সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা নেই ইলন মাস্কের: হোয়াইট হাউস
Published: 18th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্কের দেশটির সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আনুষ্ঠানিক কোনো ক্ষমতা নেই বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। একই সঙ্গে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতাবিষয়ক বিভাগের (ডিওজিই) আনুষ্ঠানিক কর্মী নন মাস্ক।
গতকাল সোমবার আদালতে জমা দেওয়া নথিপত্রে এসব তথ্য জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বিভাগ ডিওজিইর প্রধান হিসেবে মনে করা হয় মাস্ককে। দেশের সরকারি ব্যয় কমানো এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের লক্ষ্যে ক্ষমতায় বসার পর বিভাগটি প্রতিষ্ঠা করেছেন ট্রাম্প। গত নভেম্বরে তিনি বলেছিলেন, ডিওজিইর নেতৃত্ব দেবেন ‘মহান’ ইলন মাস্ক।
আদালতে নথিপত্র জমা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক কার্যালয়ের পরিচালক জশুয়া ফিশার। ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে নিউ মেক্সিকোসহ ১৪টি অঙ্গরাজ্যের করা একটি মামলার পর নথিগুলো জমা দেওয়া হয়।
নথিতে বলা হয়েছে, ইলন মাস্ক হোয়াইট হাউসের একজন কর্মী এবং প্রেসিডেন্টের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা। হোয়াইট হাউসের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টার মতো মাস্কেরও নিজ থেকে সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা নেই। তিনি শুধুই প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দিতে পারবেন। তিনি ‘ডিওজিই সার্ভিস’ বা ‘ডিওজিই সার্ভিস টেম্পোরারি অর্গানাইজেশন’–এর কর্মীও নন।
এদিকে আজ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজে ট্রাম্প ও মাস্কের একটি যৌথ সাক্ষাৎকার সম্প্রচারের কথা রয়েছে। এর আগে সাক্ষাৎকারটির একটি খণ্ডাংশ প্রকাশ করা হয়। তাতে ইলন মাস্কই হোয়াইট হাউস চালাচ্ছেন—সমালোচকদের এমন মন্তব্যের কড়া জবাব দিতে দেখা যায় ট্রাম্পকে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, ইতিহাসে আমার চেয়ে বেশি আর কাউকে নিয়ে খারাপ প্রচার–প্রচারণা হয়নি। তবে আমি কী শিখেছি, তা আপনি কি জানেন ইলন? (তা হলো) মানুষ স্মার্ট।’ এ সময় ইলন মাস্ক বলেন, ‘হ্যাঁ, আসলেই তাঁরা (স্মার্ট)।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক ক ষমত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে সেনা তত্ত্বাবধানে নদী খনন
যশোরের দুঃখ ভবদহ জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের পথে হাঁটছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আশপাশের নদী খনন করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শনে এ কথা জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
পরিদর্শনে তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ সময় রিজওয়ানা বলেন, ‘দুর্গত এলাকার মানুষ ও পানি বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানে সবকিছু করা হবে। এবার বর্ষায় জলাবদ্ধতা ঠেকাতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে শিগগির ভবদহ এলাকার নদী খনন করা হবে।’
ভবদহের জলাবদ্ধতা প্রায় চার দশকের। ভুক্তভোগীরা জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানে টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) চালু ও আমডাঙ্গা খাল সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে পাউবো পাম্প দিয়ে পানি বের করতে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও দূর হয়নি দুর্দশা।
তিন উপদেষ্টার আসার খবরে গতকালও ভবদহের ২১ ভেন্ট স্লুইসগেটের কাছে জড়ো হয়ে ভুক্তভোগীরা আবারও টিআরএম চালুর দাবি জানান। এক পর্যায়ে কয়েকজন টিআরএমের বিরোধিতা করে স্লোগান দিলে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। স্থানীয়দের দাবি, ঘের মালিকদের ভাড়া করা লোক বিক্ষোভ করেছেন।
ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, পাউবো কর্মকর্তারা ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসন করতে চান না। তারা সমস্যা জিইয়ে রেখে প্রতি বছর প্রকল্পের নামে শত শত কোটি টাকার ব্যবসা করতে চান। টিআরএম ছাড়া জলাবদ্ধতা দূর হবে না জেনেও এমন প্রকল্প মূলত স্থানীয় ঘের মালিকদের সুবিধার জন্য নিচ্ছে পাউবো। তবে এবার আমডাঙ্গা খাল খননের জন্য দরপত্র হয়েছে। এটি টিআরএমের অংশ। তিন উপদেষ্টা আসায় স্থায়ী সমাধান হবে বলে আমরা আশাবাদী।
পরিদর্শন শেষে ভবদহ কলেজ মাঠে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, ভবদহ সমস্যা রাতারাতি সমাধান করা যাবে না। তবে স্বল্পকালীন সমাধান হিসেবে আমডাঙ্গা খাল খনন করে পানি বের করা হয়েছে। ফলে অনাবাদি ২০ হাজারের মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে চলা সেচপাম্পের ৪৬ শতাংশ বিদ্যুৎ বিল কমিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ। এলাকার জন্য কৃষি ব্যাংকের ঋণের সুদ মওকুফে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ সময় উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান উপস্থিত অর্ধশতাধিক কৃষক। তারা উপদেষ্টাকে বলেন, পাউবো আপনাকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মূল বিষয় আড়াল করেছে। পানি নেমে যাওয়া জমির মাত্র ২০ শতাংশে ধান আবাদ হয়েছে।