সরকারের ভেতর থেকেই দুর্নীতির সুরক্ষা ও দুদককে অকার্যকর করার চেষ্টা করা হচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন তুলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি আজ এক বিবৃতিতে কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণ কেন্দ্র করে আলোচিত দুর্নীতির মামলার আসামি সরকারি কর্মচারী আমিন আল পারভেজকে দুদকের পরিচালক হিসেবে পদায়নের উদ্যোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ এ উদ্বেগ জানানো হয়।

অভিযুক্ত আমিন আল পারভেজ জানিয়েছেন, দুদকে পরিচালক হিসেবে তাঁর নিয়োগ বাতিল হয়েছে। টিআইবির বিবৃতিতেও সে কথা জানানো হয়েছে।

গণমাধ্যম সূত্র উল্লেখ করে টিআইবির বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২০ সালে কক্সবাজারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ভবন নির্মাণ ও ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্পে ২২ কোটি ২১ লাখ ২৮ হাজার ৮৩৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আমিন আল পারভেজের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তিনি তখন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। দুদকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমিন আল পারভেজ প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিজে এবং অন্যদের অবৈধভাবে লাভবান করেছেন।

বিবৃতি টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এমন একজন কর্মকর্তাকে দুদকে পরিচালক পদে নিয়োগ দিতে সরকারের চেষ্টা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, কোন মানদণ্ডে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রেষণে দুদকেই নিয়োগ দেওয়া হলো? সেটিও এমন একটি সময়ে, যখন দুদক সংস্কার কমিশন সুস্পষ্ট সুপারিশ করেছে যে দুদকের অভ্যন্তরে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চিহ্নিত করে বিভাগীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে চাকরি থেকে বহিষ্কার করে ফৌজদারি বিচারে সোপর্দ করতে হবে। এই সুপারিশের পুরোপুরি বিপরীতে গিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগের ঘটনা আসলে কী বার্তা দেয়? উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এমন মনে হওয়া অমূলক নয় যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দুদককে শক্তিশালী করার বদলে সরকারের ভেতর থেকেই দুদককে অকার্যকর করার চেষ্টা করা হচ্ছে!

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাস্তবে দুর্নীতির সুরক্ষা দেওয়ার জন্য প্রশাসনে ষড়যন্ত্র বিদ্যমান রয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত একজন কর্মকর্তাকে দুদকে পদায়নে সরকারের উদ্যোগ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য ও একই সঙ্গে গভীর উদ্বেগজনক।

অভিযুক্ত আমিন আল পারভেজ তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ছিলাম অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা)। অধিগ্রহণের বিষয়টি জেলা প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগের কাজ। তাই এর সঙ্গে কোনোভাবেই আমার সম্পৃক্ততা ছিল না। যদি ধরেও নিই এ কাজে আমি ছিলাম, তবে আমার বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোনো নোটিশ তো পেলাম না। শুধু পত্রিকার খবরে দেখেছি যে আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। দুদকের কাছে থেকে কোনো নোটিশ পাইনি।’

দুদকের পরিচালক হিসেবে আমিন আল পারভেজের নিয়োগ বাতিল প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘অভিযুক্ত কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিলে দুদকের এ সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাতে চাই। তবে আমরা আশা করব, দুদক এই ঘটনাকে একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে গ্রহণ করবে এবং ভবিষ্যতে নিয়োগ ও পদায়ন, বিশেষ করে প্রেষণে নিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্ক থেকে যেকোনো প্রকার প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে নিরবচ্ছিন্ন সাফল্য দেখাতে পারবে। একই সঙ্গে সরকার, বিশেষ করে আমলাতন্ত্র এ ধরনের অপপ্রয়াসের মাধ্যমে দুদক সংস্কারকে লক্ষ্যভ্রষ্ট করা থেকে বিরত থাকবে।’

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করা, দুর্নীতির সুরক্ষা দিয়ে বা দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তদের পুরস্কৃত করে নিজেকে বিব্রত করা নয়। তাহলে কর্তৃত্ববাদী মেয়াদের স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গে পার্থক্য থাকল কোথায়?’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট আইব র সরক র র গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

বিয়ে নিয়ে কথা কাটাকাটি, এজলাসের সামনে প্রেমিকার বিষপান

চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাসের সামনে কলি নামের এক নারী বিষপান করেছেন। পরে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই নারী নগরীর আলকরণ এক নম্বর গলি এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিষপান করা ওই নারীর সঙ্গে আদালতে কর্মরত হেফাজত নামের একজনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। বেশকিছু দিন ধরে তাদের মধ্যে বিয়ে করা না করা নিয়ে কথা কাটাকাটি চলছিল। এর জেরে আজ বুধবার আদালত এলাকায় একপর্যায়ে বিষপান করেন ওই নারী। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, বিভিন্নজনের মাধ্যমে জেনেছি, ওই নারীর সঙ্গে আদালতে কর্মরত একজনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। বিয়ে করা না করা নিয়ে ওই নারী সিএমএম কোর্টের এজলাসের সামনে বিষপান করেছেন। পরে নারী পুলিশের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কর্মরত হেফাজতের বাড়ি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় বলে জানা গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সচিবালয়ে প্রবেশের নতুন নীতিমালা
  • প্রতিবাদ চলছে, প্রক্টরের পদত্যাগ ও ছাত্রীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি
  • ‘সবকিছু দিচ্ছে, কিন্তু চাল কেন দিচ্ছে না’
  • তরুণেরা নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত: প্রধান উপদেষ্টা
  • উত্তরার সাহসী নারী ও সরকারের  ‘শয়তান ধরা অভিযান’
  • বইমেলায় এসেছে রুহুল আমিনের ‘মোহ কাঠের নৌকা’
  • একুশে বইমেলায় ফাল্গুনী তানিয়া`র তিন বই
  • বিকেলে বৈষম্যবিরোধীর কমিটি ঘোষণা, রাতে ১৬০ জনের পদত্যাগ
  • নতুন দলের ঘোষণা হতে পারে ২৬ ফেব্রুয়ারি
  • বিয়ে নিয়ে কথা কাটাকাটি, এজলাসের সামনে প্রেমিকার বিষপান