সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলছে পাঁচ দিনব্যাপী গালফুড মেলা। ৩০তম এ আসরে অংশ নিয়েছে বিশ্বের ১৩০টি দেশের খাদ্যপণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনকারী সাড়ে ৫ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান। মেলায় দুবাই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের জাবিল হল ফোরে রয়েছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তত্ত্বাবধানে এ বছর মেলায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে ৪১টি প্রতিষ্ঠান ও ৭৩ পরিবেশক। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈশ্বিক বাজারে দেশীয় পণ্য তুলে ধরতে এবং রপ্তানির ক্ষেত্র তৈরিতে এ ধরনের মেলা বড় ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের বাজারে নিজেদের পরিধি বাড়াতে সক্ষম হবে বাংলাদেশি খাদ্য পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। দেশে উৎপাদিত পণ্যের গ্রহণযোগ্যতা তৈরির পাশাপাশি গুণগত মান যাচাইয়ের সুযোগও মিলবে। 

এদিকে রোববার মেলার বাংলাদেশি প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, আবুধাবিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ, ডিরেক্টর (ফেয়ার) খালেদ মাহমুদ, বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর আশীষ কুমার সরকার, ডেপুটি সেক্রেটারি (রপ্তানি) জাকির হোসেন প্রমুখ।

মেলায় অংশগ্রহণকারী সিটি গ্রুপের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর লুৎফুর কবির শাহীন বলেন, মেলায় প্রিমিয়াম বিস্কুট, বিশ্বমানের চাসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এসেছে তার প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তারা বিশ্বব্যাপী ভোক্তাদের মন জয় করা, নতুন অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা এবং প্রতিষ্ঠানকে বৈশ্বিক পরিসর সম্প্রসারণের সুযোগ পাচ্ছেন।  

বিশ্ববাজারে দেশীয় পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের পরিকল্পনা তুলে ধরে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের ৪১টি প্রতিষ্ঠান মেলায় এসেছে। আশা করছি, এ বছরও ১ বিলিয়ন ডলার বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। তবে মেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের জন্য বরাদ্দ করা স্থানটি ছোট হওয়ায় আগ্রহ থাকলেও আরও বেশি প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দেওয়া যায়নি। মেলার আয়োজকদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করা হবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নদী-পাহাড়-বন রক্ষায় ডিসিদের যেসব নির্দেশনা দিলেন উপদেষ্টা

দেশের নদী, পাহাড় ও বন রক্ষায় জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। পাহাড় কাটার ক্ষেত্রে মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন তিনি। বনাঞ্চল সংরক্ষণে মধুপুর শালবনের সীমানা চিহ্নিতকরণ, অবৈধ দখলমুক্তকরণ ও সংরক্ষিত বন এবং নদী ও জলাশয়ের রেকর্ড সংশোধনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন উপদেষ্টা।

পরিবেশ উপদেষ্টা, সড়কের পাশে পাহাড়ের ঢালে সংরক্ষিত বন ঘোষিত এলাকায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ৫১ একরের আবাসন প্রকল্পটি বাতিলের নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বনের জায়গায় স্থাপিত রাজা কাশিমের শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড উচ্ছেদের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনে বক্তব্য দানকালে তিনি এসব দিকনির্দেশনা দেন। 

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, শতবর্ষী, প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষ চিহ্নিত করে সংরক্ষণ করতে হবে। নদীর তালিকা ধরে প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি নদী দখল ও দূষণমুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি, সমুদ্র সৈকত, হাওড়, দ্বীপ ও বনাঞ্চলে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, বালু ও পাথর উত্তোলনের আগে অবশ্যই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নিতে হবে। দূষণবিরোধী অভিযানে পর্যাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ এবং প্রয়োজনে যৌথ বাহিনীর সহায়তা গ্রহণের ওপরও তিনি জোর দেন। দূষণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেন এবং বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণের আহ্বান জানান।

হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, পরিবেশ অপরাধীদের তালিকা প্রণয়ন, পরিবেশ স্বেচ্ছাসেবীদের তালিকা তৈরি এবং পরিবেশ পদক ও বৃক্ষরোপণ পদকের জন্য ব্যক্তি ও সংস্থা নির্বাচন করার বিষয়ে তিনি দিকনির্দেশনা দেন।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ইটভাটার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং পলিথিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও বাজারে ক্রাশ প্রোগ্রাম পরিচালনা করতে হবে। বিকল্প ব্যবস্থার অংশ হিসেবে বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পুরাতন কাপড়ের ব্যাগ তৈরি করে তা প্রচলনের উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক মুক্ত করার নির্দেশনা দেন এবং যানবাহনের হর্ন নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অধিবেশনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসানসহ পরিবেশ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তরগুলোর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। 

অধিবেশনে উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকরা নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের পরিবেশ, বন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যার উল্লেখ করেন। উপদেষ্টা প্রতিটি বিষয় বিবেচনা করার আশ্বাস দেন। 

পরে সাংবাদিক সম্মেলনে পরিবেশ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩৭ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে তদন্ত কমিশন
  • নদী-পাহাড়-বন রক্ষায় ডিসিদের যেসব নির্দেশনা দিলেন উপদেষ্টা