কিশোরগঞ্জ কটিয়াদীতে বাসের চাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় প্রায় তিন ঘণ্টা কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও বিক্ষুব্ধ জনতা। তারা এসময় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। ফলে ওই সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

মঙ্গলবার (১৮ ফেক্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কের মধ্যপাড়া এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। সকাল ১১টার দিকে শিক্ষার্থী ও বিক্ষুব্ধ জনতা সড়ক অবরোধ করেন। দুপুর ২টার দিকে অবরোধ তুলে নেন তারা। 

মারা যাওয়া আলী আকবর (১৪) কটিয়াদী উপজেলার মধ্যপাড়া গ্রামের ফারুক আহমেদের ছেলে। জুনায়েদ (১২) একই গ্রামের ফেরদৌস আহমেদের ছেলে। তারা মধ্যপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। নিহতরা সম্পর্কে চাচাতো ভাই।

আরো পড়ুন:

দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক মাসুমা ইসলাম মারা গেছেন

ফেনীতে পিকআপে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা, নিহত বেড়ে ৬ 

কটিয়াদী মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, ‍“বিদ্যালয়ের ক্রীড়া অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আলী আকবর ও জুনায়েদ একটি মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিল। স্কুলে পৌঁছার একটু আগে মধ্যপাড়া সড়কে ঢাকাগামী উজান ভাটি পরিবহনের একটি বাস তাদের চাপা দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই আলী আকবরের মৃত্যু হয়। আহত জুনায়েদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।”

তিনি আরো বলেন, “ঘটনার পর শিক্ষার্থী ও বিক্ষুব্ধ জনতা সড়ক অবরোধ করে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। তিন ঘণ্টা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।”

ঢাকা/রুমন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন অবর ধ সড়ক অবর ধ ক শ রগঞ জ ক অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

বিবাদে বিএনপির দু্‌ই নেতা

আগামী নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে দরকার এলাকায় নিরঙ্কুশ আধিপত্য। তাই কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় তৎপর বিএনপির বড় দুই নেতা– গোলাম আকবর খোন্দকার ও গিয়াস কাদের চৌধুরী। 

দক্ষিণ রাউজানে ছড়ি ঘোরানো গোলাম আকবর নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন উত্তর রাউজানও। আর উত্তর রাউজানের ক্ষমতাধর গিয়াস কাদের নজর দিয়েছেন দক্ষিণ রাউজানের দিকে। গত আট মাসে যে ১২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে, এর ছয়টি উত্তর রাউজানে এবং ছয়টি দক্ষিণ রাউজানে। 

রাউজানে খুন হওয়া ব্যক্তিদের অধিকাংশ তাঁর অনুসারী বলে দাবি করেন উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গিয়াস কাদের চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারের নেশায় পেয়েছে গোলাম আকবর খোন্দকারকে। তিনি একের পর এক আমার অনুসারীদের লাশ ফেলছেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় বিএনপি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জানিয়েছি। বলেছি, খুনিদের গ্রেপ্তার করুন। দক্ষিণ রাউজানে সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও পুলিশি তৎপরতা বাড়ান। অন্যথায় থামবে না লাশের এই মিছিল।’ 

এই অভিযোগ অস্বীকার করে উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, ‘লাশের রাজনীতি কখনোই করিনি। এলাকার মানুষও তা জানে। গত ১৫ বছর আমি এলাকাতেই ছিলাম। আর দেশ ছেড়ে বিদেশে আরাম-আয়েশ করেছেন গিয়াস কাদের। সুদিনে এলাকায় ফিরে দেখেন তাঁর নিয়ন্ত্রণে নেই কিছুই। তাই আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। একের পর এক লাশ ফেলছেন। এ জন্য তাঁর চাচাতো ভাই আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ফজলে করিমের সঙ্গে থাকা সন্ত্রাসী গ্রুপকে দলে টেনেছেন।’

দুই নেতাই হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করার জোর দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, পুলিশ সক্রিয় হলে, প্রকৃত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তবে পুলিশ বলছে, রাজনৈতিক চাপে তারা স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছেন না।

বড় দুই নেতার এই বিবাদের প্রভাব পড়েছে নেতাকর্মীর মাঝে। তারাও এখন বিভক্ত হয়ে আছেন দুই বলয়ে। এলাকায় প্রভাব বিস্তারের সুবিধার্থে নেতাকর্মীরা আশ্রয় খুঁজছেন এ দুই নেতার ছায়াতলে। উত্তর রাউজানে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এখন প্রভাব দেখা যাচ্ছে গিয়াস কাদেরের। দক্ষিণ রাউজানে বিএনপির নানা কর্মসূচি নিয়ে সরব থাকছেন গোলাম আকবর খোন্দকার।

৫ আগস্টের পর রাউজানে খুনোখুনির ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন গোলাম আকবর খোন্দকার সমর্থিত রাউজান উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী সমর্থিত সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে নিজেরা খুনোখুনি করে বিএনপিকে কলঙ্কিত করছে। খুনের ঘটনায় উল্টো মূল বিএনপির নেতাকর্মীকে মামলার আসামি করা হচ্ছে। আমরা এ ঘটনায় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় কমিটিকে লিখিত জানাব।’

গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী সমর্থিত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবু জাফর চৌধুরী বলেন, ‘এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও মাটি-বালুর ব্যবসাকে কেন্দ্র করে মারামারি ও খুনোখুনির ঘটনাগুলো হচ্ছে। আমরা চাই শান্তির রাউজান। আমাদের নেতা কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, অপরাধী যেই হোক না কেন, তাদের আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। আমি নিজেও প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অনতিবিলম্বে সব হত্যার সুষ্ঠু বিচার হোক।’ 

আসন্ন নির্বাচনে রাউজান থেকে এমপি পদে মনোনয়ন চাইবেন গোলাম আকবর খোন্দকার। গত ১৫ বছর এলাকায় থাকায় দলে শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে তাঁর। এই অবস্থান ধরে রাখতে চান তিনি পুরো রাউজানে। 

এবার রাউজান থেকে নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন গিয়াস কাদের চৌধুরীও। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের আলাদা একটি প্রভাব আছে রাউজানে। তিনি একে কাজে লাগাতে চাচ্ছেন। বিগত সরকারের সময়ে বেশ কয়েক বছর এলাকায় ছিলেন না গিয়াস কাদের, ছিলেন দুবাইয়ে। গোলাম আকবর খোন্দকার এটিকে সামনে এনে গিয়াসের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীকে সংগঠিত করছেন। তবে গিয়াস কাদের বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ছিলেন তিনি। এ জন্য বিদেশ যেতে বাধ্য হয়েছেন।


সম্পাদনা: বাবু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাউজানে খুনোখুনি রাজনৈতিক কারণে নয়, নেপথ্যে চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি
  • রাউজানে খুনোখুনির যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলো রাজনৈতিক কারণে না
  • রাউজানে একের পর হত্যাকাণ্ডকে অরাজনৈতিক দাবি করলেন গোলাম আকবর খন্দকার
  • বিবাদে বিএনপির দু্‌ই নেতা