বগুড়ায় বিএনপির জনসভা: ‘তারা যদি সব ঠিকঠাক করে, আমরা বসে বসে কি কলা খাব’
Published: 18th, February 2025 GMT
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেছেন, ‘সংস্কার চ্যাপ্টার ক্লোজ করে দেন। নির্বাচনী চ্যাপ্টার খোলেন। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। রাজনীতিবিদদের হাতে রাজনীতিটা ছেড়ে দেন। যারা রাজনীতিতে নেই, রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকবে না; তারা যদি সব ঠিকঠাক করে আমরা বসে বসে কি কলা খাব?’
বগুড়ার আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক জনসভায় আবদুস সালাম এ কথাগুলো বলেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের মোকাবিলাসহ বিভিন্ন দাবিতে বগুড়া জেলা বিএনপি এই জনসভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আবদুস সালাম। এ সময় অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘সময় নষ্ট করে ফেলেছেন। ছয় মাস সময় অতিবাহিত করেছেন। সংস্কার করবেন কি করবেন না, তা ডিসাইড করতে পারেননি। আপনার দ্বারা আর তেমন কিছু সম্ভব হবে না। মানুষের ভোটের যে অধিকার ছিনতাই হয়েছিল, সেই অধিকার ফিরিয়ে দিন। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেন। নির্বাচন কমিশন ঠিক করেন। কালো টাকার মালিক যাতে নির্বাচনে আসতে না পারে সেই ব্যবস্থা করেন।’
গত বছর ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকার পতনের পর বগুড়ায় বিএনপি বড় আকারে জনসভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম (বাদশা)।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে আবদুস সালাম আরও বলেন, ‘সংস্কার, সংস্কার করছেন। অথচ আপনি আসার আগেই আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের জন্য ৩১ দফা দিয়েছিলেন। সেটা একবারও খুলে দেখেননি। তারেক রহমানের সেই ঘোষণার মধ্যেই সব আছে। ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে এ দেশে কেউ স্বৈরাচার হতে পারবে না। বিনা ভোটে রাষ্ট্রক্ষমতায় কেউ আসতে পারবে না। পরপর দুই দফা কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন দল গঠন করার প্রতি ইঙ্গিত করে আবদুস সালাম বলেন, ‘কেউ কেউ বলেন, নির্বাচন দিলে তো বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। নির্বাচন পরে, আগে সংস্কার। এটা ষড়যন্ত্র। যারা দল করবেন লাফালাফি করছেন, দল করেন। নির্বাচনে আসেন। যাঁরা বলছেন, যেনতেন নির্বাচন চাই না; আগে সংস্কার চাই। তাঁরা জনগণকে ভয় পান, জনগণের রায় মেনে নিতে ভয় পান, তাঁরা জনগণের বন্ধু নয়। ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। বিএনপির সঙ্গে জনগণ আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থা কয়দিন পর “ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি” হবে।’
বিএনপির নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে আবদুস সালাম বলেন, ‘আগামী দিনে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের সন্তান। তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে বগুড়াবাসীর গর্ব। বগুড়ার সাতটি আসন তারেক রহমানের। তাঁকে সাতটি আসন উপহার দেওয়ার জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
জনসভায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ কে এম মাহবুবর রহমান ও হেলালুজ্জামান তালুকদার (লালু), বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান (চন্দন), বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ স স ল ম ত র ক রহম ন রহম ন র ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
যুবদল নেতার চাঁদা দাবির প্রতিবাদে মানববন্ধন
শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম রেজার কাছে চরশেরপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা শাকিল আহমেদের চাঁদা দাবির প্রতিবাদে সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে চরশেরপুর তালেব আলী দাখিল মাদ্রাসা মাঠে ওই প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।
সমাবেশ ও মানবন্ধনে স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাসহ স্থানীয় জনগণ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা যুবদল নেতা শাকিলের ছবিতে ঝাড়ুপেটা করে।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চরশেরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী, ১ নং ওয়ার্ড জামায়াত সভাপতি রুবেল মিয়া, ৯ নং ওয়ার্ড জামায়াত সভাপতি মো. মুতাসিম বিল্লাহ, জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব সাজেদুর রহমান সাঈম, চরশেরপুর ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান, শেরপুর সদর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শামিম মিয়া, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শাকিল রানা প্রমুখ।
আরো পড়ুন:
টাঙ্গাইলে ৭ দাবিতে এ আই টেকনিশিয়ানদের কর্মবিরতি
চট্টগ্রামে পদোন্নতি বঞ্চিত ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের মানববন্ধন
এ সময় বক্তারা বলেন, চরশেরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে চেয়ারম্যান হয়েছেন। কিন্তু চাহিদামত চাঁদা না দেওয়ায় তাকে আওয়ামী লীগের দোসর বানানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে।
তারা বলেন, শহরের কতিপয় চাঁদাবাজের মদদদাতারা চেয়ারম্যান সেলিম রেজার অপসারণ ও শাস্তি দাবি করে মানববন্ধন করেছে, যা হাস্যকর। এ সময় বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে শাকিল আহমেদ, সাধন, আলমগীর, ছামিদুল, মানিক ও সোহাগসহ চিহ্নিত চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি করেন।
অভিযুক্ত যুবদল নেতা শাকিল আহমেদ বলেন, ‘‘সেলিম রেজা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। চাঁদা দাবির প্রশ্নই ওঠে না। আমি ইতোমধ্যে মানববন্ধন করে চেয়ারম্যানের বিচার দাবি করেছি।’’
প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন শেষে চেয়ারম্যান সেলিম রেজা পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
এদিকে, দুপুরে জেলা শহরের থানামোড়ে চরশেরপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজার বিচার দাবি করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে যুবদল নেতাকে প্রাণনাশের হুমকিরহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে তার বিচার দাবি করা হয়।
ঢাকা/তারিকুল/বকুল