চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার–সংলগ্ন সড়কে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সংগঠক সজিব আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী জোহান আরাজ খান, ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলি।

আরও পড়ুনচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী বহিষ্কারের প্রতিবাদে ১৫৪ নাগরিকের বিবৃতি৭ ঘণ্টা আগে

মানববন্ধনে ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলি বলেন, ‘অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে যাঁরা অভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাঁরা যদি মব জাস্টিসের শিকার হন, সেটা আসলে নতুন করে ফ্যাসিস্ট শক্তি এবং সাম্প্রদায়িক পুরুষতান্ত্রিক শক্তির উত্থান বলে আমরা চিহ্নিত করি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ ঘটনায় তাঁর শিক্ষকতা করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন। যদি তাঁকে সরিয়ে না দেওয়া হয় এবং চবির শিক্ষার্থীদের দুই দফা দাবি মেনে না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা সব কটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধভাবে চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলব।’

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরকে শারীরিক লাঞ্ছনা, ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির এক সভায় ১২ ছাত্রীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়। এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জননেত্রী শেখ হাসিনা হলে ছাত্রীদের সঙ্গে প্রক্টরিয়াল বডির বাগ্‌বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। ওই হলের সামনে রাখা নৌকা আকৃতির বসার স্থান ভাঙচুর করতে যাওয়া কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিতণ্ডাও হয় আবাসিক ছাত্রীদের। পাশাপাশি এ সময় ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে যাওয়া সাংবাদিকদেরও লাঞ্ছনার অভিযোগ ওঠে।

আরও পড়ুনপ্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল১৮ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ জুলাই গণহত্যার বিচার দাবি শহীদদের স্বজনদের

অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রথমে খুনি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময়সহ বিগত ১৫-১৬ বছরে দলটি যে গুম-খুন-হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তার বিচার করতে হবে। এরপরে দেশে সংস্কার করতে হবে। আর সংস্কার শেষ করার পরেই হবে নির্বাচন। এর আগে নির্বাচন হলে, আর আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা হলে, তা হবে জুলাই-২৪-এর শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা। জুলাই-২৪-এর গণহত্যার বিচার ত্বরান্বিত এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনের আয়োজক ‘জুলাই-২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটি’।

মানববন্ধনে শহীদ শাহরিয়ার হাসানের বাবা আবুল হাসান বলেন, শহীদদের হত্যার বিচার হচ্ছে না। বিচার নিয়ে টালবাহানা চলছে। বিচারের নামে ঘুম পাড়ানোর গান শোনানো হচ্ছে। আট মাস পরও সন্তান হত্যার বিচারের জন্য কেন রাস্তায় দাঁড়াতে হবে? দেশে যদি খুনি হাসিনা থাকত, ২০৩০ সালের আগে কেউ নির্বাচনের কথা ভাবতে পারত না। অথচ আজ নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মরিয়া হয়ে উঠেছে। ঐক্য হবে, সংস্কার হবে, নির্বাচন হবে, কিন্তু আগে প্রত্যেকটা হত্যাকাণ্ডের বিচার বাংলার জমিনে দৃশ্যমান হতে হবে।

শহীদ সায়েমের মা শিউলী আক্তার বলেন, শহীদ সন্তানদের হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হবে না। শহীদদের রক্তের সঙ্গে কোনো বেইমানি করা যাবে না। কী করে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগকে এ দেশে আনার জন্য বলা হয়? আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে দিতে হবে। এখনো সন্তান হত্যার বিচার হচ্ছে না। কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। অথচ শত শত ছেলেদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। কীভাবে এখন নির্বাচনের কথা বলা হয়? আগে বিচার করতে হবে। পরে সংস্কার করে নির্বাচন।

শহীদ আহনাফের মা জারতাজ পারভীন বলেন, একটা সন্তান হত্যারও বিচার এ সরকার এখন পর্যন্ত করতে পারেনি। যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের একজনেরও যদি ফাঁসি হতো, তাহলে তাঁরা এই সরকারকে নিজেদের সরকার ভাবতে পারতেন। তাঁদের সন্তানেরা আওয়ামী লীগকে উৎখাত করার জন্য রাস্তায় নেমেছিল। দরকার হলে শহীদ পরিবারগুলো সন্তান হত্যার বিচারের জন্য আবার রাস্তায় নামবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতেই হবে।

সন্তান হত্যার বিচার দাবি করেন জুলাই-২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটির চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা যেভাবে আপনাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছি, আপনারা কোনো সম্মান আমাদের করেননি।’

গোলাম রহমান আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কাছে বিনীত অনুরোধ, আমাদের ছেলেরা দেশের জন্য যে শহীদ হয়েছে, তারা কী অন্যায় করেছে? নতুন বাংলাদেশ যে গড়তে যাচ্ছেন, নতুন বাংলাদেশ তো গঠন হচ্ছে না। পুরাতন বাংলাদেশের চাইতে আরও খারাপ বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি।’

মানববন্ধনে শহীদদের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা মানববন্ধন শেষে স্মারকলিপি দিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান। ট্রাইব্যুনালের ফটকে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। পরে তাঁরা ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের সঙ্গে সাক্ষাতের দাবি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাহাঙ্গীরনগর-সংলগ্ন মহাসড়কে চলন্ত বাসে ছিনতাই, চালকসহ আটক ৩
  • মিছিল নিয়ে অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে শহীদ পরিবার, চিফ প্রসিকিউটরের পদত্যাগ দাবি
  • আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ জুলাই গণহত্যার বিচার দাবি শহীদদের স্বজনদের
  • বাংলাদেশের নারীদের নিরাপত্তার দাবিতে বার্লিনে মানববন্ধন
  • কুমিল্লায় শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন অভিযোগ, বিচার চেয়ে বিক্ষোভ
  • জাবিতে মেট্রোরেলের স্টেশন দাবি শিবিরের 
  • ঝিনাইদহে ৫ দাবিতে মউশিক শিক্ষকদের মানববন্ধন
  • সংশপ্তক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
  • কুমেক হাসপাতালে সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অপহরণের ৬ দিন পর উদ্ধার ব্যবসায়ী নয়ন দাস, গ্রেপ্তার ৫