নায়িকাকে উৎসর্গ করে বই প্রকাশ করলেন খলনায়ক
Published: 18th, February 2025 GMT
ইফতেখার চৌধুরী পরিচালিত সুপারহিট হিট সিনেমা ‘দেহরক্ষী’ দিয়ে ২০১৩ সালে ঢাকাই চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন অভিনেতা শিমুল খান। এরপর টানা বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করে পরিচিত পান। বিশেষত খল-অভিনেতা হিসেবে অবস্থান তৈরী করেন তিনি। এই অভিনেতই এবারের একুশে মেলায় তার দ্বিতীয় বই প্রকাশ করলেন।
বইয়ের নাম "চল্লিশ হাওয়া Forty Winds"। বইটি আবার উৎসর্গ করেছেন চিত্রনায়িকা শবনম বুবলীকে। মঙ্গলবার পরীবাগে অবস্থিত সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। নায়িকা নিজ হাতে এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসে বুবলী বলেন, শিমুল খান ভাইয়ের দ্বিতীয় বই। এটা আমাকে উৎসর্গ করা হয়েছে। এটা আমার জন্য অবশ্যই সম্মানের।
শিমুল খান বলেন, আদর্শ সহকর্মী এবং মানুষ হিসেবে বুবলী অতুলনীয়। তার প্রতিটি পদক্ষেপ এবং আচার ব্যবহারে চলচ্চিত্র শিল্পের প্রোডাকশন বয় থেকে শুরু করে পরিচালক, প্রযোজক সহ সবাই বরাবরই মুগ্ধ! তাই তার এই সুন্দর পথচলাকে আরো অনুপ্রাণিত করার জন্যই আমার দ্বিতীয় বইটি শবনম বুবলীকে উৎসর্গ করে সারপ্রাইজ দিয়েছি।
শিমুল খানের বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন ঢাকাই ছবির পোস্টার ডিজাইনার সাজ্জাদুল ইসলাম সায়েম। "চল্লিশ হাওয়া বা Forty Winds বইটি মেলার ৪২৬/৪২৭ নম্বর স্টলের সপ্তর্ষি প্রকাশনীতে পাওয়া যাচ্ছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘জামতলা’ থেকে ৪২ বছর ধরে ছড়াচ্ছে একুশের গল্প
কুমিল্লা নগর উদ্যানের জামতলা। জামগাছটির গোড়ায় ইট, বালু আর সিমেন্টের পাকা মঞ্চ। ভাষার মাসে সেখানে আয়োজন করা হয়েছে একুশের অনুষ্ঠান। জামতলায় থাকা মঞ্চের সামনেই ত্রিপল বিছানো, পাশে রয়েছে চেয়ারও। সেখানে বসেছেন শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। জামতলার মঞ্চ থেকে শোনানো হচ্ছে ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস।
প্রতিবছর ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি এলেই জামতলার মঞ্চ থেকে ভাষা আন্দোলন আর স্বাধীনতার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেয় কুমিল্লার সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন ‘তিন নদী পরিষদ’। এই কাজ এক দিন বা এক সপ্তাহের জন্য নয়। কুমিল্লা নগর উদ্যানের জামতলায় ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি এলেই ২১ দিনব্যাপী একুশের অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে সংগঠনটি। এমন আয়োজন কিন্তু কয়েক বছর ধরে নয়, ৪২ বছর ধরে চলছে এই ধারা।
প্রতিবছরের মতো এ বছরও তিন নদী পরিষষের ২১ দিনব্যাপী একুশের অনুষ্ঠান চলছে। এ বছরের কর্মসূচি উৎসর্গ করা হয়েছে ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীদের নিষ্ঠুর আক্রমণে শহীদ ছাত্র-জনতার স্মৃতির উদ্দেশে’। কুমিল্লার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠকেরা বলছেন, দেশে এমন আয়োজন আজও দ্বিতীয়টি করতে পারেনি অন্য কোনো সংগঠন। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বুকেও এমন আয়োজন বিরল ঘটনা।
১৯৮৩ সালে গোমতী, মেঘনা ও তিতাস, এ তিনটি নদীপাড়ের বৃহত্তর কুমিল্লার সংস্কৃতিচর্চাকে বিকশিত করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘তিন নদী পরিষদ’। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজও আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি। তিন নদী পরিষদের মঞ্চ থেকে বিভিন্ন সময়ে হয়েছে আন্দোলন-সংগ্রামও।
তিন নদী পরিষদের পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আবুল হাসানাত (বাবুল) জানান, ১৯৮৪ সালে তিন নদী পরিষদ প্রথম ২১ দিনব্যাপী আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সে সময় কুমিল্লা পৌর পার্কে থাকা একটি বিশাল জামগাছের তলায় হয়েছিল ওই অনুষ্ঠান। জামগাছটি এখনো আছে। বর্তমানে ওই স্থানই কুমিল্লা নগর উদ্যানের ‘জামতলা’ নামে পরিচিত। ৪২ বছর ধরে প্রতিবছরই একুশের অনুষ্ঠান এই জামতলায় হয়েছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত জামতলায় চলে একুশের অনুষ্ঠান। প্রতিদিনই কোনো না কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন একুশের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছে। গতকাল বুধবার জামতলায় আসেন কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। শুরুতে একুশ নিয়ে আলোচনায় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হাসনাত আনোয়ার উদ্দীন আহমেদ বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে। তিন নদী পরিষদ ২১ দিনব্যাপী একুশের অনুষ্ঠান করছে, যা বিশ্বের বুকে বিরল।
একই দিন আয়োজনে অংশ নেন বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক আমিন-উর-রশিদ (ইয়াছিন)। তিনি বলেন, ‘বরকত, সালাম, জব্বার, রফিক, জব্বার নিজেকে উৎসর্গ করেছেন বাংলা ভাষার জন্য। তাই আমাদের বাংলা ভাষা মন দিয়ে ভালোবাসতে হবে। কারণ, একুশ আমাদের অহংকার। আর একুশের কথাগুলোই নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়াচ্ছে তিন নদী পরিষদ।’