১. ওই তারকার খুঁটিনাটি কোনো কিছুই আপনার নজর এড়ায় না

যাঁরা সিওডিতে ভুগছেন, তাঁরা প্রতিনিয়ত ওই তারকার সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য জানতে উদ্গ্রীব থাকেন। তাঁর জীবনযাপন, সম্পর্ক, অভ্যাস, ফ্যাশনসহ সবকিছুই অনুসরণ করেন।

২. তারকার সঙ্গে শক্তিশালী আবেগীয় সম্পর্ক

আর এই সম্পর্ক অবশ্যই একপক্ষীয়। তারকার সাফল্যে ব্যক্তি খুশি হন। তারকার ব্যর্থতাকে ব্যক্তি নিজের ব্যর্থতা মনে করেন। তারকাকে তিনি নিজের হৃদয়ের অত্যন্ত কাছের মনে করেন। তারকার জন্য প্রার্থনা করেন। সবার আগে তারকার পোস্টে লাইক, কমেন্ট করার জন্য মুখিয়ে থাকেন।

৩.

তারকাকে কেন্দ্র করে উদ্ভট কর্মকাণ্ড

এই তালিকার শেষ নেই। কেউ কেউ তারকাকে নিয়ে বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। কেউ তারকার বাসার সামনেই কাটিয়ে দেন দিন-রাত। তারকার ছবি দিয়ে ঘর ভরে ফেলা, টি-শার্ট বানিয়ে পরা, এসব তো আছেই। অনেক সময় তাঁরা এতটাই বুঁদ হয়ে নির্দিষ্ট তারকাকে অনুসরণ করেন যে তারকাদের মতো করে কথাও বলেন। তাঁদের সিনেমার সংলাপ আওড়ান। জীবনের বাস্তবতা থেকে দূরে সরে যান। সেলিব্রিটির নাম বা চেহারার ট্যাটু করেন। ওই তারকার মনোযোগ পেতে উদ্ভট কর্মকাণ্ড করেন। তারকার পোস্টে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের বার্তা পাঠান। টাকা জমিয়ে তারকার পছন্দের পোশাক বা হাতব্যাগ কেনেন। তারকা হোটেলের যে রুমে ছিলেন, সেই রুমে থাকেন। অনেকে তাঁদের পছন্দের তারকা যেখানে বেড়াতে যান, সেখানে বেড়াতে যান।

৪. তারকাদের পেছনে অনেক সময় আর শক্তি ব্যয় করা

সিওডিতে ভোগা মানুষের দিনের বেশির ভাগ কর্মকাণ্ডই থাকে তারকাদের কেন্দ্র করে। একই সিনেমা, খেলা, শো বা সাক্ষাৎকার তাঁরা বারবার দেখেন। ফলে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন, সম্পর্ক ও লক্ষ্য অর্জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কেন মানুষ তারকাদের জন্য ‘অবসেসড’ হয়ে যায়

১. ব্যক্তিগত ক্লিশে জীবন থেকে মুক্তি

সাধারণ মানুষ তারকাদের ব্যক্তিগত জীবনের গ্ল্যামার, জাঁকজমকপূর্ণ এবং আপাতদৃষ্টে সুখী জীবনযাপন দেখে নিজের জীবনের ক্লান্তি বা জরাজীর্ণতা থেকে মনোযোগ সরাতে চায়, বিরতি নিতে চায়।

২. নিজেকে খুঁজে পাওয়া

অনেকে নিজে জীবনে যেমনটা হতে চায়, তারকার ভেতর সেটা খুঁজে পায়। তাই সেই তারকাকে নিয়ে বিমোহিত থাকে।

৩. অনুপ্রেরণা

অনেক সময় তারকারা নিজেদের জীবনের সংগ্রামের কথা বলেন। কীভাবে সেসব কাটিয়ে উঠে সফলতার দেখা পেয়েছেন, সেই গল্প বলেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেকেই যাঁরা একই অবস্থার ভেতর দিয়ে গেছেন, তাঁরাও সেসব পার করে সফলতার দেখা পেতে চান। তাই যে তারকা তাঁদের অনুপ্রাণিত করেন, তাঁদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের একধরনের আবেগীয় সম্পর্ক তৈরি হয়।

আরও পড়ুনসে আপনাকে সত্যিই ভালোবাসে, এই ১৫ লক্ষণ মিলিয়ে নিন২১ নভেম্বর ২০২৪সেলিব্রিটি অবসেশন ডিজঅর্ডার থেকে বেরিয়ে আসবেন কীভাবে

১. সীমানা তুলুন

তারকাদের কাছ থেকে কতটুকু নেবেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা রাখুন। ‘স্টক করা’ বা অনুসরণ করার সময় বেঁধে নিন। যেমন দিনে দুই ঘণ্টার বেশি আপনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করবেন না।

২. ব্যক্তিগত লক্ষ্য অর্জনে মনোযোগী হোন

মনে রাখবেন, তারকারা তাঁদের ব্যক্তিগত লক্ষ্য অর্জনে মনোযোগী হয়েছেন বলেই তাঁরা নিজেদের কর্মক্ষেত্র বা সম্পর্কে সফল হয়েছেন। আপনিও নিজের ব্যক্তিগত ও পেশাগত লক্ষ্য অর্জনে মনোযোগী হোন।

৩. যা দেখেন, শোনেন—সব সত্যি নয়

তারকারাও সাধারণ মানুষদের মতো রক্ত-মাংসের মানুষ। তাঁরা নিজেদের ‘ভাবমূর্তি’ তৈরির জন্য অনেক কিছুই বলেন, করেন। সেসবের বেশির ভাগই হতে পারে লোকদেখানো। তাঁদের ‘পাবলিক ইমেজ’ তৈরি আর রক্ষার জন্য একটা দল কাজ করে, অনেক সময় একাধিক প্রতিষ্ঠানও যুক্ত থাকে। তাই তারকাকে আপনি যেভাবে জানেন, আদতে তিনি একদম অন্য রকম মানুষও হতে পারেন। আপনার এই ‘অবসেশন’কে ব্যবহার করে ওই তারকা কেবল অর্থ উপার্জন করছেন। আর তাঁদের অন্ধ অনুসরণ আর অনুকরণের মাধ্যমে আপনি হয়তো কেবলই নিজেরই ক্ষতি করছেন!

সূত্র: সাইকোলগস ডটকম

আরও পড়ুনআপনিও কি ‘মাঙ্কি মাইন্ড’–এর অধিকারী? মিলিয়ে নিন বৈশিষ্ট্যগুলো ০৭ নভেম্বর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য জ বন র মন য গ

এছাড়াও পড়ুন:

সম্মেলনে ৩১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে: বিডা চেয়ারম্যান

ঢাকায় চার দিনের সম্মেলনে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, খরচের হিসাব দিয়ে সামিটকে মূল্যায়ন করা যাবে না। বিনিয়োগের সব ক্রেডিট এই সামিটের নয়, এটা আগে থেকে চলতে থাকা আলোচনার ভিত্তিতে হয়েছে। সামিটে এসেই বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে দেবেন, বিষয়টি এমন নয়। তাই এটাকে সামিটের সফলতা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ৪ দিনের ওই সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনের বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, বিডার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

বিডা চেয়ারম্যান বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ এসেছে। সরকারি খরচ হয়েছে দেড় কোটি টাকা। তবে খরচের হিসাব দিয়ে সামিটকে মূল্যায়ন করা যাবে না। বিনিয়োগের সব ক্রেডিট এই সামিটের নয়, এটা আগে থেকে চলতে থাকা আলোচনার ভিত্তিতে হয়েছে। চারদিনের সামিটে এসে কেউ ১০০ কোটি টাকার চেক লিখে ফেলবে, বিষয়টি এমন নয়। তাই এটাকে সামিটের সফলতা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। সামিটের খরচ দিয়ে বিনিয়োগের পরিমাণ বিচার করলে হবে না।

তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ফ্যাক্টরি ভিজিট করিয়েছি। ফ্যাক্টরি করতে হলে কোথায় যেতে হবে, তাদের দেখানো হয়েছে। সম্মেলনে এসে বিনিয়োগকারীরা খুব খুশি হয়েছেন, তাদের মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য খাবারের ম্যানু থেকে আমরা যেন আগেই বাদ না পড়ে যাই। আমরা একইসাথে সংস্কারের কাজ করব, আর বিনিয়োগের পাইপলাইন বিল্ডিং-এর কাজ করে রাখব।

বিডার চেয়ারম্যান আরো বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ১০-এ ১০ পাওয়ার মতো সামিট হয়নি। যত সফলতা আছে তা সবার। ব্যর্থতা বিডা ও বেজার। প্রতিবছর এ ধরনের সামিট হতে পারে। এ ধরনের সিমিলার ইভেন্ট পরবর্তীতে বা পরবর্তী সরকার করবে বলে প্রত্যাশা করি।

তিনি আরো জানান, বিনিয়োগের পাইপলাইন ঠিক রাখতে বিনিয়োগ সম্মেলনে আসা সবাইকে থ্যাংক ইউ মেইল পাঠানো হবে। তাদের সাথে যোগাযোগ রাখা হবে।

বিডার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, উদ্বোধনী সামিটে ৭৫০ জন অংশ নেয়। এর মধ্যে ৪১৫ জন বিদেশি ছিল। পুরো সম্মেলনে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেয়। স্পিকার ও প্যানেলিস্ট ছিল ১৩০ জন।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সম্মেলনে ৩১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে: বিডা চেয়ারম্যান