যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী ভারতীয়দের নিয়ে চমকপ্রদ কয়েকটি তথ্য
Published: 18th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের গণহারে বিতাড়িত করাকে তাঁর সরকারের অন্যতম মূলনীতি হিসেবে নিয়েছেন। দেশটিতে ইতিমধ্যে এমন প্রায় ১৮ হাজার ভারতীয় শনাক্ত হয়েছেন, যাঁরা অবৈধভাবে সেখানে ঢুকেছেন বলে ধারণা করছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
গত সপ্তাহে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে থাকা ভারতীয়দের ফিরিয়ে নেবে তাঁর দেশ। মানব পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন সফরে মোদি বলেন, ‘তারা খুবই সাধারণ পরিবারের সন্তান। বড় স্বপ্ন আর প্রতিশ্রুতিতে তারা প্রলুব্ধ হয়েছে।’
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাবি বুডিম্যান ও দেবেশ কাপুর নতুন একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। সেখানে অবৈধ বা অনথিভুক্ত ভারতীয়দের সংখ্যা, জনমিতি, প্রবেশের পদ্ধতি, অবস্থান ও প্রবণতা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনের আলোকে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী ভারতীয়দের নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
পিউ রিসার্চ সেন্টার ও সেন্টার ফর মাইগ্রেশন স্টাডিজ অব নিউইয়র্কের (সিএমএস) হিসাব অনুসারে, ২০২২ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় অভিবাসীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৭ লাখ। দেশটিতে অবৈধভাবে বসবাস করার দিক থেকে তাঁদের অবস্থান তৃতীয়। মেক্সিকো ও এল সালভাদর প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে আছে।যুক্তরাষ্ট্রে কত অবৈধ ভারতীয়র বসবাসযুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার ৩ শতাংশ এবং দেশটিতে বসবাসকারী বিদেশিদের ২২ শতাংশ অনিবন্ধিত অভিবাসী। এর মধ্যে অনিবন্ধিত ভারতীয় অভিবাসীর সংখ্যাটা ঠিক কত, তা নিয়ে মতভেদ আছে। ভিন্ন ভিন্ন গণনা পদ্ধতির কারণে হিসাবে এমন পার্থক্য হয়েছে বলে মনে করা হয়।
পিউ রিসার্চ সেন্টার ও সেন্টার ফর মাইগ্রেশন স্টাডিজ অব নিউইয়র্কের (সিএমএস) হিসাব অনুসারে, ২০২২ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় অভিবাসীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৭ লাখ। দেশটিতে অবৈধভাবে বসবাস করার দিক থেকে ভারতীয়দের অবস্থান তৃতীয়। মেক্সিকো ও এল সালভাদর প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে আছে।
অন্যদিকে মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউটের (এমপিআই) হিসাব অনুসারে, এ সংখ্যা ৩ লাখ ৭৫ হাজার। এদিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসের দিক থেকে ভারতীয়দের অবস্থান পঞ্চম।
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) দপ্তরের পরিসংখ্যানে আবার অন্যচিত্র দেখা গেছে। তাদের তথ্য বলছে, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ২০ হাজার অনিবন্ধিত ভারতীয় ছিলেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন হিসাবের তথ্যে ভিন্নতা থাকায় যুক্তরাষ্ট্রে অনিবন্ধিত ভারতীয়র সংখ্যাটা ঠিক কত, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকে গেছে।
যদি পিউ ও সিএমএসের হিসাব সঠিক হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী প্রতি চারজন ভারতীয় অভিবাসীর মধ্যে প্রায় একজনের অনুমোদন নেই। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিবাসনের ধরন বিবেচনা করলে, এটা বিরল ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্রে যেসব দেশের অভিবাসীর সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়ছে, সেসবের একটি ভারত। ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৬ লাখ ভারতীয় অভিবাসী বসবাস করতেন। ২০২২ সালে তা বেড়ে ৩২ লাখে দাঁড়িয়েছে।
ডিএইচএসের হিসাব অনুসারে, ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অননুমোদিত ভারতীয় অভিবাসীর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ। সে তুলনায় ২০২২ সালে তা ৬০ শতাংশ কমে ৫ লাখ ৬০ হাজার থেকে ২ লাখ ২০ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
২০১৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে কীভাবে এত দ্রুত অননুমোদিত ভারতীয়র সংখ্যা কমল
দেবেশ কাপুর বলেন, এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় না। তবে এমনটা হতে পারে যে কেউ কেউ আইনি অনুমোদন পেয়েছেন। আবার করোনা পরিস্থিতির কারণে অন্যরা ফিরে গেছেন।
তবে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে ভারতীয়দের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিকে এ হিসাবের আওতায় রাখা হয়নি। এর মানে, প্রকৃত সংখ্যা এখন আরও বেশি হতে পারে।
২০১৬ সাল থেকে ভারতীয়দের মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসার আওতায় থাকার হার ১ দশমিক ৫ শতাংশে স্থিতিশীল আছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ‘ডেফারড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস (ডিএসিএ)’ কর্মসূচির আওতায় সেবা নেওয়া ভারতীয়র সংখ্যা কমেছে। ২০১৭ সালে এ সংখ্যা ২ হাজার ৬০০ ছিল। ২০২৪ সালে তা কমে ১ হাজার ৬০০ হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে শিশুকালে প্রবেশ করা অভিবাসীদের সুরক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে।
প্রধান দুই প্রবেশপথঅ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউ মেক্সিকো ও টেক্সাস অঙ্গরাজ্য যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে অবস্থিত। এ সীমান্ত দিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিবাসীদের আসা-যাওয়ার ঘটনা ঘটে। আর যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্ত ১১টি অঙ্গরাজ্যজুড়ে বিস্তৃত।
২০১০ সালের আগপর্যন্ত ওই দুই সীমান্তপথ দিয়ে ভারতীয় অভিবাসীদের প্রবেশের চেষ্টা কম ছিল। এ সংখ্যা কখনোই এক হাজার ছাড়ায়নি, তবে ২০১০ সাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করা ভারতীয় অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেড়েছে।
২০২৪ অর্থবছরে যত ভারতীয় অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছেন, তাঁদের ৩৬ শতাংশই উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত দিয়ে ঢুকেছেন। আগের বছর এ হার ছিল ৪ শতাংশ।
কানাডা ভারতীয়দের জন্য আরও সহজলভ্য প্রবেশপথ হয়ে উঠেছে। সেখানে ভিজিটর ভিসা প্রক্রিয়াকরণে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় সময় কম লাগে।
অবৈধ ভারতীয়রা কোথায় থাকেনযুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে ১ লাখ ১২ হাজার, টেক্সাসে ৬১ হাজার, নিউ জার্সিতে ৫৫ হাজার, নিউইয়র্কে ৪৩ হাজার ও ইলিনয়ে ৩১ হাজার অবৈধ ভারতীয়র বসবাস। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব অঙ্গরাজ্যে ভারতীয় অভিবাসী বেশি, সেসব স্থানে অবৈধ ভারতীয়র সংখ্যাটাও বেশি।
ওহাইওতে মোট অনিবন্ধিত অভিবাসীর ১৬ শতাংশ, মিশিগানের ১৪ শতাংশ, নিউ জার্সির ১২ শতাংশ ও পেনসিলভানিয়ার ১১ শতাংশ ভারতীয়।
যেসব অঙ্গরাজ্যে ২০ শতাংশের বেশি অননুমোদিত ভারতীয় অভিবাসী বসবাস করেন, সেসবের মধ্যে আছে টেনেসি, ইন্ডিয়ানা, জর্জিয়া, উইসকনসিন ও ক্যালিফোর্নিয়া।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক বিমানে ফিরলেন নথিপত্রহীন ভারতীয় অভিবাসীরা০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫কার কাছে আশ্রয় চাইছেন ভারতীয়রানিজ দেশে দমন–পীড়ন থেকে বাঁচতে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার চেষ্টা করার সময় যাঁরা সীমান্তে আটক হন, তাঁদের আতঙ্ক সত্য কি না, তা মার্কিন অভিবাসন ব্যবস্থার আওতায় যাচাই-বাছাই করা হয়। যাঁরা সে যাচাই-বাছাইয়ে উতরে যান, তাঁরা আদালতে বৈধ অভিবাসনের জন্য আবেদন জানাতে পারেন।
২০০১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় হিসেবে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের তালিকায় পাঞ্জাবি ভাষাভাষী মানুষের আধিপত্য বেশি দেখা গেছে। এরপরের অবস্থানে আছেন হিন্দি (১৪ শতাংশ), ইংরেজি (৮ শতাংশ) ও গুজরাটি (৭ শতাংশ) ভাষাভাষী ভারতীয়রা।
সম্প্রতি শতাধিক ভারতীয় অভিবাসীকে নিয়ে মার্কিন বিমানবাহিনীর সি-১৭ গ্লোবমাস্টার উড়োজাহাজ অমৃতসর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ স ব অন স র র অবস থ ন ২০২২ স ল র আওত য়
এছাড়াও পড়ুন:
শেয়ার কারসাজি: ১৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ১৯০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দুইটি কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির (শেয়ার লেনদেনে আইন লঙ্ঘন) অভিযোগে ৯ ব্যক্তি ও ৯ প্রতিষ্ঠানকে মোটি ১৮৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় এনেছে এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
শেয়ার কারসাজি করা কোম্পানি দুটি হলো- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড ও সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা ও ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত সময়ে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার যোগসাজোসের মাধ্যমে কারসাজি করে দাম বাড়ানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো একাধিক বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব খুলে সিরিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়িয়ে মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছেন- বলে বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে।
পুঁজিবাজারে কয়েক বছর ধরে গুঞ্জন ছিল কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা হচ্ছিল। অবশেষে তদন্ত সাপেক্ষে কোম্পানির শেয়ার কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায়ে এনেছে বিএসইসি।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন যেকোনো ধরনের কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য রাইজিংবিডি ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।
সি পার্ল বিচ রিসোর্ট: কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির অভিযোগে ৯ প্রতিষ্ঠান এবং ৪ ব্যক্তিকে মোট ১৮৭ কোটি ২২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা করা ব্যক্তিদের মধ্যে মো. কালাম হোসেনকে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্যদের মধ্যে আবু সাদাত মো. ফয়সালকে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা, জামরুল হাসান মো. ইকবাল গণিকে ১ লাখ টাকা এবং মো. আবু নাঈমকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জরিমানা করা ৯ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইউডিসি কনস্ট্রাকশনকে ৬৮ কোটি ১ লাখ টাকা, ভেনাস বিল্ডার্সকে ৬৯ কোটি ১ লাখ টাকা, সাতরং অ্যাগ্রো ফিশারিজকে ২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা, হৃদয় পোল্ট্রি ফার্মকে ১০ লাখ টাকা, হাসান নার্সারিকে ২ লাখ টাকা, আমানত অ্যাগ্রো ফিশারিজকে ৪০ লাখ টাকা, সাব্বির স্টোরকে ১০ লাখ টাকা, সরকার অ্যাগ্রো ফার্মকে ১ লাখ টাকা এবং মুক্তা ফিশারিজকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তদন্তে ১ জুলাই ২০২২ থেকে ১০ আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত সময়কাল অন্তর্ভুক্ত ছিল, যে সময়কালে কারসাজিকারীরা বিভিন্ন সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে। ২০২২ সালের ৩ জুলাই সি পার্লের শেয়ারের দাম ছিল ৪৩.৫০ টাকা, যা ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে অস্বাভাবিক ৪০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২১৭.৪০ টাকা হয়।
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স: কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির অভিযোগে ৫ ব্যক্তিকে মোট ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা করা ব্যক্তিদের মধ্যে নূরজাহান বেগমকে ১ লাখ টাকা, সাজিদুল হাসানকে ৭৫ লাখ টাকা, সায়েদুর রহমানকে ১ লাখ টাকা, ফেরদৌসি বেগমকে ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ও লুতফর রহমানকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তদন্তে ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত সময়কালে কারসাজিকারীরা বিভিন্ন সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে। ১৭ এপ্রিল ২০২২ তারিখে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দাম ছিল ৬২.১০ টাকা, যা ১২ জুন তারিখে অস্বাভাবিক ৭৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১১১.৫০ টাকায় পৌঁছে যায়।
কারসাজির পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসির সিদ্ধান্ত
অভিযুক্তদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব থেকে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা ও সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিপুল সংখ্যক শেয়ার লেনদেন করে। এ কর্মকাণ্ডের মাধ্যেমে তারা একটি কৃত্রিম বাজার সৃষ্টি ও পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ক্রয়ের জন্য প্রভাবিত করার অপপ্রয়াস চালিয়েছেন। যার ফলে শেয়ারটির বাজার মূল্য অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন।
শেয়ার কারসাজিতে জড়িতদের বক্তব্য এবং তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা থেকে প্রতীয়মান হয়, উপস্থাপিত অভিযোগসমূহ সঠিক ও ইচ্ছাকৃত এবং কর্মকাণ্ডের ফলে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন যা পুঁজিবাজার উন্নয়নের পরিপন্থি। এক্ষেত্রে অভিযুক্তদের ব্যাখ্যা কমিশনের নিকট গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়নি। কমিশনের বিবেচনায়, সিকিউরিটিজ আইন ও বিধি-বিধান পরিপালনে আলোচ্য ব্যর্থতার জন্য, পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা এবং জনস্বার্থে আলোচ্য ব্যক্তিদের জরিমানা করা হয়। তবে অভিযুক্ত দুই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/এনটি/ইভা