Samakal:
2025-02-21@18:36:52 GMT

ইতিহাস বিখ্যাত ৫ প্রেমের গল্প

Published: 18th, February 2025 GMT

ইতিহাস বিখ্যাত ৫ প্রেমের গল্প

প্রেম-ভালোবাসা ঘিরে কিংবদন্তীর শেষ নেই। সেসব আজো গল্পে কিংবা গানে আমাদের রোমাঞ্চিত করে। অনেক প্রেম অবশ্য যুদ্ধও ডেকে এনেছে।

সবচেয়ে বিখ্যাত ‘সমকামী যুগল’
আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট ও তার উপদেষ্টা হেফায়েস্টিয়নের সম্পর্ক নিয়ে আছে অনেক গল্পগাঁথা। বলা হয়, তারা একই বিছানায় ঘুমাতেন। আর এ নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে রয়েছে মতপার্থক্য। ঐতিহাসিকদের দাবি, হেফায়েস্টিয়নের মৃত্যুতে আলেকজান্ডার ভেঙে পড়েন। রাজ্যে উৎসব বাতিল করেন, শোকে একটি নৃ-গোষ্ঠীর উপর গণহত্যা চালান, হেফায়েস্টিয়নের ব্যক্তিগত চিকিৎসককে যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করেন। যদিও এসব তথ্য ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত নয়।

ক্লিওপেট্রা ও সিজার: প্রেম ও রাজনীতি
৪৮ খ্রিষ্টপূর্বে প্রাচীন মিশরে সাম্রাজ্য নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বে জড়ান ক্লিওপেট্রা। রোমের সমর্থন আদায় করতে গিয়ে জেনারেল জুলিয়াস সিজারের সঙ্গে প্রেমে জড়ান তিনি। সিজার তার সেনাদের দিয়ে গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে ক্লিওপেট্রাকে বিজয় এনে দেন। রোমে দুজন একইসঙ্গে বসবাস করতে থাকেন। সম্পর্কের ইতি ঘটে ৪৪ খ্রিষ্টপূর্বে সিজার হত্যাকাণ্ডের শিকার হলে৷ ক্লিওপেট্রা অবশ্য রোমে আরেক প্রেমে জড়িয়ে পড়েন পরে।

হেলোইস-অ্যাডেলার্ড: মধ্যযুগের খ্যাতনামা যুগল
পিটার আডেলার্ড ১২ শতকে গোটা ইউরোপের সবচেয়ে প্রাজ্ঞ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সে সময়ের প্যারিসের সুন্দরী ও বুদ্ধিমান তরুণী হেলোইসের প্রেমে পড়েন তিনি। তার ব্যক্তিগত শিক্ষক হয়ে শুধু বিজ্ঞান নয়, প্রেমের শিল্পকলায়ও দীক্ষা দেন আডেলার্ড। তার বুদ্ধিমত্তায় মুগ্ধ অ্যাডেলার্ড ছাত্রদের কাছে গল্প করেন। আডেলার্ড আর হ্যালোইসের প্রেম ও বিয়ের গল্প গোটা প্যারিসে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও শেষটায় এই সম্পর্ক বিয়োগান্তক রূপ নেয়।

শাহজাহান-মমতাজ: প্রেমের সৌধ
১৫ বছর বয়সে প্রথম দেখায় আরজুমান্দ বানু বেগমের প্রেমে পড়েন রাজপুত্র খুররাম, যিনি পরবর্তীতে মুঘল সম্রাট শাহজাহান হিসেবে খ্যাতি পান। আরজুমান্দ বানুর বয়স তখন ১৪। পাঁচ বছর পরে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আরজুমান্দ পরিচিত হন মমতাজ মহল নামে। ১৪ তম সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে তিনি মারা যান। আগ্রায় মমতাজের জন্য যে স্মৃতিস্তম্ভ গড়েন শাহজাহান তা আজও বিশ্বের মানুষের কাছে বিষ্ময় আর ভালোবাসার অনিন্দ্য প্রতীক।

বাডার-এনস্লিন: আমৃত্যু প্রেম
১৯৬৭ সালে বার্লিনে ছাত্র আন্দোলনে পরিচয় গুড্রুন এনস্লিন ও আন্দ্রেয়াস বাডার। ১৯৬৮ সালে দুটি ডিপার্টমেন্ট স্টোরে হামলা চালিয়ে গ্রেপ্তার হন তারা। বিচার ছাপিয়ে এই যুগলের প্রেম তখন গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়। ৭০-এর দশকে বাডার-মাইনহোফ গ্রুপের সন্ত্রাস পশ্চিম জার্মানিকে কাঁপিয়ে দেয়। ১৯৭২ সালে আবার গ্রেপ্তার হয় এই যুগল। ১৯৭৭ সালের অক্টোবরে কারাপ্রকোষ্ঠে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ভোগান্তি লাঘবে ব্যবস্থা লউন

গরমে বিদ্যুতের লোডশেডিং স্বাভাবিক ঘটনা হইলেও এইবার উহা অস্বাভাবিক হারে দেখা দিবার আশঙ্কা তৈয়ার হইয়াছে। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থ সংকটে জ্বালানি আমদানি ব্যাহত হইবার কারণে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করিতে পারে। বিশেষত আসন্ন রমজান মাসে গরম বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাইবে। তৎসহিত সেচ মৌসুম যুক্ত করিলে ধারণা করা কঠিন নহে, মার্চ-এপ্রিল হইতে বিদ্যুতের চাহিদা হইবে দেড় গুণ। অতিরিক্ত চাহিদা পূরণে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করিলেও উহা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নহে। 

বিশেষ করিয়া অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করিতে হইলে বেসরকারি খাত হইতে বিদ্যুৎ সরবরাহ জরুরি। কিন্তু ইতোমধ্যে বেসরকারি খাতে সরকারের বিপুল ঋণ রহিয়াছে। সেই কারণে অর্থ সংকটে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা প্রাথমিক জ্বালানি ফার্নেস অয়েল ও কয়লা আমদানিতে হোঁচট খাইতেছে; গ্যাস খাতের পরিস্থিতিও তথৈবচ। বকেয়া ও ডলার সংকটে এলএনজি আমদানি ব্যাহত হইতে পারে। অন্যদিকে দেশীয় উৎস হইতেও গ্যাসের জোগান হ্রাস পাইতেছে। সকল কিছু মিলাইয়া এইবার গরমে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন যে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়িবে, উহা বলিবার অপেক্ষা রাখে না।

ইহা স্পষ্ট, সরকার জ্বালানি সাশ্রয় নীতির উপর গুরুত্ব দিয়াছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ইতোমধ্যে সতর্ক করিয়াছেন, আগামী গ্রীষ্ম মৌসুমে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র-এসি ব্যবহার করিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ, তৎসহিত আইনগত ব্যবস্থাও লওয়া হইবে। সরকারের হিসাব অনুসারে, এসির কারণে প্রায় চার সহস্র মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হইয়া থাকে, যথায় উহার তাপমাত্রা ২৫-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ব্যবহার করিলে অন্তত দুই সহস্র মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় সম্ভব হইবে। এই লক্ষ্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা প্রদান করিবেন, ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা মসজিদের ইমামদের অনুরোধ করিবেন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব সচিবালয়সহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরে এই নীতি কার্যকর করিবেন।

আমরা মনে করি, জ্বালানি সাশ্রয়ের এই নীতি নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী এবং মানুষ যাহাতে এই ক্ষেত্রে সচেষ্ট থাকে তজ্জন্য বিদ্যুৎ অপচয় রোধেও বৎসরব্যাপী সরকারকে প্রচার-প্রচারণা চালাইতে হইবে; কেবল জ্বালানি সাশ্রয়ের নীতি গ্রহণে বিদ্যুতের সংকট কাটিবে না। রমজান মাস হইতে বিদ্যুতের অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করিতে হইলে উৎপাদন বৃদ্ধির বিকল্প নাই। জ্বালানি উপদেষ্টা সরকারের আর্থিক সংকটের কথা স্বীকার করিয়াছেন বটে, তবে এই লক্ষ্যে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কার্যকর ভূমিকা রাখিবে বলিয়াই আমাদের বিশ্বাস। ইতিপূর্বে আমরা দেখিয়াছি, গ্রামে ভয়াবহ লোডশেডিং হইলেও শহরবাসী বেশি সুবিধা ভোগ করিত। এইবার সরকার শহর ও গ্রামে সমান হারে এই লোডশেডিং বণ্টন করিবার ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়াছে। আমরা চাই, এই ক্ষেত্রে রুটিন করা হউক; কোথায় কখন বিদ্যুৎ যাইবে সেইভাবে রুটিন মানিলে উহাতে মানুষের ভোগান্তি কিছুটা হ্রাস পাইবে।

অস্বীকার করা যাইবে না, গত সরকারের জ্বালানি খাতের ভুল নীতির প্রভাব অন্তর্বর্তী সরকারের উপরেও পড়িয়াছে। জ্বালানি খাতের নিরাপত্তায় দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করিবার বিকল্প নেই। কিন্তু আসন্ন রমজান মাস ও সেচ মৌসুমের কথা চিন্তা করিয়া সরকারকে আপাত ব্যবস্থারূপে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করিতে জ্বালানি আমদানি করিতেই হইবে। মনে রাখিতে হইবে, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি না করিলে শিল্প উৎপাদনও ব্যাহত হইবে। তজ্জন্য জ্বালানি চাহিদার আলোকে জরুরি ভিত্তিতে জোগান দিতে সরকারকে সচেষ্ট হইতে হইবে। ইহাকে অগ্রাধিকার দিয়া এখনই ব্যবস্থা লওয়া জরুরি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ