চোখের অ্যালার্জি– এই কথাটির সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। দেশে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না যে তার অ্যালার্জি আছে। এটি একরকম জাতীয় রোগও বলা যেতে পারে।
অ্যালার্জি কী?
অ্যালার্জি হলো শরীর অগ্রহণীয় বস্তুর সংস্পর্শে এলে আমাদের দেহে যে বিক্রিয়া হয়, তার নাম অ্যালার্জি। চোখ অগ্রহণীয় বস্তুর সংস্পর্শে এলে তখনই শুরু হয় চোখের অ্যালার্জি। যে বস্তু শরীরে অ্যালার্জি করে তাকে বলা হয় অ্যালারজেন। অ্যালারজেন শরীরে এসে পড়লে শরীরের মধ্যের মাস্ট কোর্স থেকে হিস্টামিন পদার্থ এলাকায় এসে যে সমস্যা সৃষ্টি করে। আর সেটাই অ্যালার্জি। চোখের অ্যালার্জি বারো মাসেই কমবেশি হতে পারে। তবে কিছু কিছু মাস, যেমন– শীতকাল, বসন্তকাল, গ্রীষ্ম, বর্ষা এ সময় চোখের অ্যালার্জি বেশি দেখা দেয়। শীতকালে ঠান্ডা নিবারণের জন্য আমরা অতিরিক্ত পোশাক কিংবা লেপ কম্বলের ব্যবহার করি। বসন্তকালে প্রচুর ফুল ফোটে, শীত ও বসন্তকালে মৌসুমি ফল গাছে ফুল আসে, পরাগায়ন হয়। গরমকালে, বর্ষাকালে বাতাস শুকনা বা আর্দ্র থাকে। বর্ষাকালের কাদাপানির কারণে চোখের অ্যালার্জি হতে পারে। হঠাৎ করে বা মাঝেমধ্যে বা অনেক দিন ধরে চোখ লাল হয়ে খুব চুলকায়, খচখচ করে, চোখ থেকে আঠা আঠা পানি বা সুতার মতন পিচুটি আসে। চোখ চুলকাতে শুরু করলে মনে হয় আমি আরও চুলকাই। চোখের পাপড়ির ঝিল্লি পর্দা (নেত্র পর্দা) ফুলে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে চোখে দৃষ্টিরও সমস্যা হয়। অনেক সময় নেত্র স্বচ্ছের পাশে মোটা মোটা দানা দেখা যায়। চোখের অ্যালার্জিকে আমরা ডাক্তারের ভাষায় অ্যালার্জিক কনজানটিভাইটিস বলি। প্রথমেই কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সমস্যার সমাধান হবে সাধারণত ধুলোবালি, ময়লা, পুকুর, নদী, বাঁওড়ের পানিতে গোসল থেকে বিরত থাকতে হবে। পোশাক পরিচ্ছদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করতে হবে। ব্যবহার্য কাপড়চোপড় রোদে দিলে কাপড়ের মধ্যে ‘মাইট’ জাতীয় পরজীবী বাস করে, সেগুলো মারা যায়। অনেকেই খাবারকে অ্যালার্জির প্রধান কারণ বলে মনে করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যের প্রতি অনীহা বা সমস্যা থাকলে সেটি বর্জন করা যেতে পারে। রক্ত পরীক্ষায় অ্যালার্জি কোষ, আইজিই পরীক্ষা করলে রোগের কারণ খুঁজে যেতে পারে। পরিশেষে নিজের সাবধানতা অ্যালার্জি থেকে মুক্ত করতে পারে । v
[চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফেকো সার্জন, যশোর]
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু, স্ত্রী কারাগারে
চট্টগ্রামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত জাফর আলী চৌধুরী (৪৩) ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার উত্তর ইদিলপুর গ্রামের জানে আলম চৌধুরীর ছেলে। তিনি আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের কদমতলী শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ। গ্রেপ্তার আসামি হলেন- রোমানা ইসলাম। তিনি নগরের কোতোয়ালী থানার জেলরোড এলাকার মো. ফয়জুল ইসলামের মেয়ে। স্বামীর সঙ্গে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ৯ নম্বর সড়কের একটি ভবনের ফ্ল্যাটে থাকতেন। স্ত্রীর অভিযোগ, তার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। তবে জাফর আলীর স্বজনদের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথার পেছনে ফোলা জখম, কানে জমাটবাঁধা রক্ত ও হাতে নখের আঁচড় ছিল। এ ঘটনায় গতকাল রোববার নিহতের ছোট ভাই আবুল হাসনাত বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী জাফর আলী চৌধুরীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্ত্রী রোমানা ইসলাম। তার শ্বশুরও তাকে বিভিন্ন সময়ে চাকরিচ্যুত ও নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দেয়। শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে তাকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়েছিল বলেও ছোট ভাইকে জানিয়েছিলেন। জাফরের দুই শ্যালক শরীফুল ইসলাম এবং আরিফুল ইসলাম বিভিন্নসময় তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
এজাহারে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যায় রোমানা ইসলাম তার ননদ রোকেয়াকে ফোন করে জানান, জাফর অসুস্থ এবং তার কান দিয়ে রক্ত পড়ছে। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে বলেন। বড় বোন রোকেয়া ও তার ছেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার নিথর মরদেহ দেখতে পান। এরমধ্যে লাশ রেখে শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যান। বাদী আবুল হাসনাতের অভিযোগ, ‘পারিবারিক কলহের জেরে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট থেকে ৬টা ৫৫ মিনিট সময়ের মধ্যে জাফরকে তার স্ত্রী রোমানা ইসলাম নিজ হাতে কিংবা অন্য কারও সাহায্যে হত্যা করেছেন।’
চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘নিহতের মাথায় ফোলা রয়েছে ও কানে রক্ত জমাট বাঁধা আছে। খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। স্ত্রীর দাবি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু তিনি সেটি পুলিশকে না জানিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাই নিহতের ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, স্ত্রী মুখ খুলছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে কিভাবে মারা গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।