ছেলের সঙ্গে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখছেন মোহাম্মদ নবী
Published: 18th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়েই ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলার কথা ছিল মোহাম্মদ নবীর। তবে আফগানিস্তানের এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে ভাবছেন। বিশেষ এক স্বপ্ন পূরণের আশায় তিনি ওয়ানডে ক্রিকেট চালিয়ে যেতে চান—নিজের ছেলে হাসান ইসাখিলের সঙ্গে আফগানিস্তান জাতীয় দলে খেলার জন্য।
গত বছরের নভেম্বরেই ৪০ বছর বয়সী নবী জানিয়েছিলেন, আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেই ওয়ানডে থেকে অবসর নেবেন। তবে এখন সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। আইসিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নবী বলেন, ‘এই টুর্নামেন্ট আমার শেষ নাও হতে পারে। আমি হয়তো কম ম্যাচ খেলব, যাতে তরুণরা সুযোগ পায়। তবে সবকিছু নির্ভর করছে আমার ফিটনেসের ওপর।’
নবীর ১৮ বছর বয়সী ছেলে হাসান ইসাখিল একজন ব্যাটার, যিনি আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে যুব বিশ্বকাপে খেলেছেন। বাবার স্বপ্ন, শিগগিরই জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলবেন তারা। নবী বলেন, ‘এটা আমার বড় স্বপ্ন। আশা করি, একদিন আমরা আফগানিস্তানের হয়ে একসঙ্গে খেলব। সে খুব ভালো করছে, কঠোর পরিশ্রম করছে। আমি সবসময় তাকে অনুপ্রাণিত করি।’
ছেলের ক্যারিয়ার নিয়ে নবী আরও যোগ করেন, ‘আমি চাই সে নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকুক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সফল হতে প্রচুর পরিশ্রম দরকার। শুধু ৫০ বা ৬০ রান করলেই হবে না, ১০০ বা তার বেশি রান করতে হবে। আমি তাকে সবসময় এই পরামর্শই দিই।’
আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য আফগানিস্তান ‘বি’ গ্রুপে ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়বে। প্রথমবারের মতো এই টুর্নামেন্টে খেলতে যাচ্ছে তারা। নবী জানান, দল ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে এবং ব্যক্তিগতভাবেও তিনি আত্মবিশ্বাসী।
বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে শিরোপা জেতা নবীর আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিপিএলে কঠিন পরিস্থিতি থেকে ফাইনাল জেতাটা আমাকে আরও আত্মবিশ্বাসী করেছে। পুরো টুর্নামেন্টেই দল ভালো খেলেছে, আমার পারফরম্যান্সও ভালো ছিল। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে আমি দলের জন্য সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
একসঙ্গে কাঁপল ৬ দেশ
মিয়ানমারের আজ শুক্রবার পরপর দুটি ভূমিকম্প হয়েছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছয়টি দেশে এর প্রভাব অনুভূত হয়েছে। আজ দুপুর ১২টা ২১ মিনিটে কেঁপে উঠে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৭। এর উৎপত্তিস্থল মিয়ানমারের সাগাইং থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর–উত্তরপশ্চিমে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ১০ কিলোমিটার গভীরে।
ইউএসজিএস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে আঘাত হানা ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশ, ভারত, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং চীনে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে পরপর দুটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর একটি ৭ দশমিক ৭ মাত্রার, অন্যটি ৬ দশমিক ৪ মাত্রার। মিয়ানমারে থেকে এর উৎপত্তি হয়। তবে থাইল্যান্ডসহ অন্যান্য অঞ্চলে অনুভূত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রুবাইয়াত কবীর সমকালকে জানিয়েছেন, রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৩। এর উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের মান্দালয়। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ৫৯৭ কিলোমিটার।
তিনি বলেন, ভূমিকম্পের প্রভাবে অনুভূত হয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির হয়নি।
মিয়ানমার
মিয়ানমারের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি ৭ দশমিক ৭ মাত্রার এবং এর গভীরতা ছিল ভূঅভ্যন্তরের ১০ কিলোমিটার (৬.২ মাইল) গভীরে। প্রথম বার আঘাত হানার পর আরেকটি শক্তিশালী আফটারশক অনুভূত হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের তীব্রতায় রাস্তাঘাট ফাটল দেখা গেছে এবং ভবনের টুকরো খসে পড়েছে। ইরাবতী নদীতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে নির্মিত একটি সেতু ভেঙে পড়েছে। ভয়াবহ ভূমিকম্পে ভেঙে পড়ে ৯১ বছরের পুরোনো আভা সেতু, যা পুরোনো সাগাইং সেতু নামেও পরিচিত।
মিয়ানমারের ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা রয়টার্স সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ‘আমরা হতাহত এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করার জন্য ইয়াঙ্গুনে অনুসন্ধান শুরু করেছি এবং ঘুরে দেখছি। এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’
চীন
চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টার (সিইএনসি) জানিয়েছে, চীনের ইউনানে এর কম্পন অনুভূত হয়েছে। সিনহুয়া জানিয়েছে, এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৯।
ভারত
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমিওলজি জানিয়েছে, মেঘালয়ের পূর্ব গারো পাহাড়ে ৪ মাত্রার ভূমিকম্পন অনুভূত হয়। কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
থাইল্যান্ড
মিয়ানমারে উৎপন্ন ভূমিকম্প থাইল্যান্ডে আঘাত হানে। রাজধানী ব্যাংককে কম্পনে নির্মাণাধীন একটি ৩০ তলা সরকারি অফিস ভবন ধসে পড়েছে। সেখানে কর্মরত অন্তত ৪৩ জন শ্রমিক ভেতরে আটকা পড়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ ও মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। উত্তর ও মধ্য থাইল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকায়ও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ প্রচারিত একটি ভিডিওতে ভবনগুলো কাঁপতে দেখা গেছে। আতঙ্কে লোকজন রাস্তায় ছোটাছুটি করেন। দুপুরে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত করে ব্যাংককে। ভূমিকম্পের প্রভাবে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে উত্তর ব্যাংককের ওই ভবনটি ধসে পড়ে।
লাওস
চীনের সংবাদমাধ্যম সিনহুয়ার এক প্রতিবেদেন বলা হয়, মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে লাওসের কয়েকটি শহরে কম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
লাও জাতীয় ভূমিকম্প তথ্যকেন্দ্রের তথ্যমতে, লাওসের উত্তর ও কেন্দ্রীয় অঞ্চলে কম্পন অনুভূত হয়েছে। রাজধানী ভিয়েনতিয়েনেও কেঁপে উঠে। দেশটির কর্তৃপক্ষ সেখানকার বাসিন্দাদের সম্ভাব্য আফটারশকের জন্য প্রস্তুত থাকতে সতর্ক করেছে।