ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে আয় তিন লাখ, পড়ছেন জার্মানিতে
Published: 18th, February 2025 GMT
সাব্বির হোসাইন। সুনামগঞ্জের নারায়ণপুরে জন্ম। জীবনসংগ্রামের সঙ্গে পরিচয় ঘটে ছোটবেলাতেই। ২০১৯ সালের আগপর্যন্ত এই সংগ্রামের সঙ্গেই জীবন জড়িয়ে গিয়েছিল। পকেটে একটা টাকাও নেই—বন্ধুর সঙ্গে রাস্তায় হেঁটেছেন মাইলের পর মাইল। মাঝেমধ্যে কোনোভাবে পকেটে খুচরো কিছু টাকা চলে এলেও তা নিয়ে উল্টোপাল্টা খরচ করতেন না সাব্বির। সেই টাকায় মুঠোফোনে নেট কিনে টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখতেন। সেই সময়েই বাস্তবতা তাঁকে শিখিয়েছিল—পকেটশূন্য মানুষের কাছে পৃথিবী বড় ধূসর। আর এখন নিজে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করেন। সেই টাকায় পড়তে গেছেন জার্মানিতে।
২০১৮ সালে ইন্টারনেটের সেবা এমন সহজলভ্য ছিল না। ঘরে ঘরে ইন্টারনেট, ওয়াই–ফাই দুর্লভ ছিল। ইন্টারনেট চালানোর সবচেয়ে সহজ মাধ্যম ছিল মুঠোফোনে এমবি কেনা। কিন্তু শুধু এমবি কিনলেই তো হতো না। ইন্টারনেট–সংযোগ ছিল না। থাকলেও সমানভাবে নেটওয়ার্ক পাওয়া যেত না সব জায়গায়। ঠিকভাবে ইন্টারনেট পেতে অনেক সময় মুঠোফোন জানালার সামনে রেখে দিতে হতো। তবু লেগে ছিলেন সাব্বির। হাতে টাকা এলেই মুঠোফোনে এমবি কিনে ফ্রিল্যান্সিংয়ের টিউটোরিয়াল দেখার সেই নেশাই আজ তাঁর দারিদ্র্য দূর করেছে, তাঁকে সফলতা দিয়েছে।
মাঝেমধ্যে জীবনের এমন সব বাঁকে সাব্বির নিজেকে আবিষ্কার করেছিলেন, মনে হয়েছিল, সব শেষ বুঝি। যেমন ২০১৬ সালে এইচএসসি পরীক্ষার পর আর্থিকভাবে প্রচণ্ড দুরবস্থার মধ্যে পড়ে তাঁর পরিবার। পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে সাব্বিরকেই জীবনসংগ্রামে নেমে যেতে হয়। নিরুপায় হয়ে সুনামগঞ্জ শহরে টুকটাক টিউশনির পাশাপাশি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটা খণ্ডকালীন প্রকল্পে ঢুকে পড়েন তিনি।
ডেটা এন্ট্রির প্রজেক্টে কাজ। কাজটি করার সুযোগ এসেছিল এক মামার হাত ধরে, ২০১৮ সালের শুরুর দিকে। সাব্বিরের কাছে কাজ করার জন্য কোনো যন্ত্রও ছিল না সে সময়। সেই মামা তাঁকে একটি ল্যাপটপ জোগাড় করে দেন। সেটি দিয়ে কয়েক মাস জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কাজ চালিয়ে যান তিনি।
এ প্রকল্পে কাজ করার সময় ইমন নামের এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় সাব্বিরের। ইমনের কাছ থেকেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের প্রথম ধারণাটা পান সাব্বির। যদিও প্রথমবার তাঁর বলা অনেক কথাই বুঝতে পারেননি সাব্বির, তবে তিনি টের পেয়েছিলেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ের মধ্যে তাঁর একটা আলাদা আগ্রহ কাজ করে। তাই ইমনের প্রতিটি কথা খাতায় নোট করে রাখতেন। তাঁর মাধ্যমেই গ্রাফিকস ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মতো বিষয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় সাব্বিরের।
ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে সাব্বিরের আগ্রহ ধীরে ধীরে আরও বাড়তে থাকে। বলা যায়, অন্তরে লুক্কায়িত বীজ মহিরুহ হয়ে ওঠে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের নানা সেমিনার ও ওয়ার্কশপে যেতে শুরু করেন তিনি। সেই সঙ্গে ফ্রিল্যান্সিং-সম্পর্কিত প্রচুর ভিডিও দেখতে থাকেন। ধীরে ধীরে আস্থা পান, অনলাইনে কাজ করে আয় করার বিষয়টা মোটেও মিথ্যা নয়। স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তখন থেকেই।
নিজের বাসা পাকা করেন যখন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
বিগত তিন নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা ডিসিদের ওএসডি, বাধ্যতামূলক অবসরের সিদ্ধান্ত
বিগত তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনে (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত) দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) মধ্যে যাঁদের চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে, তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আর যাঁদের চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হয়নি, তাঁদের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হবে।
এর মধ্যে চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হওয়া ২২ জন সাবেক ডিসিকে আজ বৃহস্পতিবার বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
আজ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান।
এর আগে গতকাল বুধবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরে কর্মরত যুগ্ম সচিব ও সমপর্যায়ের পদে থাকা প্রশাসনের ৩৩ কর্মকর্তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে সরকার। তাঁরা ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
আরও পড়ুন২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা ৩৩ জন সাবেক ডিসিকে ওএসডি২০ ঘণ্টা আগে