৬৫৩১ জনের ফল বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল শুনানি ২ মার্চ
Published: 18th, February 2025 GMT
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগ দিতে ৬ হাজার ৫৩১ জনের প্রকাশিত ফল বাতিলসংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) আগামী ২ মার্চ শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক আজ মঙ্গলবার এ দিন ধার্য করেন। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ শুনানি হবে।
এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ৬ হাজার ৫৩১ জনকে নিয়োগ দিতে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফল এবং নির্বাচিত ব্যক্তিদের অনুকূলে নিয়োগপত্র ইস্যুর সিদ্ধান্ত আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গত বছরের ২৩ জুলাইয়ের পরিপত্র অনুসরণ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নতুন করে ফল প্রকাশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের ওই রায় স্থগিত চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে ১১ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি আবেদনটি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন আবেদনকারী পক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত একদিন সময় দেন। এর মধ্যে হাইকোর্টের পূর্নাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে আজ নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করা হয়। লিভ টু আপিলটি চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে লিভ টু আপিলকারী পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
পরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে আজ লিভ টু আপিলটি করা হয়। হাইকোর্টের রায় স্থগিতের আরজিও রয়েছে। চেম্বার আদালত লিভ টু আপিলটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ২ মার্চ তারিখ ধার্য করেছেন।
২০২৩ সালের ১৪ জুন ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর ৬ হাজার ৫৩১ প্রার্থীকে নির্বাচন করে গত বছরের ৩১ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ১১ নভেম্বরের এ-সংক্রান্ত আদেশ অনুসারে নির্বাচিত প্রার্থীদের অনুকূলে ২০ নভেম্বর নিয়োগপত্র ইস্যু করার কথা ছিল। তবে ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা অনুসরণের অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগবঞ্চিত ৩১ প্রার্থী নভেম্বরে রিট করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন এবং ৩১ অক্টোবর ও ১১ নভেম্বরের সিদ্ধান্তের কার্যক্রম স্থগিত করেন। রুলে ৩১ অক্টোবরের ফলাফল প্রকাশের বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ বিষয়ে ১১ নভেম্বরের নির্দেশনাসংবলিত স্মারক কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
হাইকোর্টের আদেশ (৩১ অক্টোবর ও ১১ নভেম্বরের সিদ্ধান্ত স্থগিত) স্থগিত চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে, যা গত ৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে দিয়ে হাইকোর্টে এ–সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি রায় দেওয়া হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ন ন র জন য আইনজ ব ফল ফল
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকাত–আতঙ্কে ঝালকাঠি পৌরসভায় মাইকিং, মব তৈরি করে শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ
‘এলাকায় ডাকাত পড়েছে’ বলে গতকাল সোমবার রাতে ঝালকাঠি শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েকটি মসজিদে মাইকিং করা হয়। পরে এলাকার লোকজন দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। পরে তাঁরা ৯ জন নির্মাণশ্রমিককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেন। রাত একটার দিকে পৌরসভার বাসন্ডা ঝোড়াপোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
তবে সদর থানা–পুলিশ জানিয়েছে, গুজব ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের মধ্যে ডাকাত–আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। জেলার কোথাও ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। আটক ওই ৯ জন নিরীহ শ্রমিক। এ সম্পর্কে ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, আটক ব্যক্তিরা নিরীহ শ্রমিক। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঝোড়াপোল এলাকায় রাত একটার দিকে বাসন্ডা খালের তীরবর্তী জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য বনি আমিন বাকলাইয়ের বাংলো বাড়ির সামনের ঘাটলায় নির্মাণশ্রমিকদের মালামালবোঝাই একটি ট্রলার থামে। এ সময় আইনজীবী বনি আমিন সিসিটিভির ফুটেজে বিষয়টি দেখতে পেয়ে মুঠোফোনে এলাকার কয়েকজনকে জানান। তখন এলাকার মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে ৯ জন শ্রমিককে আটক করে পিটুনি দেন। পরে তাঁরা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ গিয়ে ওই শ্রমিকদের উদ্ধার করে থানায় আনে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
এদিকে শ্রমিকদের আটক করার খবর শুনে স্থানীয় ঠিকাদার ফাইজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি এলাকার লোকজনকে জানান, ওই ৯ শ্রমিক তাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। এরপরও তাঁকে লাঞ্ছিত করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে ফাইজুল ইসলাম বলেন, ‘পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে আমার একটি সেতু নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। বিল বকেয়া থাকায় কাজ বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের এলাকায় চলে আসতে বলেছিলাম। রাত গভীর হওয়ায় আইনজীবী বনি আমিনের বাড়ির সামনের ঘাটলায় শ্রমিকদের ট্রলার ভেড়াতে বলি। এ সময় নিরীহ শ্রমিকদের ডাকাত বানিয়ে মব জাস্টিস করা হয়েছে।’
বনি আমিন বাকলাই বলেন, তাঁদের (শ্রমিক) সন্দেহজনক আচরণ ও চলাচলের কারণে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে দিয়েছেন।