদ জোহা যেমন প্রাসঙ্গিক ছিলেন চব্বিশের অভ্যুত্থানেও তিনি একইভাবে প্রাসঙ্গিক ছিলেন।

আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে শামসুজ্জোহার ৫৬তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘জোহা স্মারক বক্তৃতা-২০২৫’ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলির নিশানা হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর সৈয়দ মুহম্মদ শামসুজ্জোহা। পরে বেয়নেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে তাঁকে হত্যা করা হয়। তাঁর এই আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে উনসত্তরের গণ-আন্দোলনের দাবানল সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৮ ফেব্রুয়ারি শামসুজ্জোহার মৃত্যুর পর থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিনটিকে ‘শিক্ষক দিবস’ হিসেবে পালন করে। দিবসটি জাতীয়ভাবে পালনের দাবি জানিয়ে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা।

‘শিক্ষক দিবস’ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল আটটায় ড.

শামসুজ্জোহার সমাধি ও জোহা স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এবার প্রশাসনের সঙ্গে পুষ্পস্তবক অর্পণে অংশ নেন শামসুজ্জোহার কন্যা সাবিনা জোহা খান।

সাবিনা জোহা খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটা সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া হচ্ছে তাঁর বাবাকে নিয়ে গর্ব। এই গর্বটা শুধু আমার একার না, এটা সারা বাংলাদেশের। আমার বাবাকে আমি বাবা হিসেবেই চিনি। আপনারা যেভাবে চেনেন, যেভাবে ইতিহাসের পাতায় পড়েন, উনি তো আমার কাছে ইতিহাসের পাতা নয়। তবে আমার কাছে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, পাঁচ যুগ পরেও শিক্ষার্থীরা যেভাবে বাবাকে আদর্শ হিসেবে ধারণ করেছেন, একজন মেয়ে হিসেবে এর চেয়ে বেশি চাওয়া–পাওয়া আর নেই।’

এবারের অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন লেখক অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। আজ মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনার ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা থাকবে: ড

একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এনডিসি। 

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ডিএমপির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ট্রাফিক পরিকল্পনা নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান ডিএমপি কমিশনার। এর আগে তিনি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় ডিএমপির বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আজ রাত ১২ টা ০১ মিনিট থেকে উদযাপিত হতে যাচ্ছে। প্রথমে ভিভিআইপি, ভিআইপি এবং তারপরে জনসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। আনুমানিক রাত ১২টা ৪০ মিনিটে জনসাধারণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশী গেট উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

আরো পড়ুন:

হারুন ও তার ভাইয়ের ১৩০ বিঘা জমি জব্দ, ২১ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ 

পূর্বাচলে অটোরিকশায় রেডিমিক্স ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২

তিনি সবাইকে শৃঙ্খলা মেনে শ্রদ্ধা নিবেদন করার অনুরোধ জানান এবং নিরাপত্তার জন্য যাত্রীদের নিজেদের মূল্যবান জিনিসপত্রের প্রতি খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সাধারণ মানুষের সমাগম অনেক বেশি হয়, ভিড়ের মধ্যে দুর্ঘটনা এড়াতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এবার তিন/চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আজ বিকেল ৫টা থেকে আগামীকাল দুপুর ৩টা পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ও ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন উপলক্ষে আমরা কোনো নিরাপত্তার আশঙ্কা দেখছি না। ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ে স্থাপন ও দেহ তল্লাশি। কেউ যেন দাহ্য পদার্থ, বিস্ফোরক দ্রব্য বা এই জাতীয় কোনো কিছু নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকবে।

শহীদ দিবস উপলক্ষে ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার জানান, ব্যাপক লোক সমাগম হবে বিধায় শহীদ মিনার কেন্দ্রিক রাস্তা আটকে দেওয়া হবে। সাতটি পয়েন্টে রোড ব্লকার স্থাপন করা হবে: শাহবাগ ক্রসিং, নীলক্ষেত ক্রসিং, শহিদুল্লাহ হল ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, চাঁনখারপুল ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং ও বকশীবাজার ক্রসিং।

তিনি আরো জানান, পায়ে চলাচলের রাস্তা হিসেবে পলাশী ক্রসিং থেকে শহীদ মিনারে প্রবেশ করা যাবে এবং শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রোমানা ক্রসিং-দোয়েল চত্বর হয়ে বের হতে হবে। অন্যান্য পথ বন্ধ থাকবে।

ট্রাফিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট রাস্তা আজ রাত ৮টা থেকে বন্ধ করা হবে এবং রাত ৯টায় সব রাস্তায় বন্ধ করে দেওয়া হবে। জনসাধারণকে রাত ১২টা ৪০ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য আসার অনুরোধ জানান তিনি। 

প্রেস বিফিংয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/মাকসুদ/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রভাতফেরীর মিছিল যাবে, ছড়াও ফুলের বন্যা
  • ৫০ বছর পূর্তিতে সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে হরিহরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সভা 
  • শহীদ দিবস উপলক্ষে স্কলাসটিকায় অনুষ্ঠিত হলো বইমেলা
  • তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
  • একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে যেতে পুলিশের নির্দেশনা
  • কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঘিরে তিন-চার স্তরের নিরাপত্তা: ডিএমপি কমিশনার
  • শহীদ মিনার ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা থাকবে: ডিএমপি কমিশনার
  • একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনার ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা থাকবে: ড
  • শহীদ জোহার আত্মত্যাগের স্মরণে