সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলে (ম্যাটস) ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীকে কেন্দ্রীয়ভাবে ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় বসতে হয়। শুধু ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ  শিক্ষার্থী পড়ার সুযোগ পান ম্যাটসে। তবে দুই শিক্ষাবর্ষে জালিয়াতির মাধ্যমে রাজধানীর তিন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন ১৯৩ শিক্ষার্থী। সম্প্রতি বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদের তদন্তে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে এসব শিক্ষার্থীকে ভর্তি করেছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। তদন্ত দল তাদের প্রতিবেদনে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে পারে। এতে বাতিল হতে পারে ১৯৩

শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব।   
তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ট্রমা ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল টেকনোলজিতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ৩৩ ও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৫২  শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও সেখানে ভর্তি হয়েছেন। ট্রমা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ২৪ ও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ২২ শিক্ষার্থী জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হন। এ ছাড়া শ্যামলী মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ৪১ ও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ২২ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই অধ্যয়নরত। এই তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদের সাবেক সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ইমরুল কায়েসের স্ত্রী তানজিনা খান। 
ইমরুল কায়েস প্রভাব খাটিয়ে তাঁর নিজের স্ত্রীর প্রতিষ্ঠানে এসব শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ করে দেন। এই কাজে সহযোগিতা করেন অনুষদের সাবেক সচিব ডা.

জাহিদুর রহমান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেহেনা পারভীন।

এসব শিক্ষার্থীর ভর্তির ক্রমিক নম্বর বাছাই করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তারাও জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছেন। ভর্তি ক্রমিকের সঙ্গে কারও নামের মিল পাওয়া যায়নি। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীর তথ্য ওয়েবসাইটে থাকলেও সংশ্লিষ্ট ১৯৩ শিক্ষার্থীর কোনো তথ্য সেখানে নেই। 
‘দেননি ভর্তি পরীক্ষা, হয়ে যাচ্ছেন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট’ শিরোনামে গত ২ ডিসেম্বর প্রতিবেদন প্রকাশ করে সমকাল। এর পর নড়েচড়ে বসে রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ। বিষয়টি তদন্তে জানুয়ারিতে সংস্থাটির সচিব (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. সাইফুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির তদন্তে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এসব ব্যাপারে অনুষদের সচিব (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. সাইফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, টাকার বিনিময়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়। ম্যাটসে ভর্তি হওয়া গত ১০ বছরের সব শিক্ষার্থীর তথ্য চাওয়া হয় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কাছে। অধিদপ্তর মাত্র তিন বছরের তথ্য দিতে পেরেছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে তিন প্রতিষ্ঠানের ১৯৩ শিক্ষার্থীর ভর্তি জালিয়াতির তথ্য মিলেছে। এদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি এসব শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিলের সুপারিশ করা হবে।
ডা. সাইফুল বলেন, অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর অধ্যক্ষ, অনুষদের সাবেক সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. ইমরুল কায়েস ও স্ত্রী তানজিনা খানকে একাধিকবার ডাকা হয়েছে। তবে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তাদের কেউই তদন্ত কমিটির সামনে আসেননি। শেষবারের মতো আগামী রোববার তাদের আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপস্থিত না হলেও রোববারের পরই তদন্ত প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে।
অনুষদের সাবেক সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. ইমরুল কায়েস সমকালকে বলেন, তদন্তাধীন বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। অভিযোগের বিষয়ে তাঁর স্ত্রী তানজিনা খান মন্তব্য করতে রাজি হননি।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক নাজমুল হোসেন সমকালকে বলেন, পরীক্ষা না দিয়ে কোনোভাবে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলে পড়ার সুযোগ নেই। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এসব শ ক ষ র থ ১৯৩ শ ক ষ র থ ইমর ল ক য় স শ ক ষ বর ষ ২২ শ ক ষ পর ক ষ য় ম য টস সমক ল তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

জীবন বাঁচাতে বাসা থেকে পালিয়ে যাই: পপি

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা সাদিকা পারভীন পপি। একসময় চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করলেও হঠাৎ করে অন্তরালে চলে যান। এর মধ্যে বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন। সম্প্রতি তার মা ও বোনের সঙ্গে বিরোধে জড়ান এই নায়িকা। তার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ করেছেন তারা। এরপরই পপির বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করেন পপি। জানান, বিয়ের নেপথ্যের গল্প।

২০১৯ সালে পপির বাসায় ‘ভয়াবহ দুর্ঘটনা’ ঘটে। সেদিন অনেক বড় অঙ্কের টাকা চুরি হয়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে থানায় জিডি করেন। পরে তাকে রমনা থানায় ডাকা হয়। সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পপি বলেন, “সেদিন আদনানকেও ডাকি। থানায় গিয়ে দেখলাম, আমার ভাইবোনেরা। ঘটনাচক্রে জীবন নিয়ে আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। মনে হলো, আমি কারো কাছে নিরাপদ নই। ফিল্মের কাজে সবার সঙ্গে মিশেছি ঠিকই, কিন্তু আপনজন কেউ ছিল না।”

দুঃসময়ে পপিকে আগলে রাখেন তার স্বামী। এ তথ্য উল্লেখ করে পপি বলেন, “বরাবরই আমি পরিবার অন্তঃপ্রাণ মানুষ। অথচ এই আমার কাছে পরিবারের সবাই অচেনা হয়ে গেল। সম্পত্তি ও টাকাপয়সা নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। জটিলতার এই পুরো সময়ে আদনান আমাকে ছায়ার মতো আগলে রেখেছে। কোনো জটিলতাই আমাকে স্পর্শ করতে দেয়নি। আমার হাতটা শক্ত করে ধরে বলেছিল, ‘আমি আছি, নো টেনশন।”

আরো পড়ুন:

মুক্তির মিছিল থেকে সরে গেল ‘বান্ধব’

নাঈমের কাছে বাপ্পারাজের প্রশ্ন, হেনা কোথায়

২০২০ সালের দিকে আবার জটিলতা শুরু হয়, তারপর বাসা থেকে পালিয়ে যান পপি। এ তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি ভাবলাম, আমাকে মা-বোনেরা বাঁচতে দেবে না। বাসা থেকে বের হয়ে পড়ি। যোগাযোগ করি আদনানের সঙ্গে। এরপর আমার জায়গাজমির দলিল, ব্যাংকের কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্ট পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করি। বলতে পারেন, রীতিমতো জীবন বাঁচাতে বাসা থেকে পালিয়ে গেলাম।”

আদনানকে বিয়ে করার কারণ ব্যাখ্যা করে পপি বলেন, “তখন আমার সামনে দুটি পথ খোলা ছিল— এক. আত্মহত্যা। দুই. নয়তো ওদের হাতে খুন হয়ে যাওয়া। আদনানই তখন আমাকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে। পরিস্থিতির কারণে আমরা বিয়ে করতে বাধ্য হই। ২০২০ সালের নভেম্বরে বিয়ে করি বাসায় কাজি ডেকে। আমার আত্মীয়স্বজন ছিলেন। এটা সত্য, বিয়েতে আমার মাকে ডাকিনি। হয়তো এটা বিশ্বাস করবে না কেউ, কিন্তু এটাই সত্য, আমার মা চাইত না আমি বিয়ে করে সংসারী হই।”

১৯৯৭ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন পপি। কিন্তু তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘কুলি’। এই চলচ্চিত্রে তার বিপরীতে অভিনয় করেন ওমর সানী। সিনেমাটি সেই সময়ে ৭ কোটি টাকা ব্যবসা করে মাইলফলক অর্জন করে। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি পপিকে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘পরিস্থিতির কারণে’ আদনানকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন পপি
  • 'পরিস্থিতির কারণে' আদনানকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন পপি
  • পরিস্থিতির কারণে আদনানকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন পপি
  • জীবন বাঁচাতে বাসা থেকে পালিয়ে যাই: পপি
  • শেয়ার কারসাজি: আমিনুল-হিরু চক্রকে ১০.১৩ কোটি অর্থদণ্ড