‘শহীদ জোহা উনসত্তরে যেমন প্রাসঙ্গিক ছিলেন, চব্বিশেও তিনি একইভাবে প্রাসঙ্গিক’
Published: 18th, February 2025 GMT
‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ হিসেবে উনসত্তরের গণ–অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী সৈয়দ মুহম্মদ শামসুজ্জোহার প্রয়াণ দিবসের চেয়ে উপযুক্ত কোনো তারিখ আর হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। তিনি বলেন, উনসত্তরে শহীদ জোহা যেমন প্রাসঙ্গিক ছিলেন চব্বিশের অভ্যুত্থানেও তিনি একইভাবে প্রাসঙ্গিক ছিলেন।
আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে শামসুজ্জোহার ৫৬তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘জোহা স্মারক বক্তৃতা-২০২৫’ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলির নিশানা হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর সৈয়দ মুহম্মদ শামসুজ্জোহা। পরে বেয়নেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে তাঁকে হত্যা করা হয়। তাঁর এই আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে উনসত্তরের গণ-আন্দোলনের দাবানল সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৮ ফেব্রুয়ারি শামসুজ্জোহার মৃত্যুর পর থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিনটিকে ‘শিক্ষক দিবস’ হিসেবে পালন করে। দিবসটি জাতীয়ভাবে পালনের দাবি জানিয়ে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা।
‘শিক্ষক দিবস’ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল আটটায় ড.
সাবিনা জোহা খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটা সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া হচ্ছে তাঁর বাবাকে নিয়ে গর্ব। এই গর্বটা শুধু আমার একার না, এটা সারা বাংলাদেশের। আমার বাবাকে আমি বাবা হিসেবেই চিনি। আপনারা যেভাবে চেনেন, যেভাবে ইতিহাসের পাতায় পড়েন, উনি তো আমার কাছে ইতিহাসের পাতা নয়। তবে আমার কাছে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, পাঁচ যুগ পরেও শিক্ষার্থীরা যেভাবে বাবাকে আদর্শ হিসেবে ধারণ করেছেন, একজন মেয়ে হিসেবে এর চেয়ে বেশি চাওয়া–পাওয়া আর নেই।’
এবারের অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন লেখক অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। আজ মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পহেলা বৈশাখে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া লাঠি খেলা
ঢোলের তালে মুহুর্মুহু আঘাত, প্রতিরোধের খটাখট শব্দে মুখরিত হয়ে জমে উঠেছে গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা। চারদিকে উৎসুক জনতা ভিড় করে উপভোগ করে খেলাটি। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য নতুন উদ্যমে ফিরিয়ে আনতে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা প্রশাসন এ লাঠি খেলার আয়োজন করে।
সোমবার উপজেলা পরিষদ চত্বরে বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ লাঠি খেলা। খেলায় লাঠি খেলার পাশাপাশি বুকের উপর ইট রেখে মাটি কাটার কোদাল দিয়ে আঘাত করে পরপর তিনটি ইট ভাঙা হয়। যা ছিল খেলার অন্যতম আকর্ষণ। উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের আবাদপুর এবং পার্শ্ববর্তী ক্ষেতলাল উপজেলার দেওগ্রাম থেকে দক্ষ লাঠিয়ালরা খেলা প্রদর্শন করেন।
খেলা দেখতে আসা রুপক হোসেন নামের এক দর্শনার্থী বলেন, আধুনিক যুগে এধরনের গ্রামীণ খেলাধুলা হারিয়ে যেতে বসেছে। এখনকার প্রজন্ম ডিজিটাল মাধ্যমে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এধরনের আয়োজন প্রতিনিয়ত হওয়া প্রয়োজন। খেলা দেখে খুব আনন্দ পেয়েছি।
মনির হোসেন নামের এক লাঠিয়াল বলেন, আমাদের এ দেশীয় খেলাগুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আগে প্রতিনিয়ত গ্রামগঞ্জে এধরনের লাঠি খেলা হতো। আমরা টাকার বিনিময়ে চুক্তিতে খেলতাম। এখন আর আগের মতো খেলা হয় না। এতে আয় রোজগার কমে গেছে। এ খেলাগুলোকে রক্ষা করা দরকার।
আয়োজক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুরুল আলম বলেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলা ফিরিয়ে আনতে আমাদের এ আয়োজন। খেলাটি উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভবিষ্যতেও এধরনের গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন অব্যাহত থাকবে।