নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চবটির শীষমহল আমতলা এলাকায় তালাবদ্ধ একটি ঘর থেকে ভ্যানচালক হাবিবুর রহমানের বিকৃত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এক নারীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মুক্তিপণের টাকা না পাওয়ায় অপহরণকারীরা তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে বলে জানায় পুলিশ। 

ফতুল্লা থানার ওসি শরীফুল ইসলাম জানান, গত ২৯ জানুয়ারি পঞ্চবটি শীষমহল আমতলা এলাকার স্বপন সরকারের ভাড়াটিয়া বাসা থেকে হাবিবুর রহমানের (২১) বিকৃত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের বাবা আজিজুল হক জানান, ২৪ জানুয়ারি রাতে তার ছেলে বাসা থেকে বের হন। রাত ১০টার দিকে অপহরণকারীরা ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং টাকা না দিলে হাবিবুরকে হত্যার হুমকি দেয়।

এরপর সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পটুয়াখালী সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা কবির ওরফে সগির হোসেন (৩৮), মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার হাতিমারা এলাকার বাসিন্দা রেহেনা বেগম (২৫), নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার চর ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা আরিফ (২৫) , মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার দানেশপুর এলাকার বাসিন্দা সিদ্দিক (৫২) , পটুয়াখালী সদর উপজেলার হাজীখালা গ্রামের বাসিন্দা নুরুজ্জামান (৩৫)।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মোহাম্মদ হাসিনুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তারকৃত দম্পতি কবির ওরফে সগির হোসেন ও রেহেনা বেগম বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাসা নিয়ে পুরুষদের ফাঁদে ফেলে মুক্তিপণ আদায় করত।

এই ঘটনার ক্ষেত্রেও একই কৌশল অবলম্বন করা হয়। হাবিবুরের পরিচিত এবং গ্রেপ্তারকৃত নুরুজ্জামানের মাধ্যমে রেহেনা তাকে শারীরিক সম্পর্কের প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় ডেকে আনে। এরপর মুক্তিপণের জন্য নির্যাতন করা হয়। হাবিবুর চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সবাই পালিয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে একই কৌশলে মানুষকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অপহরণক র এল ক র ব স ন দ সদর উপজ ল র ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

অপহরণের দুদিন পর হামিম গ্রুপের কর্মকর্তার লাশ মিলল

অপহরণের ৪৪ ঘণ্টা পর রাজধানীর উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টর থেকে আহসান উল্লাহ নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে মরদেহ উদ্ধারের পর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশ বলছে, আহসান উল্লাহকে হত্যার পর রাস্তার পাশে কাশবনে ফেলে রাখা হয়েছিল। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, আহসান উল্লাহ হাসান হা-মীম গ্রুপের দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক। তাঁর বাসা তুরাগ থানা এলাকার চন্ডালভোগে। বাসা থেকে নিজস্ব গাড়িতে আশুলিয়ায় অফিসে যাতায়াত করতেন। প্রতিদিনের মতো গত রোববার সকালে কোম্পানির কাজের উদ্দেশে বাসা থেকে গাড়ি নিয়ে বের হন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালক সাইফুল ইসলাম। সাইফুল আট মাস ধরে এই গাড়ি চালান। অফিসের কাজ শেষে বিকেল সাড়ে ৩টায় তিনি গাড়িতে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। ৪টায় তাঁর স্ত্রী লুৎফুন নাহার তাঁকে ফোন করলে অপরপ্রান্ত থেকে কল কেটে দেওয়া হয়। ইফতারের আগে লুৎফুন নাহার পুনরায় ফোন করেও স্বামীকে পাননি। এর পর খোঁজ নেওয়ার জন্য চালক সাইফুলকে ফোন করেন। সাইফুল তাঁকে জানান, আহসান উল্লাহকে নিয়ে মিরপুরে অবস্থান করছেন। তাঁর কাছে ফোন দিতে বললে, চালক বলেন– ‘স্যার মিটিং করছেন।’ রাত ৮টায়ও বাসায় না ফেরায় আবার আহসান উল্লাহকে ফোন করেন লুৎফুন নাহার। তখন ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এর পর সাইফুলকে ফোন করলে তিনি জানান, আহসান উল্লাহ উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে একজনের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। তাঁকে গাড়ি নিয়ে বাসায় চলে যেতে বলেছেন। রাতে তিনি বাসায় গাড়ি রেখে চলে যান।

এক পর্যায়ে বিভিন্ন স্থানে আহসান উল্লাহর সন্ধান শুরু করেন স্বজনরা। কোথাও না পেয়ে সোমবার ভোরে তুরাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। এদিন সকালেই চালক সাইফুল চন্ডালভোগ এলাকার ভাড়া বাসা থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পালিয়ে যান। তাঁর ফোনও বন্ধ। পরে সাইফুলকে আসামি করে লুৎফুন নাহার বাদী হয়ে অপহরণের অভিযোগে মামলা করেছেন।

তুরাগ থানার ওসি রাহাত খান সমকালকে বলেন, জিডি হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান চালানো হয়। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় খবর পাওয়া যায়, ১৬ নম্বর সেক্টরে কাশবনের ভেতরে একজনের লাশ পড়ে আছে। অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের পর জানা যায়, তিনি আহসান উল্লাহ। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ সেখানে ফেলে রাখা হয়েছে। অপহরণ মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে আহসান উল্লাহকে অপহরণ এবং হত্যা করা হয়। তাঁর এটিএম কার্ড থেকে কয়েকবার ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা উঠানো হয়েছে। চালক সাইফুল এ ঘটনা ঘটাতে পারেন বলে সন্দেহ পুলিশের। ব্যক্তিগত চালক হওয়ায় সাইফুল যে কোনো উপায়ে এটিএম কার্ডের গোপন নম্বর জেনে থাকতে পারেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করলে সব রহস্য উদঘাটন হবে বলে ধারণা করছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপহরণের দুদিন পর হা-মীম গ্রুপের কর্মকর্তার লাশ মিলল
  • অপহরণের দুদিন পর হামিম গ্রুপের কর্মকর্তার লাশ মিলল
  • অপরাধের সংখ্যা কমেছে বেড়েছে হত্যা ডাকাতি
  • সংরক্ষিত বন ও নদীঘেঁষে অবৈধ জালে মাছ নিধন
  • শ্রীপুরে ৩৫ ঘণ্টা পর বাড়িতে ফিরলেন ‘অপহৃত’ তরুণ, পুলিশের সন্দেহ
  • বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মাদ্রাসাছাত্রীকে অপহরণচেষ্টা
  • ঠাকুরগাঁওয়ে তরুণের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
  • যশোরের সড়কে যুবকের মৃত্যু
  • মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের সাংকেতিক পিলারে ধাক্কা, তরুণ নিহত
  • ব্যবসায়ীকে অপহরণ: যুবদলের সাবেক সভাপতি ও জানাক নেতাসহ আটক ৫