সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চান ট্রাম্প
Published: 18th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি তথ্য ফাঁসকারীদের সুরক্ষা প্রদানকারী একটি স্বাধীন মার্কিন সংস্থার প্রধানকে বরখাস্ত করতে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এর মধ্য দিয়ে গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রথম কোনো আইনি লড়াইয়ের সূচনা হলো।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্পেশাল কাউন্সেল’ কার্যালয়ের প্রধান হ্যাম্পটন ডেলিঙ্গারকে বরখাস্ত করেন ট্রাম্প। তবে ১২ ফেব্রুয়ারি এক ফেডারেল বিচারপতি ট্রাম্পের সে সিদ্ধান্তের ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দেন। বিচার বিভাগ আদালতকে অবিলম্বে ফেডারেল বিচারপতির ওই আদেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন। মামলাটি এখনও আদালতে নথিভুক্ত হয়নি।
ফেডারেল সরকারকে নতুন করে সাজাতে কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত স্বাধীন সংস্থার প্রধানদের অপসারণসহ বেশ কিছু আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিচ্ছেন ট্রাম্প। তাঁর এই পদক্ষেপগুলোকে সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে দেখবেন, তার ধারণা পাওয়া যাবে এই মামলার মধ্য দিয়ে।
সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীলদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। ৯ সদস্যের ৬ জনই রক্ষণশীল। এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তাঁর হাতে নিয়োগ পাওয়া তিন সদস্যও আছেন।
ভারপ্রাপ্ত সলিসিটর জেনারেল সারা হ্যারিস আদালতে জমা দেওয়া কাগজপত্রে লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট কতক্ষণ তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে একজন সংস্থার প্রধানকে নিযুক্ত রাখবেন, না রাখবেন, সে ব্যাপারে নির্দেশ জারি করে নির্বাহী ক্ষমতা দখল করার সুযোগ নিম্ন আদালতগুলোকে দেওয়াটা আদালতের (সুপ্রিম কোর্ট) উচিত হবে না।’
সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাতে নিয়োগ পাওয়া ডেলিঙ্গারের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৯ সালে। ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি একটি ই-মেইলের মাধ্যমে জানতে পারেন, পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে ট্রাম্প তাঁকে বরখাস্ত করেছেন। এর পর তিনি একটি মামলা করেন।
ডেলিঙ্গারের মামলায় বলা হয়েছে, ট্রাম্প এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে তাঁকে বরখাস্ত করেছেন। ডেলিঙ্গারের যুক্তি হলো, ফেডারেল আইন শুধু ‘অদক্ষতা, কর্তব্যে অবহেলা, অথবা অফিসে অসদাচরণের’ জন্য কাউকে অপসারণের অনুমতি দেয়। সিভিল সার্ভিসকে রক্ষা করার ও অসদাচরণের অভিযোগ তদন্ত করার ক্ষমতা এখন আগের চেয়ে আরও বেশি প্রয়োজন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে নজিরবিহীন সংখ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের বরখাস্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রায় চার সপ্তাহ হতে চলল, এ সময়ের মধ্যেই ট্রাম্প ঐতিহাসিক ওয়েস্ট উইংয়ের এ অফিসের জাঁকজমককে কাজে লাগিয়ে একের পর এক মিডিয়া সমাবেশ করেছেন, যেখান থেকে তাঁর বক্তব্য রেকর্ড হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে নিউজ চ্যানেলগুলোতে। নিজের ক্ষমতা ও প্রভাব আরও বেশি দৃশ্যমান করতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করছেন তিনি। প্রেসিডেন্টের ওভাল অফিস ব্যবহারের চেয়ে বেশি কর্তৃত্বপরায়ণ আর কিছু হতে পারে না, রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট বিষয়ক ইতিহাসবিদ থমাস অ্যালান শোয়ার্জ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হইচই ফেলে দেওয়া সিরিজটি কেন সব মা-বাবার অবশ্যই দেখা উচিত
সন্তানের শূন্য বিছানা, ঘর খালি। ডুকরে কেঁদে ওঠেন বাবা; তাঁর হাহাকার চলতেই থাকে। শেষের এ দৃশ্যটি দেখার আগেই সিরিজটির সঙ্গে জুড়ে গেছেন আপনি, পর্দায় বাবার কান্না তাই আপনাকেও ছুঁয়ে যেতে বাধ্য। শেষ করার পরও অনেক দিন ধরেই সিরিজটির কথা মনে পড়বে, চরিত্রগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন সংলাপও আপনাকে তাড়া করে ফিরবে; কে জানে হয়তো জাগিয়ে তুলবে অপরাধবোধও। সিনেমা-সিরিজের খোঁজখবর যাঁরা রাখেন, এতক্ষণে হয়তো বুঝে গেছেন হচ্ছিল ‘অ্যাডোলেসেন্স’-এর কথা। ১৩ মার্চ নেটফ্লিক্সের মুক্তির পর কার্যত সারা দুনিয়ায় ঝড় তুলেছে চার পর্বের মিনি সিরিজটি। স্ট্রিমিংয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে, অন্তর্জালে ঢুঁ মারলেই চোখে পড়ছে ‘অ্যাডোলেসেন্স’ নিয়ে এন্তার লেখা। কিন্তু এত কিছু না হলেও সিরিজটির গুরুত্ব এতটুকু কমত না। নির্মাতারা বিষয় হিসেবে এমন কিছুকে বেছে নিয়েছেন, যার সঙ্গে সারা দুনিয়ার মানুষ আরও নির্দিষ্ট করে বললে মা-বাবারা নিজেদের মেলাতে পারেন। কিন্তু কী এমন আছে এই সিরিজে? কেন সমালোচকেরা একবাক্যে মেনে নিচ্ছেন, ‘অ্যাডোলেসেন্স’ সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সেরা সিরিজ?
একনজরেসিরিজ: ‘অ্যাডোলেসেন্স’
ধরন: ড্রামা
পর্বসংখ্যা: ৪
রান টাইম: ৫১-৬৫ মিনিট
স্ট্রিমিং: নেটফ্লিক্স
ক্রিয়েটর: জ্যাক থোর্ন ও স্টিফেন গ্রাহাম
অভিনয়ে: স্টিফেন গ্রাহাম, ওয়েন কুপার, অ্যাশলি ওয়ালটারস
১৩ বছরের কিশোর জেমি মিলার তারই এক সহপাঠীকে খুনের দায়ে গ্রেপ্তার হয়। বিশাল এক বাহিনী নিয়ে বাড়িতে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযোগ যে ভয়াবহ, জেমি ছুরি দিয়ে নৃশংসভাবে সহপাঠী কেটিকে খুন করেছে! জেমি তো বটেই, ওর মা-বাবা, বড় বোন সবাই হতবাক। থানায় নেওয়ার পর জেমি অভিযোগ অস্বীকার করে। তাঁকে সহায়তার জন্য আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়, আসেন মনোবিদ। জেমি কি সত্যিই খুন করেছে—এমন প্রশ্ন নিয়ে এগিয়ে যায় গল্প।
গল্প শুনে আবার ভাববেন না এটি থ্রিলার, জেমি খুন করেছে কি না, সেটা এই সিরিজে আদৌ গুরুত্বপূর্ণ নয়। আসলে সে কী করেছে, শুরুর কিছুক্ষণ পর সেটা আপনিও বুঝে যাবেন। আবার কিশোর গ্যাং নিয়ে পুলিশি তদন্ত সিরিজও এটা নয়। এই গল্পের পরতে পরতে রোমাঞ্চ নেই, নেই ধাক্কা দেওয়ার মতো চমকও।
‘অ্যাডোলেসেন্স’-এর দৃশ্য। আইএমডিবি