রাজধানীর উত্তরায় দম্পতিকে রামদা দিয়ে প্রকাশ্যে কোপানোর ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলাটি হয়েছে উত্তরা পশ্চিম থানায়, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে। মামলার বাদী ভুক্তভোগী নারী।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে তিনটার প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আজ সকালে উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ঘটনাটি ঘটে গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে, উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়। তাঁরা হলেন মোবারক হোসেন (২৫) ও রবি রায় (২৭)।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বেলা পৌনে তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, আটক দুজনকে এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানান ডিসি তালেবুর রহমান।

আরও পড়ুনভিডিওতে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘দাও দিয়ে কোপাইতেছে, এটা কোনো কথা!’১ ঘণ্টা আগে

ঘটনার বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, বেপরোয়া গতির একটি মোটরসাইকেল একটি রিকশাকে ধাক্কা দিয়েছিল। এ ঘটনায় প্রথমে রিকশাচালক প্রতিবাদ করেন। পাশের আরেকটি মোটরসাইকেলে ছিলেন এক দম্পতি। তাঁরাও এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান। তখন ধাক্কা দেওয়া মোটরসাইকেলের দুই আরোহী আরও কয়েকজনকে ডেকে আনেন। পরে ওই দম্পতির ওপর দুজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করেন। হামলাকারীরা স্থানীয় অপরাধী চক্রের সদস্য।

আরও পড়ুনউত্তরায় দম্পতির ওপর রামদা দিয়ে প্রকাশ্যে হামলা, ভিডিও ভাইরাল৫ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এ ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

সখীপুরে রাতের অন্ধকারে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা ও স্বর্ণালংকার লুট

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় ঘোনারচালা গ্রামে আমেনা বেগম (৪৫) নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত আমেনা বেগম সৌদি প্রবাসী দুলাল হোসেনের স্ত্রী। 

বৃহস্পতিবার  সকালে বাড়ির পাশের একটি ধানক্ষেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতের গলায় ওড়না প্যাঁচানো ছিল, আর শরীরে ছিল আঘাতের চিহ্ন। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে এবং হত্যার পর তার শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার লুট করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

পরিবারের বরাতে জানা গেছে, বুধবার রাতে আমেনা বেগম প্রতিদিনের মতো পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে রাতের খাবার শেষ করেন। রাত প্রায় ১০টার দিকে তিনি তার স্বামী দুলাল হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ঘর থেকে বের হয়ে যান। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি আর ঘরে ফিরে আসেননি।

পরিবার ও প্রতিবেশীরা সারা রাত ধরে খোঁজাখুঁজি করলেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে পাশের ধানক্ষেতে মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে সখীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে এবং তা ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

নিহতের মেয়ে লিতু আক্তার বলেন, আম্মু কিছুক্ষণ আগেও ফোনে আব্বুর সঙ্গে কথা বলছিল। কিছু বুঝে উঠতে পারছি না—কে, কীভাবে, কেন এমন করল! আমাদের কিছুই নেই, কারো সঙ্গে কোনো বিরোধও নেই।

নিহতের ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বোন একজন সহজ-সরল গৃহবধূ ছিলেন। কারো সঙ্গে কখনো ঝগড়া বা শত্রুতা হয়নি। আমরা ভাবতেই পারছি না, কীভাবে এই নির্মম ঘটনা ঘটলো।

সখীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাকির হোসেন বলেন, আমেনা বেগমের মরদেহে শ্বাসরোধের চিহ্ন রয়েছে এবং পরনে থাকা স্বর্ণালংকার লুট করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঘটনাটি খুবই স্পর্শকাতর, আমরা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু করেছি। দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এবং সম্ভাব্য সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদও শুরু করা হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের পর ঘোনারচালা গ্রামে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাত হলে অনেকে ঘরের বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। এলাকাবাসী দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বলেন, এই এলাকায় এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড এর আগে ঘটেনি। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব উদ্বিগ্ন। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

নিহতের মেয়ে লিতু আক্তার বাদী হয়ে সখীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং অপরাধীদের শনাক্ত করতে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ