জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সি’ ইউনিটে প্রথম হলেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী লাবিব
Published: 18th, February 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের (৫৪তম ব্যাচ) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ‘সি’ ইউনিটে ছেলেদের সমন্বিত মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন লাবিব হাসান রিদওয়ান। তিনি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।
লাবিব হাসান রিদওয়ান নোয়াখালীর চাটখিল পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাকিব উদ্দিনের সন্তান। বাবা রাকিব উদ্দিন উপজেলার হীরাপুর আলিম মাদ্রাসার আরবি বিষয়ের একজন প্রভাষক এবং মা কামরুন নাহার হোমিও চিকিৎসক।
লাবিব হাসান রিদওয়ান নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার দারুল আরকাম দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে জিপিএ-৫ নিয়ে দাখিল ও রাজধানীর ডেমরার দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে জিপিএ-৫ নিয়ে আলিম পাস করেন। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে লাবিব হাসান রিদওয়ান বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার মা-বাবা আমাকে অনেক সহায়তা করেছেন, সাহস জুগিয়েছেন। শিক্ষকেরাও আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়। ১৭ ফেব্রুয়ারি ‘বি’ ইউনিটভুক্ত সমাজবিজ্ঞান অনুষদের পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শেষ হয় এ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা।
আরও পড়ুনরোমানিয়ায় বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা, সুযোগ-সুবিধা ও আবেদনের পদ্ধতি জেনে নিন৯ ঘণ্টা আগেজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ১ম বর্ষের ‘বি’, ‘সি’ ইউনিটভুক্ত কলা ও মানবিকী অনুষদ, আইন অনুষদ ও তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট এবং ‘সি১’ ইউনিটভুক্ত নাটক ও নাট্যতত্ত্ব এবং চারুকলা বিভাগ, ‘ডি’ ইউনিটভুক্ত জীববিজ্ঞান অনুষদ, ‘ই’ ইউনিটভুক্ত বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ, ‘এ’ ইউনিটভুক্ত গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদ ও ‘আইবিএ-জেইউ’র ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
ফল দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুনজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা, ‘বি’, ‘সি’ ও ‘সি ১’ ইউনিটের ফল প্রকাশ, দেখুন এখানে৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ব ব হ স ন র দওয় ন শ ক ষ বর ষ বর ষ র পর ক ষ ইউন ট
এছাড়াও পড়ুন:
লিবিয়ায় দালাল চক্রের নির্যাতনে মৃত্যু, ইতালি যাওয়া হলো না রাসেলের
পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে ভিটেমাটি বিক্রি করে প্রবাসে পাড়ি জমান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার তরুণ মো. রাসেল মিয়া (২৫)। অবৈধপথে দালালের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে তাঁর ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। তবে তার আগেই দালাল চক্রের নির্যাতনে লিবিয়ায় গতকাল শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন।
আজ শনিবার দুপুরে এক প্রবাসীর মাধ্যমে রাসেলের মৃত্যুর খবর জানতে পারে পরিবার। নিহত রাসেল নাসিরনগর উপজেলার ধরমণ্ডল ইউনিয়নের ধরমণ্ডল গ্রামের লাউস মিয়া ও আউলিয়া বেগমের বড় ছেলে।
রাসেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঁচ ভাই–বোনের মধ্যে রাসেল ছিল সবার বড়। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে ইতালি যাওয়ার জন্য লিবিয়ায় পাড়ি জমান তিনি। পরিবারের শেষ সম্বল পৈতৃক ভিটা বিক্রি করে ও স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মোট ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একই গ্রামের দালাল লিলু মিয়ার মাধ্যমে তিনি লিবিয়ায় যান। কথা ছিল লিবিয়া থেকে তাঁকে ইতালিতে পাঠানো হবে। কিন্তু লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর তাঁকে স্থানীয় দালাল চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় নির্যাতন। দালাল চক্র রাসেলকে নির্যাতন করে ভিডিও বাংলাদেশে পাঠিয়ে পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন দফায় আরও ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। সর্বশেষ কয়েক দিন আগে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করে চক্রটি; কিন্তু টাকা দিতে না পারায় দালাল চক্রের সদস্যরা তাঁকে নির্যাতন করা শুরু করেন। এতে গতকাল শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়। আজ দুপুরে এক প্রবাসীর মাধ্যমে স্বজনেরা তাঁর মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারেন।
রাসেলের বাবা আউয়াল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জীবনের শেষ সম্বল বসতভিটা ও ফসলি জমি বিক্রি কইরা কয়েক ধাপে ৫০ লাখ টাকা দিছি। আরও টাকা চাইত। দিতে না পারায় আমার ছেলেরে হত্যা করছে দালাল লিলু মিয়া ও মাফিয়া চক্র।’ তিনি বলেন, ‘লিবিয়ায় যাওয়ার পর ছেলের কপালে জোটে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। মাফিয়া চক্র রাসেলকে নির্যাতন করে একাধিকবার ভিডিও পাঠিয়ে তাঁদের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। আরও ১০ লাখ টাকা চেয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে ছেলেকে হত্যা করেছে।’
রাসেলের মৃত্যুর বিষয়টি জানাজানির পর গণমাধ্যমকর্মীরা ধরমণ্ডল গ্রামের দালাল লিলু মিয়ার বাড়িতে গেলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে পরিবার নিয়ে তিনি পলাতক। একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন না ধরায় লিলু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ধরমণ্ডল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, রাসেলকে বাঁচাতে তাঁর পরিবার প্রায় ৫০ লাখ টাকা দিয়েছে। কিন্তু টাকা দিয়েও ছেলেকে বাঁচাতে পারেনি। যারা মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। যাতে রাসেলের মতো আর কোনো তরুণের অকালে মরতে না হয়।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, স্থানীয় বিভিন্ন মাধ্যমে ওই তরুণের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরেছেন। ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।