অপহৃত স্কুলছাত্রী উদ্ধার, গ্রেপ্তার এক
Published: 18th, February 2025 GMT
নোয়াখালী সদর উপজেলা থেকে অপহৃত এক স্কুলছাত্রীকে (১৫) উদ্ধার করেছে র্যাব-১১। এসময় অপহরণকারীকেও গ্রেপ্তার করা করে তারা।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার নোয়াখালী মতিপুর গ্রাম থেকে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার ও অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১১, সিপিসি-৩ কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
শবে বরাতের রাতে আতশবাজি-পটকা ফোটালে ব্যবস্থা
ঢাকা থেকে নিখোঁজ কিশোরী সুবা নওগাঁয় উদ্ধার
গ্রেপ্তার আবুল হোসেন হৃদয় (২৪) সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের মতিপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে।
র্যাব-১১ সূত্রে জানা যায়, মেয়েটি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আসামি আবুল হোসেন হৃদয় স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য। হৃদয় ওই ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রেম নিবেদন করাসহ বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি মায়ের সঙ্গে কোচিংয়ে যাওয়ার পথে হৃদয় ও তার সহযোগিরা একটি কালো রঙের হাইস মাইক্রোবাসে করে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। আদালতের আদেশে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সুধারাম মডেল থানায় মামলাটি হস্তান্তর হয়। র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালীর অভিযানিক দল গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মতিপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে আসামিকে গ্রেপ্তার ও অপহৃতকে উদ্ধার করে।
র্যাব-১১, সিপিসি-৩ কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, “মামলা দায়েরের পর তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় অপহৃতকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিকে সুধারাম মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। অপহরণের শিকার ভুক্তভোগী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেবেন এবং আসামিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হবে।”
ঢাকা/সুজন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপহরণ য ব ১১ অপহ ত
এছাড়াও পড়ুন:
ঠাকুরগাঁওয়ে মিলনকে হত্যার পর মুক্তিপণ আদায় ছিল পূর্বপরিকল্পিত
ঠাকুরগাঁওয়ের মিলন অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য। মিলনকে হত্যা করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল বলে জানিয়েছে ঠাকুরগাঁও ডিবি পুলিশ।
রবিবার (২৩ মার্চ) রাইজিংবিডিকে বিষয়টি জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নবিউল ইসলাম।
নবিউল ইসলাম জানান, প্রথমে জানা গেছে অপহরণের তিনদিন পর মিলনকে হত্যা করে ঘাতক চক্রটি। তবে রিমান্ডে উঠে আসে ঘটনার মূল রহস্য। মিলনকে অপহরণ করে হত্যা ও লাশ গুম করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনাটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। অপহরণের প্রায় ৬ মাস আগে থেকে মিলন ও তার পরিবারকে নিয়মিত ওয়াচ করেছিল ঘাতক সেজান। ঘটনার আগে হত্যার জন্যে কসটেপ ও মাফলার কিনে ছিল। লাশ নিয়ে যাওয়ার রুট ও বিকল্প রুটসহ লাশ গুম করার পরিকল্পনা তাদের সাজানোই ছিল।
মামলার লোমহর্ষক বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, মিলনকে অপহরণের সাথে সাথেই হত্যা করা হয়। মাফলারের সাহায্যে ২ থেকে ৩ মিনিটেই শ্বাসরোধ করে মিলনকে হত্যা করে সেজান ও মুরাদ। শুধু তাই নয়, হত্যার পরে মোটরসাইকেলের মাঝখানে বসিয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরেছে তারা। তবে এ ঘটনায় প্রথমে ৩ লাখের টার্গেট থাকলেও পরে ৩০ লাখ নেওয়ার পরিকল্পনা করে তারা। একটা পর্যায়ে গিয়ে মিলনের পরিবারের সাথে ২৫ লাখের বিনিময়ে সম্মত হয়।
সাধারণত কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররাই সেজানের অপহরণকারী চক্রের মূল টার্গেটে থাকতো। এসকল উঠতি বয়সী ছেলেদের ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ডেকে নিয়ে প্রথমে বলাৎকার ও অপহরণ করে মুক্তি পণের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিতো তারা। প্রথমে শুধুমাত্র সমকামী যুবকদের জন্যে ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদ পেতে ডেকে নিয়ে বলাৎকার করে ছিনতাই ও স্বল্প পরিমাণ মুক্তিপণ নিতো সেজান ও মুরাদ। একটা সময় তারা এ ফাঁদের চক্রে নারীদের মাধ্যমে উঠতি বয়সি যুবকদের আকৃষ্ট করতে থাকে। এভাবেই আস্তে আস্তে এই অপরাধ জগতে থিতু হয় সেজানরা। শুরুর দিকে প্রতিটি অপহরণের ঘটনায় এক-দুই হাজার উপার্জন হলেও, আস্তে আস্তে তারা লাখ টাকার লেনদেনে অভ্যস্ত হতে থাকে।
এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, মিলনকে অপহরণের ঘটনায় পাওয়া মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকাই সেজানের অপরাধ জীবনের সবচাইতে বড় দাগ ছিলো। এর আগে ছোটো বড় প্রায় ১০/১২টি অপহরণ ধর্ষণের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী এই সেজান। এসকল ঘটনায় সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা মুক্তিপণ হাতিয়েছে সেজান।
ঠাকুরগাঁও ডিবি পুলিশ জানায়, মিলনকে হত্যার ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকার অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েেছেন ঘটনার প্রধান আসামি ঠাকুরগাঁও মহেশপুর বিটবাজার এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে সেজান আলী (২৩) ও আরাজি পাইক পাড়া এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে মুরাদ (২৫)। সেইসাথে ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে সহায়তা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন সালন্দর ইউনিয়নের শাহীনগর তেলিপাড়া এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে ও আসামি মুরাদের ভাগ্নি রত্না আক্তার রিভা (১৯)। অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় সহায়তা করার অপরাধে গ্রেপ্তার হন আকচা এলাকার ইলিয়াসের ছেলে মনিরুল (১৭)। আলামত গুম করতে জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার হয়েছেন সেজান আলীর মা শিউলি বেগম।
এই বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, “মমিলন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা এখন পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। সেই সাথে ৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের বাকি টাকা উদ্ধার কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে।”
ঢাকা/হিমেল/টিপু