২৭ বছরে আটটি টুর্নামেন্ট। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তো স্মরণীয় মুহূর্তের অভাব নেই। আরেকটি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি যখন দোরগোড়ায়, আইসিসি নিজেরাই বেছে নিয়েছে টুর্নামেন্ট ইতিহাসের সেরা পাঁচ ম্যাচ। সেরা নয়, ক্রম সাজানো হয়েছে বছরের হিসাবে।ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা, সেমিফাইনাল (২০০২)

বীরেন্দর শেবাগ যখন প্রথমবার বল হাতে নিলেন, ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৯ ওভারে ৬২ রান দরকার দক্ষিণ আফ্রিকার। শেবাগ যখন শেষ ওভারটা শুরু করলেন, ৬ বলে দরকার ২১ রান। প্রথম ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ১ উইকেট নেওয়া শেবাগকে শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে দিলেন জ্যাক ক্যালিস। পরের বলে ক্যালিসকে উইকেটকিপারের ক্যাচ বানিয়ে প্রতিশোধ নেওয়া শেবাগ ওভারের শেষ বলে ল্যান্স ক্লুজনারকে ফিরিয়ে ১০ রানে জিতিয়ে দেন দলকে। ভারত উঠে যায় ফাইনালে।

কলম্বোর ম্যাচটিতে এর আগে ব্যাটিংয়েও ৫৮ বলে শেবাগ করেন ৫৯ রান। ভারত করে ৯ উইকেটে ২৬১ রান। রান তাড়ায় শেবাগ বল হাতে নেওয়ার আগে তরতরিয়ে এগোচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

আরও পড়ুনপাকিস্তানের মাঠে ভারতের পতাকা না থাকার ব্যাখ্যা দিল পিসিবি২ ঘণ্টা আগেওয়েস্ট ইন্ডিজ-ইংল্যান্ড, ফাইনাল (২০০৪)

শিবনারায়ণ চন্দরপল যখন ফিরলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের আশা কার্যত শেষই ধরে নিয়েছিলেন সবাই। ২ উইকেট হাতে থাকা দলটির যে আরও ৭১ রান দরকার ছিল। ওভালে সেই ম্যাচটিই আর কোনো উইকেটে না হারিয়েই অবিশ্বাস্যভাবে জিতে চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কোর্টনি ব্রাউন ও ইয়ান ব্র্যাডশর নবম উইকেট জুটি ক্রিকেট–রূপকথায় স্থায়ীভাবেই জায়গা পেয়ে গেছে। নয়ে নামা উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান ব্রাউন ৫৫ বলে ২৪ ও দশে নামা পেসার ইয়ান ব্র্যাডশ ৫১ বলে ৩৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন।

মার্কাস ট্রেসকোথিকের সেঞ্চুরির পরও পথ হারিয়ে ইংল্যান্ড অলআউট হয়েছিল ২১৭ রানে। লন্ডনের কনকনে সেই শীতের সন্ধ্যায় দলটির বোলাররা তবু জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ রামনরেশ সারওয়ান ও ব্রায়ান লারাকে ফেরানোর পর যখন ডোয়াইন ব্রাভোকেও ফেরালেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৮০/৫। এরপর কী হয়েছে, সেটি তো ইতিহাস।

ফাইনাল জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ইন ল উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরের দুঃখ ভবদহ পরিদর্শনে ৩ উপদেষ্টা, নদী খনন করবে সেনাবাহিনী

যশোরের দুঃখ হিসেবে পরিচিত ভবদহের জলাবদ্ধ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে পরিদর্শন করলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ভবদহ স্লুইসগেট ২১ ভেন্ট এলাকা পরিদর্শন করেন তিন উপদেষ্টা।

তিন উপদেষ্টার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ছাড়াও সেনাবাহিনীর যশোর এরিয়া কমান্ডার ও জিওসি মেজর জেনারেল জে এম ইমদাদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে ভবদহ কলেজ মাঠে ব্রিফিংয়ের সময় পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, গতবারের মত এবার বর্ষায় যাতে জলাবদ্ধতা না হয়, সেজন্য সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভবদহ এলাকার নদী খনন কাজ শুরু হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে যেসব সেচ পাম্প কাজ করছে, সেগুলোর বিদ্যুৎ বিল ইতোমধ্যে ৪৬ শতাংশ কমিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ। এ এলাকার জন্য কৃষি ব্যাংকের ঋণের সুদ মওকুফের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভবদহ জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান যাতে হয়, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ২০০৫ সালে ভবদহ সমস্যার সমাধান করা সহজ ছিল। কিন্তু সে সময় সরকার সদিচ্ছা দেখায়নি। বর্তমান সরকার এ সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধানের জন্য ইতোমধ্যে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি শুরু হয়েছে। পক্ষ-বিপক্ষ সবার কাছ থেকে এ ব্যাপার মতামত নেওয়া হবে। এরপর বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে এদিন সকাল ১০টার দিকে যশোরের অভয়নগরের নওয়াপাড়া সরকারি কলেজ মাঠে হেলিকপ্টারে নামেন তিন উপদেষ্টা। পরে ধান খেত পরিদর্শন করেন তিন উপদেষ্টা।

এর আগে থেকে ভবদহ পাড়ের মানুষেরা বিভিন্ন ভবদহ স্থায়ী সমাধানে বিভিন্ন দাবি দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান নেন। এসময় তারা দ্রুত টিআরএম চালুসহ স্থানীয় নদীগুলো খনন করার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল। পলি পড়ে এই অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের মাধ্যম মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদী নাব্য হারিয়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে নদী দিয়ে পানি নামতে পারে না। বর্ষায় জলাবদ্ধতায় খেতের ফসল, ঘেরের মাছ সবই কেড়ে নেয় পানি। জলাবদ্ধতায় মগ্ন থাকে শতাধিক গ্রামের ঘরবাড়ি, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, কৃষিজমি এবং মাছের ঘের। এই অঞ্চলের ৪ লক্ষাধিক মানুষের ঠাঁই হয় মহাসড়কের ধারে বা স্কুল কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে। অথচ বিগত চার দশকে ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান হয়নি।

অভিযোগ, বিগত সরকারগুলোর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা সিংহভাগ লুটপাটে জড়িত ছিলেন। তাই বছরের পর বছর জলাবদ্ধতায় ভোগা মানুষেরা দীর্ঘদিন স্থায়ী সমাধানে টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) চালু ও আমডাঙ্গা খাল সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ