শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবী জুড়েই প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস পোল্ট্রি। বাংলাদেশে বছরে ১৫-২০ শতাংশ হারে এই শিল্পের প্রবৃদ্ধি ঘটছে। তবে পোল্ট্রি শিল্পের অগ্রগতিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপদ ও টেকসই উৎপাদন। এ জন্য প্রতিটি খামারে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তায় জোর দিতে হবে। পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়েই উৎপাদন বাড়াতে হবে। প্রতিটি খামারেই বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে ১৩তম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি সেমিনার বক্তারা এ কথা বলেন। দুইদিনব্যাপী এই সেমিনারের আয়োজন করে ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন- বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি) ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)। এতে পোল্ট্রি শিল্পের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ৮৮টি দেশি-বিদেশি টেকনিক্যাল পেপার উপস্থাপন হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওয়াপসা-বিবির সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশকে আমরা একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে দেখতে চাই। তাই অভিধান থেকে অপুষ্টি শব্দটি মুছে ফেলতে হবে। আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাগুলোই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে সহায়ক হবে। 

তিনি বলেন, ভোক্তাদের ধারণা পোল্ট্রিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশে এখন প্রচুর পরিমাণে প্রিবায়োটিক, প্রোবায়োটিক, ফাইটোজেনিক, এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহৃত হচ্ছে।

ওয়াপসা-বিবির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার প্রামাণিক বলেন, পোল্ট্রি বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষকরা পোল্ট্রি বিজ্ঞানকে প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন সমাধান উপহার দিচ্ছেন। গত ২৮ বছর ধরে ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখা ব্যবসা ও বিজ্ঞানের মাঝে সম্পর্কের সেতু বন্ধন তৈরি করেছে। জরাজীর্ণতাকে কাটিয়ে নতুন এক সম্ভাবনাময় দেশ গড়ার ডাক এসেছে আমাদের সবার জন্য। সাধারণ খামারীদের কথা ভাবতে হবে, কারণ তাদের সংখ্যাই বেশি। খামার থেকে শুরু করে খাবারের প্লেট পর্যন্ত পুরো চেইনকেই সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে হবে।

সেমিনারের গবেষক ও বক্তারা বলেন, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা না থাকলে কাউকেই পোল্ট্রি খামারের নিবন্ধন দেওয়া ঠিক হবে না। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয় মাথায় রেখে বিজ্ঞানীদের শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মুরগির জাত উদ্ভাবন করতে হবে। রিসাইক্লিংয়ের কথাও গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। সরকার পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ শিল্প স্থাপনে প্রণোদনা এবং স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে- এই বিষয়ে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে হবে।

প্রথম দিনের সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন- ইউজিসির অধ্যাপক ড.

এসডি চৌধুরী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সাবেক উপাচার্য ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার ড. মো. গিয়াসউদ্দিন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সদস্য পরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম, বাকৃবির অধ্যাপক ড. কে. এম. সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ.টি.এম মাহবুব-ই-এলাহী, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন ডা. বয়জার রহমান প্রমুখ।

সেমিনার শেষে বৃহস্পতিবার থেকে পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ১৩তম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো। বিশ্বের ১৭টি দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও পণ্যের পসরা নিয়ে এতে হাজির হবেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর জ য

এছাড়াও পড়ুন:

প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে নিয়োগ: ১৩তম দিনের মতো অবস্থান আন্দোলনকারীদের

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলনকারীরা আজ মঙ্গলবার ১৩ তম দিনের মতো রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনের সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আন্দোলনকারীরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। আন্দোলনকারীদের কাছাকাছি স্থানে অবস্থান করছে পুলিশ।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, ফলাফল ও নির্বাচিতদের নিয়োগপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের ওপর আজ আদালতে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। তাঁরা এই শুনানির দিকে তাকিয়ে আছেন। শুনানির পর তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করে তাঁদের অবস্থান জানাবেন।

আন্দোলনকারীরা জানান, তাঁরা দিনে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন, আর রাতে থাকেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। এভাবে তাঁরা ১৩ দিন ধরে লাগাতার কর্মসূচি পালন করছেন। এ কর্মসূচিতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের চাকরিফেরত প্রত্যাশীরা অংশ নিচ্ছেন।

তিন ধাপে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ হন।

আরও পড়ুনজলকামানের পর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিল পুলিশ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন রিট করলে ৬ হাজার ৫৩১ জনের ফলাফল ও নিয়োগপত্র প্রদান-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়।

চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট চূড়ান্ত ফলাফল ও নির্বাচিতদের নিয়োগপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায় স্থগিত চেয়ে গত সপ্তাহে আপিল বিভাগে আবেদন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে নিয়োগ: ১৩তম দিনের মতো অবস্থান আন্দোলনকারীদের