নারায়ণগঞ্জে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় নারীসহ গ্রেপ্তার ৫
Published: 18th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চবটির শীষমহল আমতলা এলাকায় তালাবদ্ধ একটি ঘর থেকে ভ্যানচালক হাবিবুর রহমানের বিকৃত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এক নারীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মুক্তিপণের টাকা না পাওয়ায় অপহরণকারীরা তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে বলে জানায় পুলিশ।
ফতুল্লা থানার ওসি শরীফুল ইসলাম জানান, গত ২৯ জানুয়ারি পঞ্চবটি শীষমহল আমতলা এলাকার স্বপন সরকারের ভাড়াটিয়া বাসা থেকে হাবিবুর রহমানের (২১) বিকৃত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের বাবা আজিজুল হক জানান, ২৪ জানুয়ারি রাতে তার ছেলে বাসা থেকে বের হন। রাত ১০টার দিকে অপহরণকারীরা ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং টাকা না দিলে হাবিবুরকে হত্যার হুমকি দেয়।
এরপর সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পটুয়াখালী সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা কবির ওরফে সগির হোসেন (৩৮), মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার হাতিমারা এলাকার বাসিন্দা রেহেনা বেগম (২৫), নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার চর ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা আরিফ (২৫) , মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার দানেশপুর এলাকার বাসিন্দা সিদ্দিক (৫২) , পটুয়াখালী সদর উপজেলার হাজীখালা গ্রামের বাসিন্দা নুরুজ্জামান (৩৫)।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মোহাম্মদ হাসিনুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তারকৃত দম্পতি কবির ওরফে সগির হোসেন ও রেহেনা বেগম বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাসা নিয়ে পুরুষদের ফাঁদে ফেলে মুক্তিপণ আদায় করত।
এই ঘটনার ক্ষেত্রেও একই কৌশল অবলম্বন করা হয়। হাবিবুরের পরিচিত এবং গ্রেপ্তারকৃত নুরুজ্জামানের মাধ্যমে রেহেনা তাকে শারীরিক সম্পর্কের প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় ডেকে আনে। এরপর মুক্তিপণের জন্য নির্যাতন করা হয়। হাবিবুর চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সবাই পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে একই কৌশলে মানুষকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অপহরণক র এল ক র ব স ন দ সদর উপজ ল র ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
স্কুলছাত্রী অপহরণের মামলা করায় পরিবারকে হুমকি
স্কুলছাত্রীকে অপহরণের ঘটনায় গাজীপুরের কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানায় মামলা করেছিলেন তার মা। এ ঘটনার আট দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। উল্টো তারা মোবাইল ফোনে কল করে মেয়েটির মা-বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এমনকি, মামলা তুলে না নিলে তারা পেট্রোল ঢেলে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার কথাও বলছে। এ ঘটনায় পরিবারটি ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়।
ওই কিশোরী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে পাশের বারেন্ডা গ্রামের জান্নাতুল মোল্লা প্রেমের প্রস্তাব দিত। এতে ব্যর্থ হয়ে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। ৩১ মার্চ ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ১০-১২ জন সশস্ত্র সহযোগী নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে হানা দেয় জান্নাতুল। তার মাকে মারধর করে অস্ত্রের মুখে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যায় ওই কিশোরীকে।
ঘটনার দিনই কাশিমপুর থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়। পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ৩ এপ্রিল রাতে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল ওই থানায় অপহরণ মামলা করেন মেয়েটির মা। এতে জান্নাতুল মোল্লা (২৬), তার বাবা সফিউদ্দিন মোল্লা (৬০), আফাজ উদ্দিন আফু (৫০), জহিরুল ইসলাম (৩৫), হিমেল হোসেনের (২৬) নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়।
মামলার বাদীর ভাষ্য, আসামি ও তাদের লোকজন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রায়ই ফোনে ও সরাসরি হুমকি দিচ্ছে। তা না করলে হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেবে বলে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তারা মামলার সাক্ষীদেরও নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। পুলিশও অজ্ঞাত কারণে আসামি গ্রেপ্তার করছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী বলেন, অপহরণে জড়িত পরিবারটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ও বিত্তবান। তাই হয়তো পুলিশ ধরতে আগ্রহী নয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, ৪ এপ্রিল অপহরণের মামলা হয়। জানতে পেরেই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।