অধ্যক্ষের বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নগরের চাষাঢ়া এলাকায় তাঁরা এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের অনুরোধে তাঁরা সড়ক অবরোধ তুলে নেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, ১২ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে বদলির আদেশ হয়। এই বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে গত রোববার শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেন। পরে তাঁরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর অধ্যক্ষের বদলির আদেশ বাতিল চেয়ে লিখিত আবেদন জমা দেন। আজ মঙ্গলবার একই দাবিতে শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চাষাঢ়া সান্ত্বনা মার্কেটের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।

নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে চাষাঢ়ায় সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে নগরীতে যানজটের সৃষ্টি হয়। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ না করে ইউএনওর সঙ্গে আলোচনা করার জন্য বললে তারা অবরোধ তুলে নেয়।’

ইউএনও জাফর সাদিক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ শিক্ষার্থীদের বোঝানোর পর তারা সড়ক ছেড়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা এলে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আজ ছুটিতে আছি। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। আমি অধ্যক্ষ ছাড়াও ইংরেজির অধ্যাপক। অধ্যক্ষ হওয়ার পরও আমি শ্রেণিকক্ষে গিয়ে ইংরেজির ক্লাস নিতাম। হয়তো তারা এসব কারণে আমার প্রতি ভালোবাসা থেকে এসব করছে। আমি সরকারি চাকরি করি, বদলির সরকারি আদেশ হয়েছে, সরকারি আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ কল জ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

লাশ পুতে রেখে জায়গাটি ঘুরে ঘুরে পাহারা দেয় ইয়াসিন

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার মিজমিজিতে স্ত্রী-সন্তানসহ তিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার ইয়াছিন। বুধবার পুলিশ চার দিনের রিমান্ডের পর তাকে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মাদ শামসুর রহমানের আদালতে হাজির করে। এ সময় ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ইয়াছিন জবানবন্দী দিয়েছেন বলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান জানিয়েছেন।

স্ত্রী লামিয়া আক্তার, চার বছরের সন্তান আব্দুল্লাহ লাবীব ও লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না আক্তারকে ইয়াছিন একাই হত্যা করেছেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ শাহীনুর আলম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের রাস্তায় ইট-সুরকির নিচে চাপা দেন তিনি।

ইয়াসিনকে গ্রেপ্তারের পর আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলেও চার দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল বুধবার তাকে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠায় পুলিশ। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সোমবার বাড়ির কাছের একটি পুকুর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা বটি উদ্ধার করে পুলিশ। একই পুকুর থেকে রক্তমাখা জামা-কাপড় ভরা একটি ব্যাগও উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি মোহাম্মাদ শাহীনুর আলম বলেন, ইয়াসিনের স্ত্রী লামিয়া, তাদের সন্তান আব্দুল্লাহ ও স্বপ্নার লাশ গত ১১ এপ্রিল উদ্ধার করা হয়। একই দিন গ্রেপ্তার করা হয় ইয়াছিনকে। তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলেও আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছিন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন, তিনি একাই স্ত্রী সন্তানসহ তিনজনকে হত্যা করেছেন। মাদকের টাকার জন্য উচ্ছৃঙ্খলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে সৎ মায়ের মামলায় ইয়াছিনকে গত ২৭ রমজানের দিন গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ঈদুল ফিতরের দুদিন আগে ইয়াছিন জামিনে ছাড়া পান। পুলিশ জানিয়েছে, তার স্ত্রী লামিয়া, সন্তান আব্দুল্লাহ এবং স্বপ্না মিজমিজি পুকুরপাড় এলাকার আক্তার হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ইয়াছিন জামিনে আসার পর গত ৮ এপ্রিল বাসায় যান। এ সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এ সময় লামিয়ার বোন মানসিক রোগী স্বপ্না বটি নিয়ে তেড়ে আসেন।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, স্বপ্নার কাছ থেকে ইয়াছিন বটিটি কেড়ে নিয়ে স্ত্রী লামিয়ার গলায় কোপ দিলে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় স্বপ্না চিৎকার দিলে তাকেও কুপিয়ে গলা, হাত ও পা বিচ্ছিন্ন করেন। শিশু আব্দুল্লাহর গলায় থাকা তাবিজের সুতা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তাকে। এরপর লামিয়া ও স্বপ্নার মাথা ও হাত-পা একটি বস্তায় এবং দেহ দুটি আরেকটি বস্তায় ভরে কাথা কম্বলে পেঁচিয়ে নেয়। পরে আব্দুল্লাহরসহ তিন লাশ রাস্তার পাশে ইট-সুরকির নিচে চাপা দেন।

পুলিশ জানিয়েছে, লামিয়া ও স্বপ্নার রক্তমাখা জামা-কাপড় একটি ব্যাগে ভরে সেটিসহ বটি বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেন। এরপর অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় লামিয়ার বাসায় ছিলেন। ঘুরে ঘুরে লাশ চাপা দেওয়া স্থান পর্যবেক্ষণে রাখেন। গত ৮ এপ্রিল রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। 

ওসি বলেন, আদালত ইয়াছিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড দিলেও হত্যার দায় স্বীকার করায় চতুর্থ দিনেই তাকে আদালতে জবানবন্দি দিতে পাঠানো হয়েছে। তিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় লামিয়া ও স্বপ্নার বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে গত ১১ এপ্রিল হত্যা মামলা করেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় করা মামলায় লামিয়ার স্বামী ইয়াছিনকে প্রধান আসামি করা হয়। তার বাবা মো. দুলাল ও বোন শিমুকেও আসামি করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইঞ্জিনিয়ার ফিরোজ আহমেদ’র ১ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
  • লাশ পুতে রেখে জায়গাটি ঘুরে ঘুরে পাহারা দেয় ইয়াসিন: পুলিশ
  • লাশ পুতে রেখে জায়গাটি ঘুরে ঘুরে পাহারা দেয় ইয়াসিন
  • গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নেতা সেলিম মাহমুদকে কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ
  • ত্বকী হত্যা মামলা: আজমেরী ওসমানের গাড়িচালককে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর
  • রূপগঞ্জে সাবেক মন্ত্রী পুত্রের পিএস ও একাধিক মামলার পলাতক আসামি হিরা গ্রেফতার
  • ফতুল্লায় গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার
  • বিকল হওয়া ট্রাকে অপর ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২
  • গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের নেতাকে বাসা থেকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী
  • নারায়ণগঞ্জে বকেয়া বেতন ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ