ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিত টিকটকার আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুন।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক সাবেরা সুলতানা খানমের আদালতে মামলাটির চার্জশিট গ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। প্রিন্স মামুন চার্জশিট দাখিল পর্যন্ত জামিনে ছিলেন। এ দিন আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে আদালত মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেন।

গত বছর ৯ জুুন প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন লায়লা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামুনকে পরদিন গ্রেপ্তার করা হয়। ১১ জুন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ১ জুলাই আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। 

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামি আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের সঙ্গে লায়লার তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে মামুন তাকে বিয়ে করবে এমন প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে। পরে মামুন তাকে জানায়, তার ঢাকায় থাকার মতো নিজস্ব কোনো বাসা নেই। যেহেতু প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয় এবং মামুন তাকে বিয়ে করবে বলে জানায়, তাই লায়লা তাকে নিজের বাসায় থাকার অনুমতি দেন। ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি মামুন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে লায়লার বাসায় এসে বসবাস করতে থাকে। 

লায়লার অভিযোগ, ওই দিন থেকে মামুন তার সঙ্গে একই কক্ষে বসবাস করতে থাকে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সর্ম্পক করে। পরে মামুনকে একাধিকবার বিয়ের কথা বললে সে বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৪ মার্চ মামুন তাকে ধর্ষণ করে বলেও মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট থানার উপপরিদর্শক মুহাম্মদ শাহজাহান গত ২৬ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন।

ঢাকা/মামুন//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

গৃহকর্মীর অধিকার ও স্বীকৃতির জন্য দৌড় কর্মসূচি

দেশের প্রায় ৪০ লাখের বেশি গৃহকর্মীর অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতির জন্য দৌড়ে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২ হাজারের বেশি মানুষ।

আজ শনিবার রাজধানীর হাতিরঝিলে অক্সফাম ইন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘অক্সফাম রান’-এর মাধ্যমে গৃহশ্রমিকদের জন্য ন্যায্যতা নিশ্চিতের আহ্বান জানান অংশগ্রহণকারীরা। অক্সফামের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহযোগিতায়, ‘সমতার লক্ষ্যে, চলো একসঙ্গে’ স্লোগানকে সামনে রেখে গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি ও শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে এ আয়োজন করা হয়। সাড়ে সাত কিলোমিটারের এই দৌড়ে প্রায় চার শতাধিক গৃহকর্মী অংশ নেন। তাঁদের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, দূতাবাসের প্রতিনিধি, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, গণমাধ্যমকর্মীরাও অংশ নেন।

দৌড়ে পুরুষ বিভাগে প্রথম হন হামিদুর রহমান। আমিনুল হাসান দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান লাভ করেছেন আবুল হাসনাত কবির। নারীদের মধ্যে সুইটি আক্তার প্রথম হয়েছেন। তামান্না আফরিন ও তাসলিমা আক্তার যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন।

‘অক্সফাম রান’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি বলেন, ‘আমরা শহরগুলোতে সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল থাকি আমাদের গৃহকর্মীদের ওপর। কিন্তু তাঁরাই সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার। ঘরে, সমাজে এবং সরকারি পর্যায়ে তাঁদের স্বীকৃতি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। তাঁদের অধিকার ও প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা একটি ন্যায্যতার দেশ গড়তে পারব।’

বিশেষ অতিথি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, ‘গৃহকর্মীদের গুরুত্ব অনুধাবন করে আমরা তাঁদের আনুষ্ঠানিক খাতে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। তাহলে তাঁদের মজুরি, দক্ষতা ও অন্য সুবিধাগুলোর অধিকার স্বীকৃতি পাবে।’

অক্সফাম রানের মাধ্যমে গৃহশ্রমিকদের জন্য অক্সফাম ২০১৫ সালের গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতির সঠিক বাস্তবায়ন, গৃহকর্মীদের জন্য সম্মানজনক কাজের আইএলও কনভেনশন ১৮৯–এর অনুমোদন এবং এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মশক্তি রক্ষার জন্য শক্তিশালী পদক্ষেপ নিশ্চিতের বিষয়গুলো উঠে আসে।

অক্সফাম ইন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর মাহমুদা সুলতানা বলেন, অক্সফাম দীর্ঘদিন ধরে গৃহশ্রমিকের অধিকার নিয়ে কাজ করছে। লক্ষণীয় হলো, তাদের অধিকার রক্ষায় কেবল নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পরিবর্তনই যথেষ্ট নয়, মানসিকতার পরিবর্তন হতে হবে।

২০২২ সালে অক্সফামের এক গবেষণায় উঠে আসে, ৯৩ শতাংশ গৃহশ্রমিক কর্মক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হন, যার মধ্যে ৬৭ শতাংশ মানসিক নির্যাতন, ৬১ শতাংশ মৌখিক এবং ২১ শতাংশ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।

দেশের গৃহকর্মীদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে ২০২০ সালে সুনীতি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করছে অক্সফাম ইন বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রায় ১৮ হাজার নারী গৃহকর্মীর দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে প্রকল্পটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ