যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি তথ্য ফাঁসকারীদের সুরক্ষা প্রদানকারী একটি স্বাধীন মার্কিন সংস্থার প্রধানকে বরখাস্ত করতে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এর মধ্য দিয়ে গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রথম কোনো আইনি লড়াইয়ের সূচনা হলো।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্পেশাল কাউন্সেল’ কার্যালয়ের প্রধান হ্যাম্পটন ডেলিঙ্গারকে বরখাস্ত করেন ট্রাম্প। তবে ১২ ফেব্রুয়ারি এক ফেডারেল বিচারপতি ট্রাম্পের সে সিদ্ধান্তের ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দেন। বিচার বিভাগ আদালতকে অবিলম্বে ফেডারেল বিচারপতির ওই আদেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন। মামলাটি এখনও আদালতে নথিভুক্ত হয়নি।

ফেডারেল সরকারকে নতুন করে সাজাতে কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত স্বাধীন সংস্থার প্রধানদের অপসারণসহ বেশ কিছু আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিচ্ছেন ট্রাম্প। তাঁর এই পদক্ষেপগুলোকে সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে দেখবেন, তার ধারণা পাওয়া যাবে এই মামলার মধ্য দিয়ে।
সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীলদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। ৯ সদস্যের ৬ জনই রক্ষণশীল। এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তাঁর হাতে নিয়োগ পাওয়া তিন সদস্যও আছেন।

ভারপ্রাপ্ত সলিসিটর জেনারেল সারা হ্যারিস আদালতে জমা দেওয়া কাগজপত্রে লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট কতক্ষণ তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে একজন সংস্থার প্রধানকে নিযুক্ত রাখবেন, না রাখবেন, সে ব্যাপারে নির্দেশ জারি করে নির্বাহী ক্ষমতা দখল করার সুযোগ নিম্ন আদালতগুলোকে দেওয়াটা আদালতের (সুপ্রিম কোর্ট) উচিত হবে না।’
সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাতে নিয়োগ পাওয়া ডেলিঙ্গারের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৯ সালে। ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি একটি ই-মেইলের মাধ্যমে জানতে পারেন, পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে ট্রাম্প তাঁকে বরখাস্ত করেছেন। এর পর তিনি একটি মামলা করেন।

ডেলিঙ্গারের মামলায় বলা হয়েছে, ট্রাম্প এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে তাঁকে বরখাস্ত করেছেন। ডেলিঙ্গারের যুক্তি হলো, ফেডারেল আইন শুধু ‘অদক্ষতা, কর্তব্যে অবহেলা, অথবা অফিসে অসদাচরণের’ জন্য কাউকে অপসারণের অনুমতি দেয়। সিভিল সার্ভিসকে রক্ষা করার ও অসদাচরণের অভিযোগ তদন্ত করার ক্ষমতা এখন আগের চেয়ে আরও বেশি প্রয়োজন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে নজিরবিহীন সংখ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের বরখাস্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রায় চার সপ্তাহ হতে চলল, এ সময়ের মধ্যেই ট্রাম্প ঐতিহাসিক ওয়েস্ট উইংয়ের এ অফিসের জাঁকজমককে কাজে লাগিয়ে একের পর এক মিডিয়া সমাবেশ করেছেন, যেখান থেকে তাঁর বক্তব্য রেকর্ড হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে নিউজ চ্যানেলগুলোতে। নিজের ক্ষমতা ও প্রভাব আরও বেশি দৃশ্যমান করতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করছেন তিনি। প্রেসিডেন্টের ওভাল অফিস ব্যবহারের চেয়ে বেশি কর্তৃত্বপরায়ণ আর কিছু হতে পারে না,  রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট বিষয়ক ইতিহাসবিদ থমাস অ্যালান শোয়ার্জ।


 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইয়ামালকে নিয়ে মেসি: সে এখনই বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন

বার্সেলোনার কিংবদন্তি ও বর্তমান ইন্টার মায়ামি তারকা লিওনেল মেসি সম্প্রতি প্রশংসায় ভাসিয়েছেন উঠতি তরুণ উইঙ্গার লামিনে ইয়ামালকে। যাকে তিনি সরাসরি বলেছেন ‘বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন।’

মাত্র ১৮ বছর বয়সী ইয়ামাল বার্সেলোনার বিখ্যাত ‘লা মাসিয়া’ একাডেমির খেলোয়াড়। যেখান থেকে উঠে এসেছিলেন মেসিও। ক্লাবের জার্সি গায়ে অভিষেকের পর থেকেই নজর কাড়ছেন ইয়ামাল। বিশেষ করে হান্সি ফ্লিকের বার্সেলোনার আক্রমণভাগের অন্যতম প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠেছেন তিনি। রাফিনহার সঙ্গে উইংয়ে তার আগ্রাসন ও ফুটবল বুদ্ধিমত্তা রীতিমতো প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্ক।

সম্প্রতি একটি শো’তে ইয়ামালের বিষয়ে মেসি বলেন, ‘‘ইয়ামাল যা দেখাচ্ছে, তা অসাধারণ। সে ইউরোতে স্পেনের হয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তার বয়স মাত্র ১৭! এখনো সে বেড়ে ওঠার পর্যায়ে আছে। ঠিক যেভাবে আমিও ধীরে ধীরে নিজেকে গড়ে তুলেছিলাম। ওর মধ্যে অবিশ্বাস্য গুণ আছে। আমি নিশ্চিত, সে এখনই বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন।’’

আরো পড়ুন:

মেসির দাবি প্রতিনিয়ত মান বাড়ছে মেজর লিগের

নেইমারের সান্তোসে ফেরার পথে মেসির পুরনো কোচ

শুধু মেসি নন, তার দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও প্রশংসা করেছেন ইয়ামালের। সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সতীর্থ রিও ফার্ডিন্যান্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোনালদো বলেছিলেন, ‘‘লামিনে ইয়ামালের মধ্যে অনেক প্রতিভা দেখি আমি। আশা করি ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা হবে না। ওর একটু ভাগ্যেরও দরকার। কারণ, বয়স এখনো খুবই কম। তবে আমি নিশ্চিত, এই প্রজন্মের সেরাদের একজন হবে সে।’’

মাত্র ১৬ বছর বয়সে লা লিগার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার রেকর্ড গড়েন ইয়ামাল। এরপর ইউরোতে খেলতে নেমে হয়ে যান ইউরোর ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়। শুধু তাই নয়, ২০২৪ ইউরোতে স্পেনকে শিরোপা জেতাতে সাহায্য করে টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতে নেন তিনি।

ইয়ামাল ও তার দল বার্সেলোনা লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে। এছাড়া চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে উঠেছে। যেখানে তারা ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হবার অপেক্ষায় রয়েছে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ