রেললাইনে উঠে বন্ধ হয়ে গেল বিয়ের গাড়ি, পরে ট্রেনের ধাক্কায় খাদে
Published: 18th, February 2025 GMT
বরের জন্য একটি প্রাইভেট কার ফুল দিয়ে সাজিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথে রেলক্রসিং পারাপারের সময় গাড়িটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়া চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস প্রাইভেট কারটিকে ধাক্কা দেয়। এতে গাড়িটি খাদে পড়ে যায়। গাড়ির ভেতরে থাকা চালক আহত হন।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ রেলস্টেশনসংলগ্ন শাহ মালুম মাজারের পাশের রেলক্রসিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত মো.
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিলেট শহর থেকে আজ সকালে বরকে বিয়ের আসরে নেওয়ার জন্য একটি প্রাইভেট কার ফুল দিয়ে সাজানোর পর ফেঞ্চুগঞ্জে নেওয়া হচ্ছিল। প্রাইভেট কারটি ফেঞ্চুগঞ্জ রেলস্টেশন এলাকা দিয়ে শাহ মালুম মাজারের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। পথে রেললাইন পেরিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ গাড়িটির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় গাড়িটি রেললাইনের ওপর থেকে সরানো যাচ্ছিল না। অন্যদিকে সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়া চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা প্রাইভেট কারটিকে একই সময়ে ধাক্কা দেয়। এতে গাড়িটি রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। প্রাইভেট কারটি দুমড়েমুচড়ে চালক আহত হন। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা এগিয়ে এসে চালককে উদ্ধার করে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
স্থানীয় বাসিন্দা রুমেল আলী বলেন, রেলক্রসিংটি দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত অবস্থায় আছে। একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন দাবি তুললেও এতে গেটম্যান বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ওই এলাকায় প্রায়ই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। তবে আজ মঙ্গলবার কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিনরুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় আহত প্রাইভেট কারের চালককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেটে পাঠানো হয়েছে। প্রাইভেট কারটি উদ্ধারের তৎপরতা চলছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে: টিউলিপ
বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি ও ও সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আপনারা বুঝবেন যে, এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারকে কোনো প্রসঙ্গ বা মন্তব্যের মাধ্যমে আমি বিশেষ গুরুত্ব দিতে পারি না। এটা পুরোপুরি আমাকে হয়রানি করার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। এমন কোনো প্রমাণ নেই যে আমি ভুল কিছু করেছি।’ খবর-বিবিসি
বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে সোমবার লন্ডনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষগুলোর কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। পুরোটা সময় তারা মিডিয়া ট্রায়াল চালিয়েছে। আমার আইনজীবীরা উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছিলেন। তবে তারা কখনও এর জবাব দেয়নি।’
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা তিনটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা পৃথক তিন মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে রোববার এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব। আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল কিনা, সে-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত। ১০ কাঠা প্লট নেওয়ার অন্য অভিযোগে শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের একজন সহকারী পরিচালক। মামলায় শেখ হাসিনা, টিউলিপসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়।
এর আগে জানুয়ারির মাঝামাঝিতে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপের খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠায় টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
সম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগকে তদন্তের আহ্বান জানান টিউলিপ। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।
টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস তার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি। কেয়ার স্টারমার অফিসিয়াল চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিককে বলেন, ‘আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার সময় এটা পরিষ্কার করতে চাই যে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস আমাকে আশ্বস্ত করেছেন- তিনি আপনার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি এবং আর্থিক অসঙ্গতির কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি।’