সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ দেশটি অবৈধ অভিবাসী উচ্ছেদে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করছে। চলমান এ অভিযানে গ্রেফতার হচ্ছেন অসংখ্য অভিবাসী। এ বিষয়ে বেরিতা হারিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অভিযানে ২৩৫ জন অভিবাসীকে গ্রেফতার করে অভিবাসন বিভাগ। এ সংখ্যার মধ্যে রয়েছেন ১১৩ জন বাংলাদেশি।

রাজ্যের অভিবাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শুক্র থেকে রোববার পর্যন্ত রাজ্যের পাঁচটি জেলায় রিফ্লেক্সোলজি সেন্টার এবং কোংসি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মোট ২৩৫ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়।

মালয়েশিয়া, অভিবাসী, গ্রেফতার, বাংলাদেশমালয়েশিয়ায় সাঁড়াশি অভিযান, বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার ২৩৫ অভিবাসী

জোহর ইমিগ্রেশন ডিরেক্টর, দাতুক মোহাম্মদ রুশদি মোহাম্মদ দারুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, গত ডিসেম্বরে স্বেচ্ছাসেবী পুনর্বিন্যাস কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর, তার বিভাগ আর নিয়োগকর্তা, প্রাঙ্গণের মালিক এবং অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ এবং সুরক্ষা প্রদানকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে আপস করবে না।

তিনি বলেন, প্রথম অভিযানে, গত শুক্রবার মধ্যরাতে পাঁচটি জেলায় একযোগে অভিযান চালিয়ে ১৩০ জন বিদেশি এবং দুটি রিফ্লেক্সোলজি সেন্টারের নিয়োগকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়।

তার মতে, জোহর বাহরুতে মোট ৯০ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যেখানে নয়জন অবৈধ অভিবাসী এবং দুজন নিয়োগকর্তা (বাতু পাহাত), ১২ জন অবৈধ অভিবাসী (মেরসিং এবং মুয়ার) এবং সেগামাতে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রথম অভিযানে ১৮টি কারখানা প্রাঙ্গণ এবং ভাগ করা আবাসন বসতির পাশাপাশি বাতু পাহাত, মার্সিং, মুয়ার এবং সেগামাতে ১৭টি রিফ্লেক্সোলজি কেন্দ্রে অভিযান চালানো হয়।

বাতু পাহাতে অভিযানে ৩২ এবং ৫৩ বছর বয়সী দুই স্থানীয় পুরুষ নিয়োগকর্তা, যারা একটি রিফ্লেক্সোলজি সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক এবং মালিক, তাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে, যখন পাঁচটি জেলায় গ্রেফতার হওয়া ১৩০ জন অবৈধ অভিবাসীর বয়স ২১ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে।

মালয়েশিয়া, অভিবাসী, গ্রেফতার, বাংলাদেশমালয়েশিয়ায় সাঁড়াশি অভিযান, বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার ২৩৫ অভিবাসী

গ্রেফতার অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা হলো চারজন চীনা নারী, পাঁচজন থাই নারী, ১৭ জন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষ এবং ১৭ জন নারী, ছয়জন ভিয়েতনামী নারী, ২৩ জন মিয়ানমার পুরুষ এবং পাঁচজন নারী, দুইজন ভারতীয় পুরুষ, ৩৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ এবং ১৫ জন পাকিস্তানি পুরুষ রয়েছেন।

পরিচালক মোহাম্মদ রুসদি বলেন, সর্বশেষ রোববার রাত ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত অপারেশন চলাকালীন বাতু পাহাতের একটি শ্রমিক আবাসন কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়ে ১০৫ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, বৈধ পাস বা পারমিট ছাড়াই শেয়ার্ড হাউস বন্দোবস্তে বিদেশিরা বসবাস করছে বলে জনসাধারণের অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়।

এই অভিযানে, ১৮ থেকে ৫৪ বছর বয়সী মোট ৩২৯ জন অভিবাসীর কাগজপত্র পরীক্ষারপর এদের মধ্য থেকে ১০৫ জন অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়। এ সংখ্যার মধ্যে রয়েছেন ৭৭ জন বাংলাদেশি।

তিনি বলেন, অভিযানে গ্রেফতার ২৩৫ জন অবৈধ অভিবাসীর সবাই ১৯৫৯/৬৩ সালের ইমিগ্রেশন আইন এবং ১৯৬৩ সালের ইমিগ্রেশন রেগুলেশনের অধীনে অপরাধী। পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে গ্রেফতারদের পেকান নেনাস ইমিগ্রেশন ডিপোতে রাখা হয়েছে।

এনজে

.

উৎস: SunBD 24

এছাড়াও পড়ুন:

তপ্ত দুপুরে হাওরের পথে

মাঝ আকাশে সূর্য। প্রখর তীব্রতা নিয়ে যেন ঝরছে রোদ। চামড়াপোড়া এমন থমথমে গরমেও মাঝেমধ্যে শীতল বাতাস শরীর ধুয়ে দিচ্ছে! সুদূরে ডাকছে পাখি। পানি কমে চিকন হয়ে আসা খালে চুপটি মেরে শিকারের আশায় দাঁড়িয়ে আছে একঝাঁক সাদা বক। রাস্তার ধারে ফুটে আছে পিউম ফুল। ডানে-বাঁয়ে দিগন্তবিস্তৃত সবুজ ধানখেত। খেতে দাঁড়িয়ে থাকা হিজল-করচে গজিয়েছে কচি পাতা।

সম্প্রতি হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হাওর ঘুরে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে। বর্ষায় হাওরের যে রূপ, শুকনা মৌসুমে তা একেবারেই বিপরীত। যে হাওর বর্ষায় অনেকটা সমুদ্রের মতো, শুকনা মৌসুমে সেখানেই মাটি ফেটে চৌচির। কিছু খাল-নদীতে পানি থাকলেও তা যৎসামান্য। আবার কোনো কোনো জলাশয় তো শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে! কোথাও একাকী, আবার কোথাও দলবেঁধে দাঁড়িয়ে আছে হিজল-করচগাছ।

সদ্য শেষ হওয়া চৈত্র মাসের এক দুপুরে হাওরের আঁকাবাঁকা পাকা-কাঁচা রাস্তা ধরে এই প্রতিবেদক যান। বানিয়াচং উপজেলা সদর থেকে রওনা হয়ে লক্ষ্মীবাঁওড় জলাবন (খরতির জঙ্গল) পেরিয়ে জেলার আজমিরীগঞ্জের পাহাড়পুর বাজার পর্যন্ত যাওয়ার পথে দেখা মেলে শতাধিক গ্রাম, গোটা দশেক হাওর-নদী-বিল-খালের। পথে পথে সৌন্দর্য। মাঠ, হাওরের উন্মুক্ত প্রান্তর যেন এখন সবুজ ঘাসের গালিচা। সেখানে চরে বেড়াচ্ছে গরু-ছাগল। বক, শামুকখোল পাখিরা জলাশয়ে একসঙ্গে খুঁজছে খাবার।

বানিয়াচং উপজেলা সদর পেরিয়ে হাওরের মূল ভূখণ্ড ঢুকতেই স্বাগত জানায় পাকা একটি সড়ক। সড়ক ধরে কেউ-বা হেঁটে যাচ্ছেন, কেউ-বা যাচ্ছেন ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে চেপে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, বর্ষায় এই সড়ক পানির নিচে ডুবে থাকে আর হেমন্তে ভেসে ওঠে। সড়কের বিভিন্ন অংশ ভাঙাচোরা, কোথাও আবার পিচহীন। গবাদিপশুর জন্য ঘাস কেটে কেউ-বা সড়ক ধরে বাড়ি ফিরছেন, কেউ-বা সড়ক-লাগোয়া খাল-নালায় ব্যস্ত মাছ শিকারে। মাথার ওপরে চক্কর খাচ্ছে চিল, সারস, কাক, ফেসকুন্দাসহ নানা জাতের পাখি।

বানিয়াচং উপজেলার খরতির জঙ্গলে হিজল-করচবাগ

সম্পর্কিত নিবন্ধ