এই সময়ে মিডিয়ায় অস্থির সময় যাচ্ছে। এটি নিয়ে নানা অনুষ্ঠান আয়োজনে কথাও বলছেন শিল্পীরা। সম্প্রতি একটি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলে এক সেলিব্রেটি শোতে মিডিয়ার অসঙ্গতি তুলে ধরেন নন্দিত অভিনেত্রী তানজিকা আমিন।

এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি হাঁটছি , কী খাচ্ছি কোথায় যাচ্ছি-এ নিয়ে  রিল হচ্ছে।  এখনতো রিল বানিয়েই অনেকে তারকা হয়ে যাচ্ছেন।  তারপরে দুই লাখ, চার  লাখ টাকা করে হাকাচ্ছেন। এটা তো আমরাও করতে পারি। একটি ছেলেকে সঙ্গে রেখে দিয়ে  ভিডিও করলেই তো হয়। এতদিন যারা অভিনয় শিখে এসেছে তারা পাচ্ছে একটি নাটকে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। তাদের কোন মূল্য নেই। যার ভিউ যত বেশী তখন তাদের কাজে নেওয়া হচ্ছে । তাদের অভিনীত ফিকশনের ছোট ছোট রিল করে যখন ফেসবুক বা অন্যান্য মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে ভিউ বেড়ে যাচ্ছে। ওই শিল্পীরা একটা নাটকের গল্পও বলতে পারবে না। 

মিডিয়ার দুরবস্থার কারণে অনেক অভিনয়শিল্পী আভিনয় থেকে দুরে চলে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন , ‘ একটি প্ল্যাটফর্ম ধরুন ‘এক্স’। সেখানে একজন অভিনয়শিল্পী কাজ করেছেন তার নামও এক্স। ওই প্ল্যটফর্মের বানানো তিনটি প্রডাকশন ফ্লপ করলো। অডিয়েন্স দেখলো না। পরবর্তী প্রডাকশনগুলোও ওই শিল্পীকে নিয়ে করা হচ্ছে। ভিউ চক্রের কারনেই এমনটি হচ্ছে। এই ব্যাপারটার জন্য অনেক ভালো অভিনয়শিল্পী পেছনে পড়ে যাচ্ছেন। অনেকে আবার রাগে ক্ষোভে ইন্ডাষ্ট্রি থেকে চলে যাচ্ছেন। ইন্ড্রাষ্ট্রি যখন এককেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে।  এটি চলতে থাকলে তো ইন্ড্রাষ্ট্রি হয়ে দাঁড়াবে না। এটি তো প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে ইন্ড্রাষ্ট্রি ছোট হচ্ছে, ন্যারো হচ্ছে। 

গত বছরেরর শেষের দিকে নতুন জীবন শুরু করেছেন তানজিকা। বিয়ে করেছেন অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাইফ বসুনিয়াকে। ছয় বছর আগে তাদের পরিচয় ছিল। এপরপর বন্ধুত্ব। পরে বিয়ে। তানজিকার স্বামী ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে থাকেন। বিয়ের পর অভিনয় ছাড়বেন কিনা, এমন প্রশ্নও উঠে। এ বিষয়ে তাঁর ভাষ্য, ‘অভিনয় আমার প্রাণের জায়গা। ঢাকা আমার প্রাণের শহর। ফলে দুটোর কোনোটিই ছাড়ছি না। তবে কিছু কারণে আমাকে তো যাওয়া আসার মধ্যে থাকতে হবে। তানজিকার কথা যে সত্য তা প্রমাণ মেলে। কাজও করছেন সমানতালে। ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচার শুরু হবে তার অভিনীত ধারাবাহিক অনলাইন,অফলাইন-সিজন টু। এটি পরিচালনা করেছেন সাগর জাহান। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমার লোকজন খাজনা ওঠাবে, বাধা দিলে ভয়াবহ পরিণতি’

নীল পাঞ্জাবি পরা একজন সবার সামনে। তার পেছনে একদল লোক। তাদের মাথাসহ মুখ লাল গামছায় বাঁধা। কারও হাতে রামদা, কারও হাতে বাঁশের লাঠি। ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দিয়ে পাঞ্জাবি পরা লোকটির নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। আতঙ্কে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছে সাধারণ মানুষ।

আজ শনিবার বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার এমসি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। অস্ত্রের মহড়ায় নেতৃত্বে দেওয়া নীল পাঞ্জাবি পরিহিত লোকটি শ্রীপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু। শুধু মহড়া নয়, প্রকাশ্যে বাজারের দোকানিদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা-পয়সা লুট করে তার লোকজন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়। এভাবে অস্ত্রের মহড়া ও চাঁদাবাজির ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনা জানাজানির পর গতকালই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, শ্রীপুরের তেলিহাটী ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে তার নেতৃত্বে অর্ধশত সন্ত্রাসী এমসি বাজারে সশস্ত্র মহড়া দেয়। মাঝে মধ্যে ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও শুনতে পাওয়া যায়। তখন আতঙ্কে সাধারণ মানুষ নিরাপদ স্থানে চলে যান। 

১ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, মহাসড়কের ওপর চেয়ারে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডমাইক নিয়ে কথা বলছেন জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু। তাঁর লোকজনের ‘জাহাঙ্গীর ভাইয়ের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান থামলে তিনি বলেন, ‘প্রিয় দোকানদার ভাইয়েরা, আমি জেল থেকে এসে ঘোষণা দিয়েছিলাম, এমসি বাজারটাকে আমি আমার নিজস্ব লোক ও আপনাদের সহযোগিতার সুন্দরভাবে পরিচালনা করব। কিন্তু কিছু মানুষের জন্য আমি পারি নাই। আজকে লোকজন নিয়ে এসেছি। আজকের পর থেকে আমি জাহাঙ্গীর যত দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকি, তত দিন পর্যন্ত আমার নিয়ন্ত্রণে চলবে এমসি বাজার এবং আপনাদের দয়া করে বলছি, এখন এই মুহূর্তে আমার লোকজন খাজনা ওঠানো শুরু করবে। কেউ বাধা দেবেন না। বাধা দিলে ভয়াবহ পরিণতি হবে।’ 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুবদলের এক নেতা জানান, মহড়া দিয়ে পুরো এমসি বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে পিন্টু। অন্তত ১০০ দোকান থেকে চাঁদা আদায় করে তার সন্ত্রাসী বাহিনী। তাদের কাছে বিদেশি পিস্তলও ছিল। তবে গুলি ছোড়েনি। 

আব্দুল লতিফ নামে বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, বিকেলে হঠাৎ লোকজন নিয়ে এসে বক্তব্য দেয় পিন্টু। এর কিছুক্ষণ পর রামদার ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়। সন্ত্রাসীরা ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রের মহড়া দিল, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে দেখলাম না।

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু বলেন, ‘আমি টেহা পয়সা উঠাইনি। এগুলো আমাকে হেয় করার জন্য করা হয়েছে। যারা আমার বাড়ি ভাঙচুর করছিল, অফিস ভাঙচুর করছিল, তাদের খুঁজতে গেছিলাম। না পেয়ে চলে আসছি।’

জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান মোল্লাহ সমকালকে জানান, ঘটনার পরপরই যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্বাক্ষরে জাহাঙ্গীর আলম পিন্টুকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, যুবদল নেতার বক্তব্য ও মহড়ার ভিডিও পেয়েছি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ