চট্টগ্রামে কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ
Published: 18th, February 2025 GMT
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন তিন কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টায় নগরের লালখান বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ শুরু করেন কিছু শিক্ষার্থী। এর মধ্যে নতুন তিন কমিটি থেকে পদত্যাগ করা প্রায় ২০ থেকে ৩০ জন রয়েছেন।
সড়কের এক পাশ অবরোধ করা হলেও অন্য পাশ দিয়ে যান চলাচল অব্যাহত রয়েছে। তবে এর প্রভাবে লালখান বাজারসহ আশপাশের এলাকাগুলোয় যানজট দেখা দিয়েছে। অবরোধকারীরা জানিয়েছেন, কমিটি বাতিল না হলে তাঁরা সড়ক ছাড়বেন না।
এর আগে সড়ক অবরোধ করা এসব শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তাঁরা জানান, নতুন তিন কমিটি থেকে ৫০ থেকে ১০০ জন পদত্যাগ করছেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে কমিটিতে থাকা ৩০ জনের মতো উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, কমিটিতে সম্মুখযোদ্ধাদের সুযোগ দেওয়া হয়নি। যাঁদের বিরুদ্ধে নারী হেনস্তা ও কিশোর গ্যাংকে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের নিয়ে একপক্ষীয় কমিটি দেওয়া হয়েছে। সনাতন ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। নারী সহযোদ্ধাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নতুন কমিটিতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা জোবায়রুল আলম, নগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা চৌধুরী সিয়াম ইলাহি ও সংগঠক আবু বাছির নাঈম। চৌধুরী সিয়াম ইলাহি বলেন, তিন কমিটি আজ বেলা তিনটার মধ্যে বাতিল না হলে প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহকে চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।
অবরোধের কারণে সড়কে দেখা দেয় যানজট.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জটিলতায় আটকা ১১ কোটির সেতু
গাইবান্ধা-গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট সড়কে ফুটানী বাজারসংলগ্ন এলাকায় রয়েছে শাকদহ বেইলি সেতু। জেলা শহরে মানুষের যোগাযোগের জন্য যাতায়াতের পথে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জায়গাটিতে কংক্রিটের সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। এদিকে অধিগ্রহণের টাকা না পেয়ে জমি ছাড়ছেন না মালিকরা। এতে আটকে গেছে সেতুর নির্মাণকাজ।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেস (এসইউপিআরবি)’ প্রকল্পের আওতায় জেলায় ছয়টি প্যাকেজে ৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। এর মধ্যে গাইবান্ধা-গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট সড়কে ফুটানী বাজারসংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৪ মিটার দীর্ঘ শাকদহ সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।
২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ২২ মে সেতু নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সে কাজ শেষ হয়নি। মাসুদ হাইটেক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়ন করছে। নির্মাণ শেষ না হওয়ায় চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মানুষ।
স্থানীয় কুন্দেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ফজলুর রহমান বলেন, সেতুর নির্মাণকাজ ঠিকমতোই হচ্ছিল। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এমনটি হয়েছে। সাধারণ মানুষ এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সব জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত এ কাজের বাস্তবায়ন চায়।
বেইলি সেতু দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন ধর্মপুর এলাকার বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলাম। তিনি বলছিলেন, অধিগ্রহণ জটিলতায় পাকা সেতুটির কাজ আটকে আছে। বেইলি সেতুও ঝুঁকিপূর্ণ। কিছুদিন আগেও পাটাতন ভেঙে পড়েছিল।
সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণাধীন সেতু ও বেইলি সেতুটি পাশাপাশি। বেইলি সেতুর বিভিন্ন স্থান ভাঙা। ঝুঁকি নিয়ে এর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। নির্মাণাধীন সেতুর এক-তৃতীয়াংশ কাজ শেষ হওয়ার পর প্রায় দু’মাস ধরে বন্ধ আছে। এ তথ্য জানিয়ে নির্মাণশ্রমিক মোখলেছুর রহমান বলেন, মানুষ জমি না ছাড়ায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মো. মাসুদ বলেন, সেতুটির বেশির ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। অল্প কিছু জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন। সে প্রক্রিয়া শেষ করে সড়ক বিভাগ জমি বুঝিয়ে দিতে পারছে না। জমি পেলে বাকি কাজ কিছু দিনের মধ্যে শেষ হবে।
সেতু এলাকায় জমির মালিক পুন্ডল বাবু ও আ. রাজ্জাক। তাদের ভাষ্য, সেতুর ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে, কিন্তু তারা টাকা পাননি। জমি অধিগ্রহণে চার ধারা নোটিশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করতে দেবেন না।
দুই-তৃতীয়াংশের বেশি কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আজমল হোসেন বলেন, অধিগ্রহণের কাজ শেষ না হওয়ায় বাকি কাজ আটকে আছে। এ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জহির ইমাম বলেন, অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শেষ করতে তারা কাজ করছেন।